"স্থাপত্য ভাবনা" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: স্থপতি পিটার জুমথরের “Thinking Architecture” বইটি স্থাপত্যের শিক্ষার্থীরা সাধারণত যেমন বই পড়ে অভ্যস্ত ঠিক তেমন নয়। কারণ এই বইতে একটিও প্রজেক্টের ড্রয়িং নেই, একটি প্ল্যান বা সেকশন কিছুই না। পিটার জুমথর এখানে একজন ডিজাইনার, একজন স্থপতি হিসেবে অন্য অন্য স্থাপত্যকর্মের মাঝে অথবা নিজের কাজের মাঝে থেকে একজন ভােক্তার দৃষ্টিতে চারপাশটা খেয়াল করতে চেয়েছেন। কখনাে একজন চিন্তকের ভূমিকা পালন করে অনুভূতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। অথচ স্থাপত্যচর্চার ক্ষেত্রে নিজেদের কাজের মাঝে এই চিন্ত কের ভূমিকাকে আমরা খুব একটা খুঁজে পাই না। আমরা শিক্ষার্থীরা স্থাপত্যের ভাবনা নিয়ে খুব একটা উৎসাহী নই তা বলছি না কিন্তু একাডেমিক বা প্রফেশনাল প্রজেক্ট নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকা হয় যে স্থাপত্যের চিন্তাদর্শন নিয়ে আলাদা করে সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু বন্ধুদের সাথে আড্ডায় যেন এই ভাবনার আদান-প্রদান হয় সত্যি বলতে সেজন্যই বইটা করার একটা টান অনুভব করেছি। একাডেমিক পড়াশুনা চলাকালীন একটি পর্যায়ে যখন আমি একটা ছােট্ট বিরতির পর আবার আমার সেমিস্টার শুরু করতে যাচ্ছিলাম তখন স্থাপত্যের উপর ফোবিয়াটা কাটাতে আমার পছন্দের কাজ অর্থাৎ লেখালিখির সাথে স্থাপত্যের একটা বন্ধুত্ব করে দেওয়ার পরিকল্পনায় এই বইটির অনুবাদ করা শুরু করি। লাইব্রেরিতে মূল বইটিকে নজরে আনা খুব কঠিন। ছােট্ট একটা বই যার প্রচ্ছদটা কেবল লাল রঙের আর কিছু নেই তাতে। বই খুললেই দেখা মেলে লাইনের পর লাইন কেবল ইংরেজি হরফ, ভরা কিন্তু কোন ড্রয়িং নেই! তাহলে ঠিক কি পাঠ করতে আসলাম! স্থাপত্যবিদ্যার শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিকোণে কথাটা বলা। এছাড়া সাধারণ অর্থে পাঠ করতে হলে বর্ণ, শব্দ তাে লাগবেই। এইখানে বলে নেওয়া ভালাে যে যারা স্থাপত্যের সাথে জড়িত নন একাডেমিক বা প্রফেশনালভাবে এই বইটি আসলে তাদের জন্যেও।