“কিডনি সুরক্ষায় ভেষজ" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ বর্তমানে কিডনি রােগে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে। প্রায়ই শােনা যায় কিডনি বিকল হয়ে গেছে, কিডনি সংযােজন করতে হবে। তা না হলে কিডনিতে আক্রান্ত রােগী বেশি দিন বাঁচবে না। এছাড়া কিডনির আরাে অনেক রকম সমস্যা হয়। এজন্য কিডনি রােগ, রােগের কারণ ও করণীয় বিষয়ে জানা প্রয়ােজন। মানবদেহে দুটি কিডনি আছে। এ দুটি কিডনি প্রতি মিনিটে ১.৩ লিটার রক্ত ছাঁকছে ও বর্জ্য আকারে তা প্রস্রাবের সাথে বের করে দেয়। প্রত্যেক কিডনিতে অনেক ছােট ছােট নল আছে। সকল নল একটার সাথে অন্যটা জোড়া লাগালে তা দৈর্ঘ্যে ৪০ মাইল হবে। আমরা সবাই সুস্থ জীবন প্রত্যাশা করি। নিরব ঘাতক রােগগুলাের মধ্যে অন্যতম রােগ ধিরগতির কিডনি বিকল রােগ। বেশির ভাগ রােগীই অর্থের অভাবে প্রয়ােজনীয় চিকিৎসা করাতে পারে না। তাই স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার মাধ্যমেই ঘাতক ব্যাধি হতে নিরাপদ থাকা সম্ভব। কিডনির গােলমাল হলে চোখ, মুখ, হাত ও পা ফুলে যায়, প্রস্রাব খুব কম বা আটকে আটকে হয়। কিডনিতে পাথর না হয়ে ইনফেকশন হলে বারবার জ্বর, প্রস্রাবে জ্বালাপােড়া ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরাতন ডায়াবেটিস কিডনির কোষ ধীরে ধীরে নষ্ট করায় দূষিত পদার্থ শরীর থেকে বের করার ক্ষমতা কিডনির থাকে না। কিডনির সুস্থতার জন্য অল্প বয়স হতেই সুষম খাবার খাওয়া উচিত। অক্সালেট জাতীয় খাবার খেলে মূত্রথলিতে পাথর সৃষ্টি হয়। পরে তা কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে। কিডনিতে পাথর হলে প্রচুর পানি পান করা প্রয়ােজন। মানবদেহে প্রতিদিন ৫ লিটার পানি প্রয়ােজন। প্রত্যহ মানবদেহ হতে ২.৩ লিটার পানি বের হয়। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনির জন্য সমস্যা হতে পারে। কিডনি সম্পর্কে সকলেরই সচেতন হতে হবে। তাই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও প্রস্রাবের গােলমাল হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আশা করি এ বইটি পড়ে সকল শ্রেণির মানুষ কিডনি ও এর রােগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে। বইটি পাঠক সমাজে সমাদৃত হবে এটাই প্রত্যাশা।
ডাঃ আলমগীর মতি ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলাধীন কলুকাঠি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মরহুম মৌলভী গোলাম মোস্তফা এবং মাতার নাম রহিমা খাতুন। ডাঃ আলমগীর মতি’র শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি হয় তাঁর নিজ গ্রামে অবস্থিত কলুকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অভাবনীয় মেধার অধিকারী এবং কঠোর অধ্যবসায়ী। অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ থেকে “ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি” ডিগ্রী এবং ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি” ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ইন্ডিয়ান বোর্ড অব অলটারনেটিভ মেডিসিন থেকে “এম.ডি” ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে চায়না থেকে “নিউরো” ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০০৬ সালের ১ এপ্রিল তিনি সোসাইটি অফ কম্পিমেন্টারি মেডিসিন এন্ড ফ্যামিলি ওয়েল ফেয়ার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টর অফ ফিলোসোফী (ডি.ফিল) ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি আমেরিকান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে হারবাল বিষয়ের উপর “এম ফিল” করেন। তিনি ১৯৭৭-৭৮ সালে বাংলাদেশের ১৮টি হোমিও কলেজ ছাত্র সংসদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় পর্যায়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি একজন অন্যতম পুরোধা। ডাঃ আলমগীর মতি শুধু একজন চিকিৎসক ও গবেষকই নন, তিনি একজন সফল লেখকও বটে। পেশাগত জীবনে এসে তাঁর চিন্তা ও গবেষণার মাধ্যমে রচনা করেন চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর বেশ কয়েকটি অমূল্য গ্রন্থ। তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে বিশ্বনবী (সাঃ) এর চিকিৎসা বিধান, নিরোগ থাকার উপায়, সুস্থ থাকার সোনালী উপায়, হারবাল পদ্ধতিতে শতায়ু লাভের উপায় অন্যতম। তিনি তার কর্মদক্ষতা ও কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ওয়ার্ল্ড কোয়ালিটি কমিটমেন্ট এ্যাওয়ার্ড-২০০৬, দি ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন প্রোডাক্টস এন্ড সার্ভিস-২০০৭, দি ডায়মন্ড আই এ্যাওয়ার্ড ফর কোয়ালিটি কমিটমেন্ট এন্ড এক্সিলেন্স-২০০৭ সহ ১৫টি আন্তর্জাতিক সম্মাননা পুরষ্কার এবং অসংখ্য জাতীয় পুরষ্কারে ভূষিত হন। এই নশ্বর পৃথিবীতে তাঁর মতো মানুষ বার বার ফিরে আসুক এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।