এ বইয়ে সৃষ্টিশীল নারীর দ্বন্দ্বময় জগতের পাশে প্রায় একই সুতোয় গাঁথা তার সমস্ত সংকটে আলো ফেলা হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে। সাধারণত সে জগতের বহির্বাস্তবেই আমাদের চোখ পড়ে, অন্তর্বাস্তব থেকে যায় প্রায় আলোহীন। অন্তর্বাস্তবে নজর পড়ে না বলেই বহির্বাস্তবকেও ঠিক বুঝে ওঠা হয় না। সন্তান জন্মদান থেকে জগতের সকল নির্মাণ আর সৃষ্টিতে পুরুষের সমান অংশী নারী। অথচ সে শোষিতেরও শোষিত। প্রাপ্তির খাতা তার প্রায় শূন্য। নারীর প্রতি বৈষম্য ও অধিকার নিয়ে প্রকাশিত বইও বিরল নয়। তবু তার শ্রম ও সংগ্রামে প্রাপ্তির প্রশ্ন অমীমাংসিত এবং চলমান। এ প্রশ্ন বহুবার বহুভাবে তোলা হয়েছে; হচ্ছে আর হবেও। ফারজানা সিদ্দিকাও সে প্রশ্নই তুলেছেন। নৈর্ব্যক্তিক চোখে খুঁজে দেখেছেন নারীর অন্তর্জগতের বেদনা ও বঞ্চনা, সাহস ও সংগ্রাম, প্রেম ও প্রেমহীনতা। আশাপূর্ণা দেবী, সুফিয়া কামাল, নুরজাহান বোস আর শাহীন আখতারের রচনার আলোচনা করতে গিয়ে নারীর নিজস্ব সংকটকে চিহ্নিত করে দেখিয়েছেন, তা আসলে নারী-পুরুষ উভয়েরই সংকট। তিনি সে আলোচনায় লেখকের সঙ্গে শামিল। প্রয়োজনে একই কাতারে দাঁড়িয়ে রচনার সাহিত্যিক ধরনের বাইরে গিয়ে চিহ্নিত করেছেন সামগ্রিক সত্যকে। তাঁর ঝরঝরে গদ্যের যুক্তিতে গ্রন্থালোচনাও হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত রচনা, সেখানে লেখকের অন্তর্জগৎকে একজন নারীর সংগ্রামী যাত্রাপথ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন
জন্ম : ১৯৭৪, সাগরদি, বরিশাল। শিক্ষা : এসএসসি- এ. ওয়াহেদ বালিকা বিদ্যালয়, বরিশাল; এইচএসসি- বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ; স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট-এ শিক্ষকতা করছেন। নারীর সৃষ্টিশীল জগৎ, দেশভাগ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাহিত্যিক পুনর্নির্মাণের প্রতি বিশেষ আগ্রহী।