"আধুনিক কৃষিবার্তা ও কৃষিপ্রযুক্তি" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: কৃষি প্রধান বাংলাদেশের কৃষি আজ শৈণ: শৈণ: গতিতে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়র মত এমন কষি উপযােগী মাটি ও পরিবেশ বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে আমাদের কৃষিই পারে সগৌরবে মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে স্থান করে নিতে। অনান্য প্রযুক্তির মত কৃষি প্রযুক্তিও একটা চলমান প্রক্রিয়া। দেশে বিদেশে এখন নিত্য নতুন কৃষি প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হচ্ছে, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা আমাদের দেশের উপযােগী করে মাঠ, ফসল, ফল, সবজি, মসলা ও বনজ ভেষজের উফশী এবং রােগ বালাই ও প্রতিকূলতা প্রতিরােধী জাত আবিষ্কার করছেন। কৃষির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত কৃষিবিদ, ডিপ্লোমা কৃষিবিদ, কৃষক, কৃষিকর্মী এবং কৃষি আগ্রহী অনেকেই অনেক সময় অনেক প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞাত থাকেন না; কিন্তু তাঁদের বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগ্রহ থাকে। এসব কথা মাথায় রেখে আমার দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের কৃষি সম্প্রসারণ কাজের অভিজ্ঞতার সাথে, বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের সমন্বয় করে, সবার উপযােগী হিসেবে সহজবােধ্য করে এই বিশেষ বইটির সংকলন প্রকাশ করা হলাে। আশা করি কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে এটাকে একটা আধুনিক কৃষিবার্তা ও কৃষি প্রযুক্তির আপডেট হ্যান্ডবুক হিসেবে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
কৃষিবিদ ড. মাে. আখতারুজ্জামান, সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার দুর্বাচারা গ্রামে ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল শিক্ষক প্রয়াত বাবা এবং প্রচণ্ড ধীশক্তির অধিকারিনী মমতাময়ী মায়ের স্নেহের পরশে নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপনান্তে কুষ্টিয়া জেলা স্কুল হতে ১৯৭৮ সালে এসএসসি, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে এইচএসসি, পাশ করে ময়মনসিংহস্থ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে কৃষিতে কৃতিত্বের সাথে ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করত: ১৯৮৬ সালের ৮ম রেগুলার বিসিএস পরিক্ষায় চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়ে কৃষি ক্যাডারের সদস্য হিসেবে চাকুরি জীবন শুরু করেন ১৯৮৯ সালে। সরকারি বৃত্তিতে যুক্তরাজ্যের রেডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাবােরেশনে ১৯৯৯ সালে কীটতত্তে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরি জীবনে তিনি কৃষির বহুমুখী সেক্টর ও উন্নয়ন সহযােগিদের সাথে কাজ করে মাঠ ফসল, উদ্যান ফসল, বীজ প্রত্যয়ন, উদ্ভিদ সঙ্গনিরােধ, বালাই ব্যবস্থাপনা, মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কৃষি প্রশিক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে বিপুল বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। যুক্তরাজ্য, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যাণ্ড, ভারত প্রভৃতি দেশ থেকে গ্রহণকৃত একাডেমিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, শিক্ষা সফরে নেতৃত্বদান, আন্তর্জাতিক সেমিনারে রিসাের্স স্পীকার, লীড স্পীকার ও কীনােট স্পীকার হিসেবে বক্তব্য প্রদান করে তিনি ভীষণভাবে সমাদৃত হয়েছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্ট লেকচারার হিসেবে দেড় যুগ কাজ করার বর্ণিল অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ক্লাস পরিচালনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’তে। প্রতিটি কর্মস্থলেই তার উদ্ভাবনী কাজের সন্ধান মেলে। প্রচণ্ড বিদ্যানুরাগী ও সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারি এই মানুষটি কৃষির বাইরেও মনস্তত্ব, মােটিভেশন, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে ব্যাপক পড়াশুনা করত: প্রচুর লেখালেখিও করেন। তিনি জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালকের সফল দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে অবসরােত্তর ছুটিতে আছেন। পদস্থ সরকারি চাকুরে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত সহধর্মিনী, কর্মজীবী পুত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পড়ুয়া একমাত্র আত্মজাকে নিয়ে সদা হাস্যময় ইতিবাচক মানসিকতার এই মানুষটির রয়েছে এক সুখময় পারিবারিক জীবন। তাঁর নিজের ডিজাইন করা সুবিন্যস্ত ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট (www.drakhtaruzzaman.info) ব্রাউজ করলে তাঁর সৃষ্টিশীলতা, যােগ্যতা, দক্ষতাসহ বহুমাত্রিক ও অতলান্তিক জ্ঞানের সন্ধান মিলবে।