শ্রাবণের মাঠ। চারদিকে বানের অথৈই জলে দিগন্ত ছোঁয়া ধূধূ মাঠ এখন নিরাকার ইশ্বরের পদস্পর্শ করনের মতো। দিগন্ত পেরুলেই যেনো উপকূল। উত্তাল সাগরের সাথে এগাকাও হয়ে যায়। মাঝে মাঝে দু'একটি কেয়া কাঁটায় বিদ্ধ আবর্জনা ও কচুরিপানার অসহায় দৃশ্য দেখা যায়। এর মধ্যে শ্রাবণের অঝোর বর্ষা ও আকাশে কালো মেঘের আচ্ছাদন যেনো সন্ধ্যার আগেই চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলে। কিন্তু মাঝে মাঝে বিজলির চমকে যখন সারামাঠ আলোকিত হয় ঠিক তখনই দৃশ্যমান হয় আলিমদ্দির একমালাই নাওখানা। জোংরা মাথায় লগি দিয়ে খোঁচা মেরে নাও বাইছে সে। কিন্তু এখানে পানি বেশি থাকায় লগি চালানো যাবে না; তবে খুঁচতে পারলে যাওয়া যায় তাড়াতাড়ি। অগত্যা কি আর করার, লগির গোড়াটা পানির উপর সপাৎ সপাৎ বাড়ি মেরে ধুয়ে ছইয়ের একপাশে রেখে গলইয়ের মধ্যের ছইয়ের নিচে রাখা একখানা বৈঠা নামায় সে। লগি বাঁশের এবং লম্বা তাই সেটা উপরে রাখলে বৃষ্টি বা রোদে তেমন ক্ষতি হয় না কিন্তু লোহা কড়াই গাছের দামি বৈঠা সে ২৭০ টাকায় কিনেছে আউড়া বাজার থেকে। ছইয়ের উপরে রাখলে রোদে ও বৃষ্টিতে ভিজে 'উড়াইয়া যাইতে পারে'তাই এত দামের বৈঠা থাকলে মাঝিরা ছইয়ের নিচে ছিয়া দিয়ে রাখে নতবা রাখে গলইর উপর।