“জারজ!" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ “ডাক্তার হ্যারি, পড়েছে লন্ডনের এক বিখ্যাত মেডিক্যাল স্কুলে। সে জানতে চেয়েছিল। আমার কি হয়েছে? আমার মুখ এতাে মলিন কেন? আমি ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে তাকে বােঝালাম- আই ওয়াস রেপড মাের দেন হান্ড্রেড টাইমস! হ্যারি আমার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে ছিল। কিছুক্ষণ। সেই দৃষ্টিতে মহৎ সহানুভূতি আর প্রবল ভালবাসা উপচে পড়ছিল। সে কেবল বলেছিল- আই হ্যাভ নেভার ট্রিটেড অ্যান ওম্যান হু হ্যাড বিন রেপড় মাের দ্যান হান্ড্রেড টাইমস!” হ্যা, এই গল্প মুক্তিযুদ্ধের পরের কয়েক লক্ষ মেয়ের। মাঝের একজনের, যাদের পক্ষে এদেশের সমাজ কখনাে ছিলাে না। তিথি নামের সেই মেয়েটি ভাগ্যচক্রে ঘুরে এসে পড়ে ইউরােপে। ইউরােপের প্রধান প্রধান শহর, বন্দর, জাদুঘর, প্রাসাদ, বিখ্যাত যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়েও সে আবিষ্কার করে এই পৃথিবীতে যুদ্ধ মূলত একইরকম, কেবল যুদ্ধের মােড়ক আলাদা! এই গল্প একজন যুদ্ধশিশুর, যে শিশুটি জীবন শুরুর। মাঝপথ যাবার আগেই জানতে পারে পৃথিবীতে সে কতােটা অপ্রত্যাশিত। ইউরােপের এতাে চমৎকার সব তরুণীদের মনে জায়গা করে নিতে হলেও একটি জন্মপরিচয় যে কতােটা মুখ্য তা সে টের পায় মূলত অটিস্টিক একটি শিশুর বাবা হবার পরে। যখন স্ত্রী’র মুখে শুনতে হয়- ইউ আর আ রুটলেস ক্রিয়েচার! এই গল্পকুসুম নামের এক পল্লীবালার, যার জন্ম। হয়েছিল নিঝুমপুর নামের এক পতিতাপল্লীর ঘুপচি অন্ধকার ঘরে। এই গল্প নীলা নামের সেই মেয়েটির, যে প্রতিদিন অবসন্ন শরীরে বহু ধর্ষণ নির্যাতন সয়েও ফাইভস্টার হােটেলের সুসজ্জিত অন্ধকার কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নির্দ্বিধায়। জীবনকে বয়ে নিয়ে যেতে পারে কেবল জীবনের শেষপ্রান্তটি দেখার দুর্বার অদম্য। আকাঙ্ক্ষায়। এই উপন্যাস মূলত সেইসব নিষিদ্ধ মানুষদের, যাদের সমাজ একটি বিশেষ্য নামক সর্বনামে ডাকে- জারজ! আসুন পাঠক, এবার আমরা পড়তে শুরু করি সেইসব নিষিদ্ধ মানুষদের জীবনের নিষিদ্ধ অধ্যায়গুলাে।