জীবন থেকে নেয়া! আমাদের জীবনটা আসলেও অনেক জটিল। প্রতিটা মুহূর্তে অনেক ওঠা নামা আমাদের।এই মন ভালো তো এই মন খারাপ। জীবনে আমরা যখন অনেক কষ্টে আর হতাশায় থাকি, আমরা চাই কেউ আমাদের পাশে বসে আমাদের একটু সময় দিক, একটু আমাদের কথাগুলো শুনুক। ভালো হোক মন্দ হোক; এমনকি মিথ্যে হলেও একটু ভরসা দিক। আমরা সব সমস্যার সমাধান চাই না, কিন্তু আমরা একটু সঙ্গ চাই, একটু অনুভব করতে চাই, কেউ আমাকে বোঝার চেষ্টা করছে। আমি আমার নিজের জীবন থেকে এই জিনিসগুলো শিখেছি। স্কুল জীবনে দীর্ঘ ১০ বছর আমি আমার চেহারা আর শারীরিক গড়ন নিয়ে অনেক নির্মম উপহাস আর কৌতুকের সম্মুখীন হয়েছিলাম। স্কুলের একটা বড় সময় কাটে হোস্টেলে। আমার হোস্টেলে পুরুষত্ব আর ব্যক্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন অনেক হ্যারাসমেন্টের শিকার হই আমি। সেখান থেকে কলেজে উঠে নিজেকে হাসির পাত্রে পরিণত করতে না চাওয়ায় নিজেকে একজন দুরন্ত কিশোর হিসেবে প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর হই। আমি দেখতাম, বন্ধুমহলে চূড়ান্ত মাত্রায় জনপ্রিয় হতে হলে শিক্ষক আর শিক্ষিকাদের নিয়ে একটু রসালো-কথন ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কথিত আছে, মহাকবি ফেরদৌসি এক রাতে ‘শাহনামা’-এর ষাট হাজার স্তবক লিখেন। আর আমিকলেজের প্রিন্সিপাল স্যার আর ম্যাডামকে নিয়ে ষাট লাইনের প্রেমের কবিতা লিখে ফেলি। কলেজের ছয় তলা হোস্টেলের দেয়াল ছিলো আমার লেখার কাগজ। প্রতি তলার দেয়ালে ১০ লাইন করে মোট ৬০ লাইন আমি লিখি। ফলস্বরুপ কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে যাই। ২০০৯ সালের ৯ নভেম্বর সকাল ১০:৩২এআমার বাবা মাথা নিচু করে আমাকে কলেজ থেকে নিয়ে আসেন। এরপর আমার মফস্বলের একটা কলেজে বাবা-মা, ছোট ভাই থেকে দূরে থেকে কলেজ জীবনটা কোনও মতে শেষ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠে নিজের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার দরুণ এক বছর আমার নষ্ট হয়। বাবা-মা আসলে তাদের সন্তানের কাছে খুব বেশি কিছু চান না। মাত্র দুইটা জিনিস তারা চান। • তাদের ছেলে যাতে একটা ‘ভালো ছেলে’ হয় • তাদের ছেলে যাতে একটা ‘ভালো ছাত্র’ হয় আমার কলেজে বহিষ্কারের কারণে আমি আমার বাবা-মায়ের ভালো ছেলের স্বপ্নটা ভেঙ্গে দেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠে ইয়ার ড্রপের ঘটনা, ভালো ছাত্রের ২য় প্রত্যাশাটাও শেষ করে দেয়। এই ২টা নোটিশ যেদিন আমার বাসায় আসে, তখন আমার আম্মু জানার পর তার প্রেশার উঠে যায়। নিজেকে অনেক অপরাধী লাগতো। সবার জন্য বোঝা মনে হতো। আমার পাশের বাসার আংকেল আন্টিরা তাদের ছেলে-মেয়েদের সাথে আমাকে মিশতে দিতেন না। আমার ছোট ভাই কোনও বিষয়ে দুষ্টামি করলে আমাকে আলাদা রুমে বলা হতো, তোমার কু-প্রভাবেই তোমার ছোট ভাই নষ্ট হচ্ছে। দিনের পর দিন কষ্টগুলো পেয়ে শুধু সমাধান খুঁজতাম। সব কষ্টগুলোর একটাই সমাধান আমার মাথায় ছিলো। “জীবন শেষ তো জীবনের সব না পাওয়া,জটিলতা, সমস্যা সব শেষ!”
পড়াশোনা করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠা করেছেন মানসিক উৎসাহদানের প্রতিষ্ঠান LIVE- Life Is Very Easy। সীমান্ত একাধারে একজন বক্তা, ট্রেইনার এবং পার্সোনাল ডেভেলপমেন্ট কোচ। আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। 'লিভ' এর শুরুর কথা, ভবিষ্যত পরিকল্পনা, তরুণদের নিয়ে তার ভাবনাসহ নানা বিষয়ে সীমান্ত কথা বলেছেন দুরবিন ডটকমের সাথে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরুনোর আগেই দেশে আর দেশের বাইরে প্রায় ১৫০০০+ সরকারি কর্মকর্তা, কর্পোরেট কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন আর যোগাযোগ, সিদ্ধান্তগ্রহণ, উপস্থাপনা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ প্রফেশনাল প্রশিক্ষক ও বক্তা এবং আইবিএজেইউ ডিবেটিং ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি মাশাহেদ হাসান সীমান্ত।