"শত মনীষী" বই সম্পর্কে কিছুকথা: মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরাজীব করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। পৃথিবীতে যত ধর্মগ্রন্থ আছে, সব ধর্মগ্রন্থেই এ কথার উল্লেখ রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে মানুষের পাশাপাশি অনেক পশুপাখি, জন্তু-জানােয়ার সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু কোনাে কিছুকেই মানুষের মতাে জ্ঞানবুদ্ধি, মেধাশক্তি দিয়ে প্রেরণ করেননি। যুগে যুগে বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিবর্গ তাদের মেধা-জ্ঞান দিয়ে এ কথার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তাঁদের জীবনে এবং মানব সভ্যতার বিকাশে। বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার সাথে যুদ্ধ করে, বিভিন্ন অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে এই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিগণ পৃথিবীতে নিজেদের প্রাতঃস্মরণীয় করে গেছেন। নিজের কল্যাণের জন্য নয়, এই পৃথিবীর কল্যাণের জন্য যারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে আমরণ কাজ করে গেছেন স্বভাবতই তারা পৃথিবীর সেরা মানুষ। আমাদের পৃথিবীর কল্যাণের জন্য যারা কাজ করে গেছেন এমন মহামানবদের সংখ্যার মাপকাঠির সীমাবদ্ধতায় উপস্থাপন করা শুধু দুরূহই নয়- অসম্ভবও বটে। আর যদি কাউকে বলা হয় যে এই শ্রেষ্ঠ-মহামানবদের ভিতর থেকে ১০০ জনকে বাছাই কর- তবে সেটা দুঃসাহসিক কাজই হবে। এই বইটির রচয়িতা মাইকেল এইচ হার্ট এই দুঃসাধ্য কাজটিই করেছেন। মানুষের কল্যাণে নিবেদিত শত শত মনীষীর মাঝ থেকে হার্ট বেছে নিয়েছেন শত মনীষীকে। মাইকেল এইচ হার্ট বলেছেন, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহামানবদের মধ্যে এই ১০০ জন মনীষীই শ্রেষ্ঠ। এই বইতে আমি যেমন মহৎ হৃদয়ের মহামানবদের স্থান দিয়েছি অপরদিকে ইতিহাসের উল্লেখযােগ্য ঘৃণ্য খল চরিত্রের অধিকারী অর্থাৎ যারা পৃথিবীকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত করেছিলেন তাদেরও বাদ দেইনি। শত শত কোটি মানুষের এই পৃথিবীতে মহামানবদের গণনা করতে গেলে গড়ে দশলাখে একজন মনীষীর সন্ধান এখনাে পাওয়া যাবে। এই হিসেবে তালিকা করতে গেলে পৃথিবীর জনসংখ্যার হিসেবে মহামনীষীদের সংখ্যা অর্ধলক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। তাই এখানে বলা যায় মানবসভ্যতার ইতিহাসে অনেক মানুষই অবদান রেখেছেন। এই অবদান রাখা মানুষদের সবচেয়ে বেশি যাঁর অবদান রেখেছেন লেখক তাঁদের মধ্যে থেকে ১০০ জন মহামানবকে বাছাই করে এই পুস্তকে তুলে ধরেছেন। মহামানবের ভিতর থেকে মাত্র ১০০ জনকে বাছাই করা দুঃসাধ্য কাজই বটে। এই ১০০ জনের পাশাপাশি আরও অনেক মহামনীষী রয়েছেন- যাদের পরিচয় এই পুস্তকে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। লেখক মাইকেল এইচ. হার্ট এই পুস্তকে যে ১০০ জন মহামনীষীকে স্থান দিয়েছেন যারা শুধু বিখ্যাতই নন- তারা সমাজ ও সভ্যজীবনে তাদের সু ও কু দুরকম প্রভাব রেখেছেন। পাঠকবৃন্দ একটু লক্ষ করলেই দেখতে পাবেন এই পুস্তকে বিশ্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহম্মদ (সা.) হযরত ঈসা (আ.) গৌতম বুদ্ধের মতাে ধর্ম প্রচারকদের সাথে পৃথিবীর কলঙ্ক হিটলার চেঙ্গিস খানের মতাে লােকও স্থান পেয়েছে। এতে আরাে রয়েছেন মানব সমাজকে মানবতার বাণী প্রচারকারী চৈতন্যদেব, সম্রাট অশােকের মতাে লােক। এই পৃথিবীতে শিক্ষার বাণী ছড়াতে এসেছেন সক্রেটিস, প্লেটো ও এ্যারিস্টটল- এঁরাও রয়েছেন এই তালিকাতে। ধর্ম, শিক্ষা ও জ্ঞান-এর পাশাপাশি মানব সভ্যতার কল্যাণে যারা রয়েছেন অগ্রগণ্য সে বিশ্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদেরকে পেছনে রাখা হয়নি। বিশ্বের সেরা সেরা বিজ্ঞানীদের নামও রয়েছে এই তালিকায়। যাদের আবিষ্কারে মানব সভ্যতা উদ্ভাসিত হয়েছে। জনগণের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে যারা নিজের প্রাণ উৎসর্গ করে গিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- আব্রাহাম লিঙ্কনসহ আরাে অনেকে।