"মমিপিডিয়া" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ প্রচলিত বদ্ধমূল ধারণা ছিল, মমি মানেই শুধু মিশর। নামক একটি দেশের প্রাচীন মানুষের সংস্কার ও পারলৌকিক কর্মকাণ্ড। তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে পিরামিডও। কিন্তু নিছকই ব্যাপারটি তা নয়। বরং এর সঙ্গে মিশে আছে অতীত থেকে বর্তমান অবধি অনেক রােমাঞ্চকর কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ভবেশ রায়ের গবেষণাসমৃদ্ধ গ্রন্থ মমিপিডিয়া দেখিয়ে দিল শুধু প্রাচীন মিশর নয়, সারা বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে আছে এই মমি সংস্কৃতি। মিশরেরও বহু আগেই মমি তৈরির প্রচলন ছিল পৃথিবীর বহু দেশে। প্রাচীন মিশরের ফারাও থেকে আধুনিক রাশিয়ার লেনিন এবং ভারতের মাদার তেরেসা পর্যন্ত সবার মরদেহ সংরক্ষণ করা হয়েছে মমি পদ্ধতিতে। আধুনিক প্রযুক্তি সহযােগে মমিকরণ তাই এখন আর কোনাে সংস্কার নয়। রীতিমতাে বৈজ্ঞানিক গবেষণা। এই বিজ্ঞানের আধুনিক নাম Cryonic Science. এই বিস্ময়কর বিজ্ঞানই নাকি একদিন মৃত মানুষকেও জীবিত করে তুলতে পারবে। মানুষকে দিতে পারবে অমরত্ব। তার জন্যও চলছে গবেষণা। এমনি একটি বিজ্ঞান গবেষণাগার আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনাতে: The Alcor life Extension foundation. এই সংস্থার Cryonic Surgeon-গণ, সারা পৃথিবীতে এখন আধুনিক মমিকরণ করে। দিচ্ছেন। যারা নিজ দেহ মমি করতে আগ্রহী তাদের নাম নথিভুক্ত (Booking) করা হচ্ছে। গবেষণাগারে এর মধ্যেই ৬৫০ জন জীবিত লােকের (২০০৪ সাল) নাম নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতিদিনই এই সংখ্যা বাড়ছে। এমনি সব বিস্ময়কর তথ্যে ভরপুর ভবেশ রায়ের ‘মমিপিডিয়া’ মূল্যবান ও বিরল উপাদানসমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ।
ভবেশ রায়ের জন্ম ১৯৪৭ সালের ৮ জুলাই ঢাকা জেলার ধামরাই থানার বাইশাকান্দা গ্রামে। শিক্ষাজীবন শুরু গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, তার পর কুত্তরা আব্বাস আলি হাইস্কুলে। ইন্টারমিডিয়েট করটিয়া সাদৎ কলেজে। স্নাতক ঢাকার জগন্নাথ কলেজে এবং স্নাতকোত্তর (বাংলা সাহিত্য) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু। অধুনালুপ্ত দৈনিক সমাজ পত্রিকার ফিচার এডিটর ছিলেন। তারপর সমবায় কর্মকর্তা (জনসংযোগ কর্মকর্তা) হিসেবে ১৯৯৬ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ। স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। বর্তমানে সাৰ্বক্ষণিক লেখালেখি করেন। প্ৰকাশিত বইয়ের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। কিশোর বিজ্ঞানের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক ।