লেভ তলস্তয় খ্যাতিমান রুশ লেখক ছিলেন। তাকে রুশ সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক, এমনকি বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তার রচনার পরিমাণ বিশাল। ছোটগল্প, বড় গল্প, উপন্যাস, নাটক, শিশুসাহিত্য, প্রবন্ধ, ডায়েরি, চিঠিপত্র―সব মিলিয়ে তার রচনাসমগ্র প্রায় ৯০ খণ্ডে বিভক্ত। শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে তার অসংখ্য লেখা। সেসব লেখাগুলো পেয়েছে অমরত্ব। সব কালে সব বয়সের পাঠকদের জন্য তা আবশ্যকীয় পাঠ্য। দীপু মাহমুদ লেভ তলস্তয়ের বিখ্যাত কিছু গল্প এ বইটিতে সূচিবদ্ধ করেছেন। গল্পগুলো হলো―বাদুড়, মোড়গ ও ঈগল, গাধার সাধ, কাক ও কলসি, মিথেবাদী রাখাল বালক, পায়রা ও শিকারি এবং পিঁপড়া ও ঘুঘু। সূচিবদ্ধ গল্পগুলো বহুল পঠিত ও শিক্ষণীয় গল্প। ১৬ পৃষ্ঠার রঙিন এ বইটিতে যে গল্পগুলো রয়েছে সেই গল্পগুলোর সাথে রয়েছে চমৎকার আঁকা সব ছবি। বলা যায় যেমন গল্প তেমন অসাধারণ ছবি। বইটির প্রথম গল্পটি হলো ‘বাদুড়’। বাদুড় সব সময় কেন গাছের ডালে ঝুলে থাকে জানো? না জানলে এই গল্পটি পড়লে জানা যাবে কেন বাদুড় গাছের সাথে ঝুলে থাকে। ‘মোরগ ও ঈগল’ গল্পে দুটি মোরগের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়। সেই লড়াইয়ে যে মোরগটি জিতে যায় সেটি গর্বে অহংকারে গাছের মাথায় গিয়ে উঠে বসে। আর অমনি ঈগল তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। এ গল্প থেকে শিক্ষণীয় যে, কখনো সফল হলেও তা নিয়ে গর্ব বা অহংকার করা ঠিক নয়। ‘গাধার সাধ’ আর একটি মজার গল্প। এ গল্পে গাধা সিংহের চামড়া পরে সবাইকে ধোঁকা দিতে চায় নিজেকে সিংহ বলে। কিন্তু একসময় সে ধরা পড়ে যায়! আর সে যে গাধা সেই গাধাই রয়ে যায়। ‘কাক ও কলসি’ গল্পটি একটি বিখ্যাত গল্প। বিভিন্ন বইয়ে এই গল্পটি পাওয়া যায়। একটি তৃষ্ণার্ত কাক একটি কলস দেখে সেই কলসের মধ্য থেকে পানি পান করতে চায় কিন্তু সে পানি পান করতে পারে না পানি কলসের তলায় থাকার কারণে। এরপর বুদ্ধি করে একটা একটা পাথর এনে সেই কলসের মধ্যে ফেলে এবং কলসের তলানির পানি ওপরে উঠে আসে। আর সে পানি পান করতে পারে। এ কথা বলা যায় যে, লেভ তলস্তয়ের লেখা শিশুতোষ গল্পের একটি উল্লেখযোগ্য বই এটি। এক মলাটে এমন সব গল্প পাওয়া যেমন আনন্দের তেমনি সৌভাগ্যেরও বটে। তাই বইটি যত দ্রæত পারা যায় সংগ্রহ করে নাও।
দীপু মাহমুদ। জন্ম ২৫ মে ১৯৬৫, নানাবাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার গ্রাগপুর গ্রামে। শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে দাদাবাড়ি হাটবোয়ালিয়া গ্রামে। বেড়ে ওঠা স্নেহময়ী, কালিশংকরপুর, কুষ্টিয়া। পিতা প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল হুদা, মা হামিদা বেগম। পড়াশোনা করেছেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতায়। আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে। স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, সায়েন্স ফিকশন সাহিত্য পুরস্কার, এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার, শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী স্বর্ণপদক, নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্বর্ণপদক, আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কার, সাহিত্য দিগন্ত লেখক পুরস্কার, আবু হাসান শাহীন স্মৃতি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, কবি জীবনানন্দ দাশ স্মৃতিপদকসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন সম্মাননা।