মানবজীবনের অগ্রযাত্রার দিকনির্দেশনায় দুটি উল্লেখযােগ্য বিষয় ‘দর্শন’ ও বিজ্ঞান। এই উপাদান। দুটির নানা বিষয় আলােচিত হয়েছে বর্তমান গ্রন্থে। এই বিষয় দুটির সীমানা ছাড়িয়ে গ্রন্থে এসেছে সৃষ্টি রহস্য মানব সৃষ্টি মানুষের ধর্ম বিশ্বাস গােরামি-অন্ধত্ব এসেছে অন্ধত্ব থেকে মুক্তির। অন্বেষা এবং সেই অনুসন্ধানের যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ।দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক অনুসন্ধানে এম, এন, রায় বহু দার্শনিক ও বিজ্ঞানীর মতামত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। করেছেন, উদ্ধৃত করেছেন তাঁদের উক্তি। পুপিন নিউটন লিবনিজ, ম্যাকডুগাল, লজ, হাইমেন লেভি, হ্যানস রাইখেনব্যাক হােয়াইটহেড, দেকার্ত বাট্রান্ড রাসেল টমাস হাক্সলি আইনস্টাইন এডিংটন জীনস, চার্লস পিয়ার্স, হারমান ভীল, প্লেটো, হেগেল প্রমুখ মনিষীদের ভাবনা-মন্তব্যের ভিত্তিতে দর্শন ও বিজ্ঞানের সম্পর্কেও নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। আমাদের সামনে। এসেছে ‘নয়া প্রাণবাদ’ প্রসঙ্গ। প্রাচীন মধ্য থেকে বর্তমান (লেখকের সময়কাল) সময়ের বিজ্ঞানীদের বিচিত্র আবিষ্কারের পথে জীবনবাদের যে পথ চলা তারই সন্ধান পাওয়া যায় এই গ্রন্থে। মর্গান, বার্গসো প্রমুখ বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত তথ্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ উঠে এসেছে এর পাতায় পাতায়। ‘বিজ্ঞান ও দর্শন' গ্রন্থকে বলা যায় মানবমুক্তির লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টির পথের পাথেয়। জগত-জীবন। প্রসঙ্গে গতিমান চিন্তার দিকনির্দেশক এই গ্রন্থ। এমন গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়ােজনীয় একটি গ্রন্থ পাঠককে নিয়ে যেতে যুক্তি-তর্ক আর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের সুচ্ছলিখরে।
মানবেন্দ্রনাথ রায় (২১শে মার্চ, ১৮৮৭ - ২৫শে জানুয়ারি, ১৯৫৪) ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। তার আসল নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। বিপ্লবী কাজ করতে গিয়ে তিনি অসংখ্য ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। মি. মার্টিন, মানবেন্দ্রনাথ, হরি সিং, ডা. মাহমুদ , মি. হোয়াইট, মি. ব্যানার্জী ইত্যাদি। তবে এম. এন. রয় নামেই মানবেন্দ্রনাথ রায় সমধিক পরিচিতি। তিনি ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই অক্টোবর সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। তিনি সমাজতাত্তিকদের কাছে একজন ‘র্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট’ হিসেবে পরিচিত।