“প্রাচীন সভ্যতার গল্প পারস্য" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ আদিম যুগে মানুষ যখন বনে-জঙ্গলে থাকত তখন তাদের শরীর ছিল অন্য অনেক প্রাণীর চেয়ে দুর্বল। বাঘ-সিংহের মতাে প্রাণী তাে মানুষের চেয়ে শক্তিতে বড়াে ছিলই, ছিল হাতির মতাে শরীরের অনেক বড়াে প্রাণী। আবার ছােটো যে সাপ তারও ছিল আত্মরক্ষার জন্য বিষের থলি। খরগােশ, হরিণরা বিপদের মুখােমুখি হলে অনেক জোরে অন্তত ছুটে পালাতে পারতাে। কিন্তু সে তুলনায় মানুষ ছিল নেহাত মামুলি! কিন্তু শরীরে দুর্বল এই মানুষ একটা বিষয়ে কিন্তু দিনে দিনে শক্তিশালী হতে লাগল; সেটা হলাে ‘মগজ’- মানে বুদ্ধি। আর এই বুদ্ধির জোরে মানুষ তা শরীরের শক্তিকেও বাড়িয়ে নিলাে। সে এমন সব জিনিস খুঁজে বের করতে লাগল, এতকিছু তৈরি করতে লাগল আর এত সব নতুন নতুন কৌশল বের করলাে যাতে তার জীবনটা অনেক সহজ হয়ে গেল। সে এমনকি বুদ্ধি আর কৌশলের জোরে তারচেয়ে শক্তিশালী প্রাণীকেও বশ করে কাজে লাগাতে লাগল, তাকে দিয়ে নিজের কাজগুলােও করিয়ে নিতে লাগল। বুদ্ধিতে শক্তিশালী মানুষ জঙ্গল ছেড়ে একসময় নিজেদের জন্য সুবিধাজনক জায়গায় থিতু হতে লাগল। বানাতে শুরু করলাে ঘরবাড়ি, রাস্তা, দোকান, গাড়ি। আবিষ্কার করল লেখার উপায়, চিকিৎসা পদ্ধতি, আকাশের গ্রহ-তারা। উন্নত হলাে শিল্প-সাহিত্যে, তৈরি হলাে আইন-কানুন, রাজত্ব, রাজা-রানি। গুহাবাসী মানুষ। নিজেদের জন্য আধুনিক সব ব্যবস্থা করে নিয়ে একেবারে শহুরে বনে গেল। এই যে অনেক অনেক কাল আগের মানুষ বুদ্ধি আর পরিশ্রমের জোরে এমনি করে শহুরে হয়ে গেল একেই আজকের মানুষ বলছে সভ্যতা (Civilization)।
বহ্নি বেপারীর জন্ম পিরোজপুরে। শিক্ষাকর্মী হিসেবে তিনি শিশুদের উপযোগী শিক্ষা উপকরণ তৈরি করেন। এর মধ্যে পঁচিশটি বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। শিশুসাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য পেয়েছেন মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৭।