“ইঙ্গিত" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ তুমি একমুঠো শব্দ, যেখানে একপুকুর দুঃখ থাকে। মানুষ শব্দের তৈরী। একটি শিশু যখন প্রথমবারের মতাে চিৎকার করে, কাঁদে- ঠিক তখন থেকেই তার জীবন হাঁটতে শুরু করে। সময়ের সাথে তার চারপাশে যােগ হয় আরাে নানান শব্দ। এবং এটা চলতে থাকে সে বুড়াে হয়ে গলায় আধখানা কথা বা ছােট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে একাকী মারা যাবার আগ পর্যন্ত। অথচ মানুষ পৃথিবীতে শুধু শুন্যতা নিয়ে আসে। আর কোনাে পরিচয় থাকে না তার। ধীরে ধীরে তার ওপর। আরােপ হতে থাকে নিত্যনতুন পরিচয়- নাম, লিঙ্গ, পরিবার, সমাজ, ধর্ম, দেশ। আর সে গড়ে উঠতে থাকে একেবারে ভিন্ন এক মানুষ হিসেবে- যা সে নয়, ছিলাে না কখনাে। এবং ভাগ্য খারাপ হলে, আর কখনােই খুঁজে পায় না নিজেকে। হারিয়ে যায় মানুষের ভীড়ে। নিজেকে ভুলে গেলেও ভেতরের শূন্যতাটুকু আমরা কখনােই ভুলতে পারি না। এটাই আমাদের মাঝরাতে জাগিয়ে তােলে কিংবা আয়নার দিকে তাকিয়ে চট করে দেখে নিতে সাহায্য করে যে সবকিছু ঠিকঠাক আছে। এবং এই শূন্যতাই আমাদের জীবনের ভিন্ন ভিন্ন শব্দগুলােকে কাছাকাছি ছাঁচে ফেলে আবারাে একসাথে জড়াে করে। তাই প্রতিটি মানুষের জীবনে আনন্দ-দুঃখ আলাদা। কিন্তু শূন্যতা এক; গল্পগুলাে এক।
জন্ম নব্বইয়ে, জীবনানন্দ দাশ তারিখে। বর্তমানে বেঁচে আছে ঢাকায়। শৈশবে বাবা-মায়ের হাত ধরে জাদুর শহরে এসে আর পালাতে পারেনি। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়াশুনা। একদিন শখের তাগিদে কাগজে দাগাদাগি শুরু করলেও প্রশ্রয়ের শুরুটা মানুষের ভালোবাসায়। সাদাকালো অক্ষরের এই ভয়ঙ্কর খেলায় একদল মানুষের মায়ায় সিক্ত হওয়াটাই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। সেই লোভে দাগাদাগিটা আরো বেশ কিছুদূর টেনে নেয়ার ইচ্ছে। শখ- বুকপকেটে একটা চমৎকার পৃথিবীর স্বপ্ন রেখে হাঁটা। মাঝে মাঝে হোঁচট খেলেও এইসব স্বপ্ন নাকি বেহায়ার মতো, পকেটের কার্নিশ ধরে ঝুলতে থাকে। বই, মুভি, আড্ডা, লেখা- এই নিয়েই অল্পক'দিন বাঁচার ইচ্ছে।