মা-বাবার কোল আলাে করে শিশু আসে পরিবারে। খুশি-আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে। তাই শিশুকে সহজ-সুন্দর-সাবলীলভাবে গড়ে তােলার দায়িত্ব বর্তায় সংশ্লিষ্ট সবার ওপর, মা-বাবার তাে বটেই। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে,‘প্যারেন্ট’বলতে প্রধানত জন্মদাতা মা-বাবাকেই বােঝায়। আর‘প্যরেন্টিং' হলাে মা-বাবার ভূমিকা বা দায়িত্ব-কর্তব্য পালন প্রক্রিয়া বা কৌশল। অনেক সময় বাস্তব প্রয়ােজনেই পরিবারের অন্যদের,যেমন: দাদা-দাদি, নানা-নানি,চাচা-চাচি,মামা-মাসি,এমনকি ভাই-বােনদেরও এই ভূমিকা পালন করতে হয়। এদের আমরা গার্ডিয়ান' বা অভিভাবক হিসেবে চিহ্নিত করি। অভিভাবক শব্দের এই ধারণা আবশ্যিকভাবেই বাবা-মাকেও সম্পৃক্ত করে। এর একটি অংশ জন্ম-নির্ভর,বাকিটা পারিবারিক,পারিপার্শ্বিক বা আনুষঙ্গিক। আসলে, ‘প্যারেন্টিং’ শব্দের যুৎসই বাংলা প্রতিশব্দ এখনাে নেই। তাই প্রয়ােজন, বাস্তবতা এবং সম্ভাবনাকে বিবেচনায় নিয়ে অভিভাবকতু' শব্দটি ব্যবহার করা হচ্ছে এখানে। যতদিন নতুন কোন প্রতিশব্দ স্বীকৃত না হয়, আশা করি, অভিভাবকত্ব গ্রহণযােগ্য হবে।‘প্যারেন্টিং' এমন এক ভূমিকা যা সন্তানের প্রতি মা-বাবার পরিকল্পিত, ব্যাপক এবং গর্ভধারণ থেকে শুরু হয়ে আমৃত্যু বিস্তৃত দায়িত্ব। তবে তা প্রধানত সন্তানের পুরাে শৈশবকালীন (০-১৮ বছর) সময়কেই নির্দেশ করে যা শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি, মনাে-সামাজিক বিকাশ এবং আত্মিক-মানবিক প্রকাশকে সমৃদ্ধ করে,তাকে গড়ে তােলে সুস্থ-সুন্দর-সৃষ্টিশীল এবং দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে। শিশুর এই বেড়ে ওঠার প্রাথমিক শর্ত হল শারীরিক বৃদ্ধি, সুস্থতা ও নিরাপত্তা। একই সাথে তাকে ভালাে মানুষ হিসেবে গড়ে তােলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল: তার মানসিক, সামাজিক এবং মানবিক বিকাশ। এ ক্ষেত্রে বাবা-মার পাশাপাশি অন্যান্য অভিভাবক, এমন কি শিক্ষকদের ভূমিকাও প্রণিধানযােগ্য।