ঢাকার একটি দৈনিকে ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা' নামে আমার যে ধারাবাহিক লেখাটি বেরিয়েছে, তার বেশ কয়েকটি অধ্যায় মােহাম্মদ নাসিরউদ্দিন ও সওগাত যুগ নিয়ে লেখা। ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’-র প্রথম অংশ নিয়ে প্রথম খন্ড বই বেরিয়ে গেছে; দ্বিতীয় খন্ডে মােহাম্মদ নাসিরউদ্দিন সম্পর্কিত অধ্যায়গুলাে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু বন্ধুবান্ধবেরা-বিশেষ করে আমার অনুজ কবি আসাদ চৌধুরী পরামর্শ দিলেন, সওগাত যুগ ও মােহাম্মদ নাসিরউদ্দিন নামে এই লেখাগুলােকে একটি আলাদা বই হিসেবে বের করলে ভালাে হয়। এই পরামর্শ মেনে নিয়েছি। আমি গবেষক নই। সওগাত যুগ ও মােহাম্মদ নাসিরউদ্দিন কোনাে গবেষণা গ্রন্থ নয়। এটাকে স্মৃতি-চিত্র হিসেবে গ্রহণ করলেই পাঠকেরা আমার প্রতি সুবিচার করবেন। মােহাম্মদ নাসিরউদ্দিনকে যতটা কাছে থেকে দেখেছি এবং তার সওগাত পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে কিছুকাল যুক্ত থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তার বর্ণনা এই বইটি। যেভাবে মনে এসেছে সেভাবে লিখে গেছি। বর্তমানে বা ভবিষ্যতের কোনাে গবেষক যদি আমার এই স্মৃতিচারণে তাদের গবেষণার কোনাে সূত্র খুঁজে পান, তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করবাে। সওগাত যুগ এবং মােহাম্মদ নাসিরউদ্দিনকে নিয়ে আমাদের সাহিত্য গবেষকদের সত্য সত্যই গবেষণায় ব্রতী হওয়া উচিৎ। কলকাতায় ভারতী, সবুজপত্র ও কল্লোল যুগের মতাে ঢাকায় অগত্যা ও সওগাত যুগের ইতিহাসও খুবই সমৃদ্ধ। এই ইতিহাস হারিয়ে গেলে আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির দারুণ ক্ষতি হবে।‘সওগাত যুগ ও মােহাম্মদ নাসিরউদ্দিন’ যদি সাধারণ পাঠকদের ভালাে লাগে, তাহলেই আমি খুশি হব।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। জন্ম : ১২ ডিসেম্বর, উলানিয়া, বরিশাল। শিক্ষা : স্নাতকোত্তর (বাংলা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পেশা : সাংবাদিকতা। সম্পাদক, নতুন দিন, লন্ডন। পুরস্কার : বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৭), একুশে পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার ও বঙ্গবন্ধু পুরস্কার।