‘দ্য ঈগল হ্যাজ ল্যান্ডেজ’ বইয়ের ভূমিকাঃ অবশেষে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ‘দ্য ঈগল হ্যাজ ল্যান্ডেড’এর অনুবাদ। আল্লাহ পাকের কাছে কৃতজ্ঞতা যে, আমার মতো একজন অলস মানুষকে তিনি এত বড় বই শেষ করার শক্তি দিয়েছেন। জ্যাক হিগিন্স জীবনে লিখেছেন প্রায় সত্তরের অধিক বই, কিন্তু এই বইটিকে তাঁর সেরা কাজ বলে মনে করা হয়। ইংল্যান্ড থেকে এক দল জার্মান কমান্ডো কর্তৃক চার্চিলকে অপহরণের এই রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার প্রকাশিত হয় উনিশশ পঁচাত্তর সালে। ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা পায় বইটি। এরপরের বছরে চলচ্চিত্র ও নির্মাণ করা হয় এই বইয়ের উপরে। স্টাইনার চরিত্রে ছিলেন ক্রিস্টোফার নোলানের ব্যাটম্যানের আলফ্রেড খ্যাত মাইকেল কেইন। বইটা সব মিলিয়ে কুড়ি অধ্যায়ের। ষোলো অধ্যায় পর্যন্ত পড়ার পরে বইটা রেখে দিয়েছিলাম অনেকদিন। পাঠক এর কারণ জিজ্ঞেস করতে পারেন। কারণ একটা নয়, দুটো ছিল আসলে। একটা কারণ ছিল, বইটাকে মনে হচ্ছিল কোন সুস্বাদু খাবার, খেয়ে ফেললেই তো শেষ। আরেকটা কারণ হচ্ছে, মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল আমার। জার্মান কমান্ডোদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা বুঝতে পারছিলাম আমি। তারপরেও মনের একটা অংশ চাইছিল, জিতে যাক স্টাইনাররা, অপহরণ করে নিয়ে যাক চার্চিলকে। স্টাইনারের সাথে ট্রয়ের হেক্টরের কোথায় যেন একটা মিল আছে, হেরে যাবে জেনেও যাকে ভালো না বেসে পারা যায়না। থ্রিলার বইয়ের শেষের দিকে সাধারণত একটা চমক থাকে। এই বইয়েও আছে। তবে চমকটা এতটাই অপ্রত্যাশিত যে, পড়ার সময় আমি ঘুণাক্ষরেও তা কল্পনা করতে পারিনি। আমার ধারণা, পাঠকরাও খুব বিস্ময় বোধ করবেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে আজ থেকে প্রায় তিয়াত্তর বছর আগে। সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে অনেক কিছুই। পড়তে গিয়ে বেশ কয়েকবার হোঁচট খেয়েছি আমি, সে সময়ের জার্মান ভাষা ও পরিবেশ বোঝার জন্য সাহায্য নিতে হয়েছে গুগল নামের এক আশ্চর্য প্রদীপের। পাঠক যেন আমার মতো সমস্যায় না পড়েন সে জন্য আমি বইয়ের শেষে নির্ঘণ্ট যুক্ত করে দিয়েছি। আশা করি, এর ফলে বইটা আরও উপভোগ্য হবে পাঠকের কাছে। এবার কৃতজ্ঞতা স্বীকারের পালা। আদী প্রকাশনের কর্ণধার সাজিদ ভাইকে ধন্যবাদ। অল্প কথায় বুঝিয়ে বলার পরেই তিনি এই বইটা প্রকাশ করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। বিশেষ ধন্যবাদ মাশরুফ হোসেন ভাইকে। বইটা অনুবাদ করার ইচ্ছে আমার আগে থেকেই ছিল, তবে আরও কিছুদিন পরে করতাম হয়তো। কিন্তু তিনি ফেসবুকে ‘দ্য ঈগল হ্যাজ ল্যান্ডেড' নিয়ে পোস্ট করার পরেই আমি হাত দিই অনুবাদে। আর আমার স্ত্রীর কথা না বললেই নয় ও কী কীভাবে আমাকে সাহায্য করেছে তা বলতে গেলে লম্বা এক ফিরিস্তি হয়ে যাবে। শুধু বলি, ও সাথে না থাকলে এই বইয়ের কাজ আমি শেষই করতে পারতাম না। পাঠকদের সবাইকে শুভেচ্ছা এবং ধন্যবাদ। আপনাদের ভালোবাসাই আমার শক্তি। ইমতিয়াজ আজাদ, ঢাকা,২০১৮