"আত্মশুদ্ধি করুন আত্মবিশ্বাস বাড়ান" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ শৈশব থেকে কৈশাের, কৈশাের থেকে যৌবনের এই যে পদার্পণ; এই সময়টা মানব জীবনের অনেক মূল্যবান সময়। এই সময়ে একবার নৈতিক স্খলন হলে বা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী জীবনটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হতে পারে। আমরা এখন এমন একটা সময়ে বাস করছি যখন আকাশ সংস্কৃতি গােটা বিশ্বকে একটা গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত করেছে, ভাল মন্দ সব কিছু এখন একসূত্রে গাঁথা। ফলে বন্ধু বান্ধবদের সাহচার্যে বা কখনাে কৌতুহলের বশে যুব কিশােররা বিপথগামী হচ্ছে, হচ্ছে নেশাশক্ত, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করছে। ওদিকে আমাদের যুব কিশােরদের সুপথে পরিচালনার নামে তাদের অভিভাবকেরাও অনেক সময় তাদের উঠতি বয়সী ছেলে মেয়েদেরকে কতকটা মানসিক চাপ প্রয়ােগ করে থাকেন, যেটা কোনভাবেই কাঙ্খিত নয়, পরিণামে তাদের ছেলেমেয়েরা আরাে বিপথগামী হয়ে যায়। এসব চিন্তা করেই বােধহয় বিশ্বকবি রবি ঠাকুর সেই শতাব্দীকাল আগে তার ‘ছুটি' নামক ছােট গল্পে দুরন্ত ফটিকের চরিত্র বিশ্লেষণে বলেছিলেন, “বার চৌদ্দ বছরের ছেলের মত বালাই আর পৃথিবীতে নাই”। লেখকের ব্যক্তি জীবনের অভিজ্ঞতার আলােকে রচিত এই পুস্তকে সংযােজিত বিষয় ভিত্তিক তথ্যমালা কিশাের, কিশােরী ও তাদের অভিভাবকদেরকে আত্মশুদ্ধি করতে সহায়তা করার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিজেকে একজন চৌকস ও দক্ষ ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে বলে লেখক আশাবাদী।
কৃষিবিদ ড. মাে. আখতারুজ্জামান, সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার দুর্বাচারা গ্রামে ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল শিক্ষক প্রয়াত বাবা এবং প্রচণ্ড ধীশক্তির অধিকারিনী মমতাময়ী মায়ের স্নেহের পরশে নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপনান্তে কুষ্টিয়া জেলা স্কুল হতে ১৯৭৮ সালে এসএসসি, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে এইচএসসি, পাশ করে ময়মনসিংহস্থ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে কৃষিতে কৃতিত্বের সাথে ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করত: ১৯৮৬ সালের ৮ম রেগুলার বিসিএস পরিক্ষায় চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়ে কৃষি ক্যাডারের সদস্য হিসেবে চাকুরি জীবন শুরু করেন ১৯৮৯ সালে। সরকারি বৃত্তিতে যুক্তরাজ্যের রেডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাবােরেশনে ১৯৯৯ সালে কীটতত্তে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরি জীবনে তিনি কৃষির বহুমুখী সেক্টর ও উন্নয়ন সহযােগিদের সাথে কাজ করে মাঠ ফসল, উদ্যান ফসল, বীজ প্রত্যয়ন, উদ্ভিদ সঙ্গনিরােধ, বালাই ব্যবস্থাপনা, মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কৃষি প্রশিক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে বিপুল বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। যুক্তরাজ্য, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যাণ্ড, ভারত প্রভৃতি দেশ থেকে গ্রহণকৃত একাডেমিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, শিক্ষা সফরে নেতৃত্বদান, আন্তর্জাতিক সেমিনারে রিসাের্স স্পীকার, লীড স্পীকার ও কীনােট স্পীকার হিসেবে বক্তব্য প্রদান করে তিনি ভীষণভাবে সমাদৃত হয়েছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্ট লেকচারার হিসেবে দেড় যুগ কাজ করার বর্ণিল অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ক্লাস পরিচালনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’তে। প্রতিটি কর্মস্থলেই তার উদ্ভাবনী কাজের সন্ধান মেলে। প্রচণ্ড বিদ্যানুরাগী ও সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারি এই মানুষটি কৃষির বাইরেও মনস্তত্ব, মােটিভেশন, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে ব্যাপক পড়াশুনা করত: প্রচুর লেখালেখিও করেন। তিনি জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালকের সফল দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে অবসরােত্তর ছুটিতে আছেন। পদস্থ সরকারি চাকুরে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত সহধর্মিনী, কর্মজীবী পুত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পড়ুয়া একমাত্র আত্মজাকে নিয়ে সদা হাস্যময় ইতিবাচক মানসিকতার এই মানুষটির রয়েছে এক সুখময় পারিবারিক জীবন। তাঁর নিজের ডিজাইন করা সুবিন্যস্ত ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট (www.drakhtaruzzaman.info) ব্রাউজ করলে তাঁর সৃষ্টিশীলতা, যােগ্যতা, দক্ষতাসহ বহুমাত্রিক ও অতলান্তিক জ্ঞানের সন্ধান মিলবে।