"অপরিণত পাপ" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ শাদা চোখে ‘অপরিণত পাপ’ প্রেম বা ভালােবাসার একটি উপন্যাস হতে পারে; কিন্তু এর অন্তর্নিহিত বেদনার প্রতীকায়ন অন্য কোথাও, অন্য কোনাে স্বরে। যে-কারণে এই কৃত্য ললিটা, লেডি চ্যার্টলিজ লাভার’ বা সাম্প্রতিক সময়ের 'লাভ স্টোরি’ ঘরনার নয়। ব্যাপ্তি অনেক এবং এর বাহিত বেদনা আসলে দেশবিভাগের দগ্ধ ও তাড়িত স্মৃতির। উপন্যাসের নায়ক উত্তম-পুরুষও তাই অস্থির ও অনিশ্চয়তায় কাতর একজন মানুষ, কোথাও সে থিতু হতে পারে না। ভেও ভালােবাসায় তার মন তুষ্ট নয় কখনাে, ফলে কখনাে কখলাে তা চঞ্চল প্রজাপতি কিংবা ভ্রমর হয়ে ওঠে। এই অস্থির মানুষের অবচেতমে ৮ ক্রিয়াশীল ছিটপুকুর নামের একটি গ্রাম। নায়কের জন্মভিটা; অথচ ওই গ্রামকে যে চেনে না, দেখেওনি। স্বপ্নে তবু জাগর থাকে কী? নইলে ছিটপুকুরের মমতাই সে খুঁজে ফেরে কেন নারীর কাছে, অবচেতন ও চেতন-মনের? পায় না। ফলে অরক্ষিত ও সুন্দরের মহিমায় ওই ফেলে আসা ছিটপুকুর কারাে না কারাে ওপর আরােপিত হতে চায়। মেলে না। বিয়েটা হয়ে গেল, কিন্তু টিকল না। হুরী ও শিরিনসহ বহু নারী এলাে জীবনে, তবে গাঢ় হয়ে উঠল না কোনাে রঙ। বরং শিরিনের সূত্র ধরে যে বালিকার সঙ্গে পরিচয়, হঠাৎ ঝলকে সে-ই যেন হয়ে উঠল ছিটপুকুর: যে- গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে এসেছিল সবাই। ইতু দখল করে নিল মান-জগৎ; কিন্তু অনাঘ্রাত ও অরক্ষিত ছিটপুকুর-বালিকার আঙুল চিরদিনের জন্য আকড়ে ধরতে তার বিবেক সায় দিল না। প্রত্যাখ্যাত ইতু গণধর্ষনের শিকার হলাে। তারপর? শিরিনকে খুন করার ইচ্ছে হলাে, আমার ক্ষমারও সুযােগ এলাে, কবিতা এলাে জীবনে এক সময়। জীবনের সবটাই স্বার্থ থাকে না, চাওয়া ও পাওয়ায় সমান সুখ পায় হয়তাে অনেকে। এ রকম ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস আমাদের সাহিত্যে এখনাে হাতে গােনা, এ কৃতিত্ব অবশ্য শেখ আবদুল হাকিমের একান্ত ও নিজই থাকবে দীর্ঘদিন। - আবু সাইদ জুবেরী
পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে জন্ম। চার বছর বয়সে বাংলাদেশে আসেন। পেশা : লেখালেখি অসংখ্য গোয়েন্দা উপন্যাস লিখেছেন ও অনুবাদ করেছেন। কর্মজীবনের প্রায় পুরোটাই সেবা প্রকাশনীতে লেখালেখির কাজে ব্যয় করেছেন। দীর্ঘ বহুবছর।