"দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমােস্ট হ্যাপিনেস পাঠককে নিয়ে যায় পুরান দিল্লি থেকে কাশ্মীরের উপত্যকায় ও এর চতুর্দিক ছাড়িয়ে ভারতবর্ষের বর্তমান ও ইতিহাস ভ্রমণে। এটা একটি রােমান্টিক উপন্যাস। এই গল্পে ফিসফিস করে কথা আছে, তারস্বরে আছে তেমনি বেদনহীন চোখের জল আছে। অনেক সময় বেদনায় কঠিন হাসিও আছে। আমাদের পরিচিত মধ্যবিত্ত জীবন তার লেখার এ বিষয় নয়। পাঠককে তিনি দাঁড় করিয়েছেন বাস্তব, এক অস্বস্তির সামনে, লেখক অরুন্ধতী রায় শুরু করেছেন নারীও নয়, পুরুষও নয়, হিজড়া আঞ্জুমের (পূর্বতন নাম আফতাব) জীবনের ঘটনাগুলাে পরপর সাজিয়ে। তিনি মানুষ’ আঞ্জুমের সুখ-দুঃখের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়েছেন। উপন্যাস আরেক চরিত্র তিলাে-তিলােত্তমা। সামাজিক নিয়মনীতির বাইরে এক বিদ্রোহী- সে সাজে না, চুল বাধে না, সেকেন্ডহ্যান্ড জামা পরে।। আর্কিটেক্ট হয়েও বস্তিতে থাকে। তিলাের একাধিক প্রেমিক, সে নিজে প্রেমে পড়ে এক কাশ্মীরি আন্দোলনকারী মূসার। এই গল্পটি নিয়ে যায় কাশ্মীরে, নাগরিকদের উপর সেনার অত্যাচার ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অন্দরে। আর আঞ্জুমের কাহিনি নিয়ে পাঠককে পৌছায় গোধারায়, ভারতের রাজনীতির নানা বিষয়ে সাম্প্রদায়িকতা শঠতা ও ভাগ্য তৈরি করার সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে ওঠা নানা জনের কথা।
বুকারজয়ী ঔপন্যাসিক, রাজনৈতিক লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও মাঠপর্যায়ের অ্যাকটিভিস্ট অরুন্ধতী রায়ের আলাপচারিতার সংকলন দানবের রূপরেখা। আলাপচারিতার সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ-২০০১-২০০৮। এর মধ্যে নির্ণীত হয়েছে বিশ্বব্যবস্থার নতুন রূপ, রাষ্ট্র থেকে শুরু করে ব্যক্তিমানুষ প্রত্যেকেই প্রভাবিত হয়েছে নতুন ব্যবস্থায়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা, আফগানিস্তান দখল, ইরাক যুদ্ধের সূচনার পাশাপাশি করপোরেট বিশ্বায়নের বিস্তার ঘটেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ বলে খ্যাত ভারতে হিন্দুত্ববাদের উত্থান, কৃষি, খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর মানুষের অধিকার হারানো, অহিংস আন্দোলনের কার্যকারিতা হারিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধের বিস্তারও এ সময়ের ঘটনা। এই প্রসঙ্গগুলো নিয়েই কথা বলেছেন অরুন্ধতী রায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বর্ণবাদ ও ভারতে হিন্দু ফ্যাসিজমের পুনরুত্থান, পৃথিবীর অপরাপর দেশজুড়ে দুঃশাসন ও কর্র্তৃত্বপরায়ণতা, পরিবেশ বিপর্যয়, সাধারণ মানুষের অধিকার হ্রাস, নারীর ওপর সহিংসতা বৃদ্ধি-বর্তমান বিশ্বের এই প্রবণতাগুলোও উঠে এসেছে এই আলাপচারিতায়। তাঁর সাহস, বক্তব্যের তীক্ষ্ণতা ও তীব্রতা আপনাকে ক্ষুব্ধ, উদ্বুদ্ধ আর আগ্রহী করে তুলবে।