“বাংলা উপন্যাসের ধারা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ মানুষের আপিস-আদালতে, কল-কারখানায় বা রাজনৈতিক কর্মের ক্ষেত্রে সাহিত্য কোনাে নির্দেশ দিতে পারে না। সাহিত্য অপ্রয়ােজনীয় আরও গভীরতর প্রয়ােজন সিদ্ধির জন্য। সাহিত্য মানুষের মস্ত অন্তলোকের প্রসারতাকে বাড়িয়ে দেয়, তার আবেগ, অনুভূতিসমূহকে সূক্ষ্মতর তীব্রতর এবং অধিকতর গ্রহণক্ষম করে দেয়; মানুষের অন্তরে। জীবনকে জগৎকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলিয়ে দেয়, নতুনতর সত্য গ্রহণের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। সাহিত্য আসলে মানুষের অন্তৰ্জীবন সম্পর্কে লেখকের সমগ্র সত্তা দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে-বুদ্ধির হস্তক্ষেপ। ব্যতীত-অনুভূত সত্যের প্রতিফলন। এর আবেদন পাঠকের আবেগ-অনুভূতির জগতে। কিন্তু যেহেতু লেখকের আর পাঠকের অনুভব ক্ষমতার তফাৎ । স্বাভাবিক, সেহেতু সাহিত্যের সত্যকে বুদ্ধিগ্রাহ্য ভাষায় অনুবাদ করে সমালােচক পাঠকের অনুভব । ক্ষমতাকে সাহায্য করেন। অনুভূতি আর বুদ্ধি দুই পরস্পর পরিপূরক বৃত্তি; কাজেই এ দুয়ের মধ্যে যােগাযােগের সেতু সৃষ্টি করে সমালােচক লেখককেও সাহায্য করেন। লেখকের অনুভূতি কখন সত্যের মার্গ ছেড়ে সস্তা উপভােগ্যতা মূল্য আয়ত্ত করার দিকে যাচ্ছে সমালােচক তাও দেখিয়ে দেন।