"আঁখি পল্লবে" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বাংলাদেশের কোনাে এক ছােট্ট মফস্বল শহরের অত্যন্ত নম্র-ভদ্র ও খুবই বােকা স্বভাবের ছেলে আদি। মাথাভর্তি কোঁকড়া চুল। খুব ছােটবেলা থেকে চোখে অসুখ থাকায় সবসময় মােটা গ্লাসের বিরক্তিকর চশমা পড়তে হয় তাকে। বাবার কাছ থেকে পাওয়া লেখালেখি ও দাদাজানের কাছ থেকে পাওয়া ক্যাসেট প্লেয়ার নিয়েই সে সারাদিন ব্যস্ত থাকে। তিন বছরে অমর একুশে বইমেলায় তার দুটি উপন্যাস ও দু’টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল এবং বইগুলাে অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ায় সে এই বছর শ্রেষ্ঠ নবীন লেখক পুরস্কারে ভূষিত হয়। আদি পিএইচডি’র জন্য স্কলারশিপ পেয়েছে আমেরিকার একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছয় মাস ধরে সে বাড়িতে বসে আছে, ভিসা পেলে চলে যাবে আমেরিকা। সে প্রতিদিন খুব ভােরবেলায় নিজের ডিজাইনের Sunrising ড্রেস পড়ে নিজের নামান্তরিত ‘সানভারটে’ বসে সূর্যোদয় দেখে আপন মনে। অবন্তী এই বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশােনা শেষ করে আদিদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। কারণ আদির বাবা নূরুল ইসলাম মাস্টার সাহেবের জ্ঞানের গ্রাম’ নামের এই বাড়িটি তার মামাবাড়ি। কিছুদিন পর পারিবারিকভাবে আদি ও অবন্তীর বিয়ে ঠিক হয়। আদির ডাক্তার আংকেল ডা. বিরেন্দ্র ভৌমিক চক্রবর্তী শুধুমাত্র অবন্তীকে জানান, দু’মাসের মধ্যে আদির চোখের কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করতে হবে, তা না হলে আদি চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যাবে। তাই অবন্তী আদিকে বলেছে, কোন মেয়ের জীবন নষ্ট করার অধিকার তার নেই, যেভাবেই হােক এই বিয়ে তাকে বন্ধ করতে হবে। তাহলে কি অবন্তীর ভালােবাসা মিথ্যে ছিল নাকি আদির? আদি কি তাহলে চিরদিনের জন্যই অন্ধ হয়ে যাবে? তার স্বপ্নের পিএইচডি কি আর হবে না? আর কোনদিন ‘সানভারটে’ বসে সূর্যোদয় দেখতে পারবে না? তাকে কি তাহলে নিজ ভালােবাসা নিজহাতে গলাটিপে হত্যা করার অপরাধবােধ নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে? যে অপরাধবোেধ মৃত্যুঅবধি থাকবে তার আঁখি পল্লবে?