আমাদের আবাসভূমি ‘পৃথিবী’ সৌরজগতের একটি গ্রহ। সবুজের সমারােহ এবং প্রাণপ্রাচুর্যে ও বৈচিত্র্যে এই গ্রহ অনন্য ও বিশেষ। পৃথিবীর অধিবাসীদের মধ্যে একমাত্র আমরা মানুষেরা-ই সম্মুখদৃষ্টির অধিকারী আর বুদ্ধিমত্তায় বিরলপ্রজ। পৃথিবীর বাইরের জগত সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল অপার। সে নিঃসীম-নীলিমার সীমানা পেরিয়ে যেতে চায় অসীম মহাশূন্যে। বহির্জাগতিক সত্যতা সন্ধানে ব্রতী হয়। বস্তুত এই হচ্ছে মানুষের মহাকাশ অভিযান তথা মহাবিশ্বের পথে পথে বিচরণের প্রেক্ষাপট। আর এজন্যই মানুষ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করে রকেট, মহাশূন্যযান, পৃথিবীপৃষ্ঠে স্থাপন করেছে। রেডিওটেলিস্কোপ, কক্ষপথে স্যাটেলাইট, স্পেস টেলিস্কোপ এমনকি মহাশূন্যে প্রতিষ্ঠা করেছে মহাকাশ স্টেশন। না, মর্ত্যে অবস্থান করে কেবল মহাজগতের তথ্য পেয়ে সন্তুষ্ট থাকেনি মানুষ। সে পৃথিবীর বাইরে পাড়ি জমাতে চায়। এর অংশ হিসেবেই মেজর ইউরি আলেক্সিয়েভিচ গ্যাগারিন ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮৭ মাইল দূরে গিয়ে পৃথিবীকে প্রত্যক্ষ করেছেন। এদিকে চন্দ্রপৃষ্ঠে পদচিহ্ন রেখে মানুষ সৃষ্টি করেছেন আরেক ইতিহাস। মঙ্গলগ্রহ অভিযানও অনেকখানি এগিয়ে গেছে। লাল ওই গ্রহে আগামী ২০২৬ সালে পা রাখবে মানুষ। শুধু তা-ই নয়, দ্বিতীয় আবাসভূমি হিসেবেও মঙ্গলগ্রহকে প্রস্তুত করতে চায় মানুষ। বস্তুত “মহাবিশ্বের পথে পথে” বিজ্ঞানগ্রন্থের চারটি অধ্যায়ে মানবজাতির মহাকাশ অভিযানের উপযুক্ত বিষয়আশয়ের একাল-সেকাল তুলে ধরেছেন গ্রন্থকার। এবং এই মহাকাশ অভিযান কীভাবে মানুষের মধ্যে মহাজাগতিক চেতনার বিকাশ ঘটাতে পারে, তা-ও তিনি স্পষ্ট করেছেন।
রুশাে তাহের মূলত বিজ্ঞানলেখক ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের তাত্ত্বিক গবেষক হলেও বিজ্ঞানকে সামগ্রিকভাবে প্রচার ও প্রসারে তিনি নিয়ােজিত। এর অংশ হিসেবেই বিজ্ঞানের বিষয়ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিজ্ঞানবিষয়ক অনুষ্ঠান নির্মাণ, বিজ্ঞানের ওপর সভাসেমিনার ও বক্তৃতার আয়ােজন প্রভৃতি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। শক্তির অপার উৎস নিউক্লিয়ার এনার্জির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের একনিষ্ঠ সমর্থক রুশাে তাহের। রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্রান্ট স্থাপন নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র বাংলাদেশের নিউক্লিয়ার যুগে পদার্পণ’র পরিচালক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবহারের জনসচেতনতায় রুশাে তাহের জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত কলাম লিখে যাচ্ছেন। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী টেলিস্কোপ । বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিজ্ঞানবিষয়ক অনুষ্ঠান ‘মহাবিশ্বের পথে পথে’র পরিকল্পক রুশাে তাহের। রুশাে তাহের’র জন্ম কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোটে, ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি । স্ত্রী মুক্তা ও কন্যা তামান্নাকে নিয়ে তাঁর পারিবারিক জীবন ।