ফ্ল্যাপঃ (আঁধারে লুকানো সুর) বিবাহিত হয়েও হরিশ দত্তের কন্যার প্রতি তোরাবের লোলুপতা তাকে সামাজিক প্রতিপত্তি অর্জনে প্রলুব্ধ করে। কিন্তু নান্দাইল গ্রামের মূল্যবোধের খুঁটিটা স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহতাব মাস্টারের পরিবারের হাতে থাকায় সেই ক্ষমতা অর্জনের জন্য সে মাহতাব মাস্টারের প্রজ্ঞাকে গ্রামের মানুষের কাছে খেলো করে তোলার পাশাপাশি তাদের মূল্যবোধে ধ্বস নামানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এককালের জাসদ নেতা, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নারীদের ধর্ষণ আর ভোগ ভক্ষণে মেতে ওঠার সাথে যিনি শহরের সম্পদশালীদের মাটি-ভিটা সব দখল করে নিয়েছিলেন, তিনি এখন মফস্বল শহরের একমাত্র তারকা হোটেলের মালিকই শুধু নন, ক্ষমতাসীন দলে ঘাপটি মেরে বসে থাকা একজন নীতি নির্ধারকও বটে! তোরাবকে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ‘তুফান’ উপাধি দিয়ে তিনি কৌশলে খুন করান আগামী নির্বাচনে তার সম্ভাব্যপ্রার্থীকে। ছাত্রদের নিয়ে মাহতাব আর রেজভি এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে তাদের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রেজভি পরামর্শে সংস্কৃতিমনা আর মেধাবী যে ছাত্র ছাত্রদের সংগঠনে বিদ্যুৎসাহী আর অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সে-ও গুম হয়ে যায়। কিন্তু তাতে দমে যান না, মাহতাব মাস্টার অথবা তার ছাত্র রেজভি এবং জীবনের দূরযাত্রায় অভিযাত্রী হয়ে ওঠা নাজনীন। তাঁরা জানেন, তাঁরা হেরে গেলেই নেমে আসবে এক অদ্ভুত আঁধার। শহরের নিকটবর্তী একটা গ্রামকে কেন্দ্র করে ঘটনা বিস্তৃত হলেও আমরা সামগ্রিক এক সমাজের অধঃপতনের চিত্রই খুঁজে পাই এই উপন্যাসে। মাহতাব, রেজভি অথবা নাজনীনের সংগ্রাম কি সফল হবে? গ্রামের মানুষে মানুষে যে সদ্ভাব, তার উদার প্রান্তরের আলো-হাওয়ায় খেলা করা যে সুর লুকিয়ে গেছে নিঃসীম আঁধারে, তারা কি সেই সুরকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারবেন?
কথাসাহিত্যিক কাজী রাফি ১৯৭৫ সালের ২২ নভেম্বর বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কাজী রইচ উদ্দীন এবং মাতার নাম ফিরোজা বেগম। তিনি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ বগুড়া থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশনসহ কমিশনপ্রাপ্ত হন । পরবর্তীতে তিনি নিজ ইংরেজিতে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেন। ‘ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা’ উপন্যাস তার লেখা প্রথম উপন্যাস। প্রথম উপন্যাসেই তিনি পাঠক এবং বোদ্ধাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা’ , ‘ত্রিমোহিনী’ , রূপডাঙ্গার সন্ধানে’ , ‘পাসওয়ার্ড’ , ‘রংধনুর সাঁকো’, ‘লে জোঁ নদীর বাঁকে’, নিঃসঙ্গতার নগ্ন খোলস’, অরোরার আঙুল’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য । প্রথম উপন্যাস ‘ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা’র জন্য পেয়েছেন ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার-১০’ এবং ‘এম এস ক্রিয়েশন (শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ) সম্মাননা’ । উপন্যাস এবং ছোটগল্পে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছেন ‘নির্ণয় স্বর্ণপদক-২০১৩ ।