“লন্ডনের দিন-রাত্রি" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ‘লন্ডনের দিন-রাত্রি’ এক অন্যরকম ভ্রমণকাহিনি। গতানুগতিক ভ্রমণকাহিনির মতাে এতে পাখি-চোখে বর্ণিল ও আনন্দনগরী লন্ডনকে দেখা হয়নি। এখানে মনুমেন্টের উচ্চতা আর জাদুঘরের উচ্ছ্বসিত বর্ণনার আতিশয্য নেই। এ কাহিনি হপ অন-হপ অব বাসের মতাে দৌড়ে দৌড়ে বিগবেন, টাওয়ার অব লন্ডন বা মিউজিয়াম দেখা নয়। এ রানিবাড়ির প্রহরী বদলের রাজকীয় দৃশ্যের মুগ্ধ বর্ণনা নয় । এ ছুঁয়েছেন ভিন্ন দেশ, সংস্কৃতি ও বহু ভাষাভাষী মানুষকে একটু একটু করে আবিষ্কার ও উপস্থাপন। এ উপস্থাপনে লেখক দ্রষ্টব্য বস্তু ও স্থানে সঞ্চার করেন জীবনের উচ্ছ্বাস ও প্রাণের উল্লাস। তাই ট্রাফলগার স্কোয়ারে নেলসন কলামের স্থাপত্য সৌন্দর্যের চেয়ে বড় হয়ে ওঠে ‘ফ্রি হাগ’ ফেরি করা এক বুড়াে। সাউথ্যাম্পটনের পর্যটক আকর্ষণের চেয়ে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ডেভিড নামের আমুদে এক কৃষক । টেমস নদীর চেয়েও যেন সুন্দর হয়ে ওঠে টাওয়ার ব্রিজের কাছে অচেনা গায়কের ‘ওল্ড ফাদার থেমস’-এর অপূর্ব সুরমূৰ্ছনা ও জমে ওঠা মানুষের ভিড়। পাঠক ‘লন্ডনের দিন-রাত্রি পড়ে লেখকের হাত ধরে চলে যেতে পারবেন লন্ডনের সানডে মার্কেট থেকে বিলাস বাজার হ্যারড়সে। চলে যেতে পারবেন শেক্সপিয়ারের বাড়ি থেকে একেবারে খােদ ব্রিটেনের রানিবাড়ির পার্টিতে। এ কাহিনিতে দেখা মিলবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ, এমনকি সুদূর আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসী মানুষের জীবনসংগ্রাম ও নতুন এক সংস্কৃতি। এক ভ্রমণকাহিনিতে পাওয়া যাবে অসংখ্য জীবন ও জনপদের গল্প । এ বইয়ে আছে নতুন দেশ দেখা ও জানার আনন্দ। কিন্তু তাকে ছাপিয়ে ক্রমেই যেন বড় হয়ে ওঠে ফেলে আসা দেশের জন্য দীর্ঘশ্বাস, অভিবাসী জীবন, ব্রিটিশ সংস্কৃতি এবং সে সংস্কৃতিতে ঠাই নেওয়া নতুন মানুষের গল্প । এই কাহিনিতে বয়ে যায় বহু সংস্কৃতির এক অপূর্ব মিলনধারা। লেখক ফারহিম ভীনা জাদুর তুলিতে এঁকেছেন লন্ডনের জীবনযাপনের নানা রকম দৃশ্য। ভ্রমণ ও সংস্কৃতিপিপাসু মানুষের কাছে বইটি আনন্দ-বেদনার ভিন্ন জগতের এক নতুন দরজা খুলে দেবে ।