সর্বপ্রথম মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এ জন্য যে, তিনি আমাদেরকে এ পুস্তক লিখার জ্ঞান ও প্রেরণা দিয়েছেন। সাধারণভাবে, যে কোন ভাষায় কিছু রচনা করতে সর্বপ্রথম ঐ ভাষায় ব্যবহৃত শব্দসমূহ অর্থসহ জানা প্রয়ােজন। এরপর উক্তি, বক্তব্যসহ বাক্য গঠনের কাঠামাে জানতে হয়। পরিশেষে, রচনার কাঠামাে সম্পর্কে অভিহিত হওয়ার কৌশল আয়ত্ব করতে হয়। সর্বোপরি, ভালাে রচনা লেখার জন্য রচয়িতাকে কিছুটা শিল্পীমনাও হতে হয়। এ ভাষার পাঠক ও রচয়িতা উভয়ই হলাে মানব সম্প্রদায়, যেখানে একটি রচনা দ্বারা মানুষ তাদের ভাব, চাহিদা ও মতামতের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। অপরদিকে, সি-প্রােগ্রামিংও হলাে এমন একটি ভাষা, যার মাধ্যমে মানুষ (প্রােগ্রামার) কম্পিউটার বা এ জাতীয় গণকযন্ত্রসমূহের সাথে প্রয়ােজন অনুসারে ভাবের আদান প্রদান করে থাকে। এখানে একজন প্রােগ্রামার হয় অনেকটা দোভাষীর মতাে। সে যাই হােক, আমাদের চেষ্টা হলাে কি ভাবে | সি-প্রােগ্রামের ভাষা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেয়া যায় যাতে আজকের বিজ্ঞান ও আবিষ্কারের বিষ্ময়কর। উন্নতির সাথে মানব সমাজের সিংহভাগ তাল মিলিয়ে চলতে পারেন। সি-ভাষাটি যান্ত্রিক ভাষা হলেও অন্যান্য ভাষার ন্যায় এর নিজস্ব ব্যকরণ রয়েছে। তাই, শেষ অধ্যায় ব্যতিত প্রতিটি অধ্যায়ে উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা প্রদানের চেষ্ঠা করা হয়েছে। এ পুস্তকটি হলাে সি, প্রােগ্রামিংয়ের প্রথম পাঠ। দ্বিতীয় খণ্ডে সি-প্রােগ্রামিংয়ের আরাে অনেক কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলােচনা করা হবে। যারা সি প্রােগ্রাম আয়ত্ব করতে আগ্রহী, তাঁরা যেন প্রথম খণ্ডের সব বিষয়গুলাে নিয়মিত অনুশীলন করেন। এর পাশাপাশি প্রচলিত বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় লিখিত অনেক উন্নতমানের সি প্রােগ্রামিংয়ের পুস্তক পাওয়া যায়, সে গুলােও যেন অধ্যয়ণ ও অনুশীলন করেন। আমাদের শ্রদ্ধেয় প্রকাশক জনাব তােফাজ্জল হােসেন ভাই ১লা ফেব্রুয়ারীতে বলেছিলেন যে, তিনি একটা সি প্রােগ্রামের পুস্তক ২১ শে বই মেলায় প্রকাশ করতে আগ্রহী। সে জন্য আমরা পুস্তকটি রচনা করার জন্য খুব একটা বেশী সময় হাতে পাই নি। তাঁর বিনয়ী ব্যবহারের কাছে হার মেনে মােট তিন সপ্তাহের কম সময়ে পুস্তকটি রচনা করতে হলাে। সে জন্য এতে অনেক ধরণের ভুল-ত্রুটি রয়ে যেতে পারে, সে জন্য আমরা বিণীতভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। সহৃদয় পাঠকসমাজ ও প্রােগ্রামিংয়ের গুণীজন যদি আমাদের পুস্তকটির উন্নয়নের জন্য উপদেশ দেন, তবে তা সাদরে বরণ করে নেয়া হবে এবং দ্বিতীয় সংস্করণটিতে তা সংযােজন করা হবে। জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান আহরণ করা প্রতিটি মানুষের জন্য বাঞ্চনীয়, তাই আমরা যে কোন ব্যক্তি নিজের ও সমাজের কল্যাণের জন্য যে কোন ধরণের জ্ঞান অর্জন করতে পারি। সি-প্রােগ্রামিংয়ের ভাষা যে শুধু বিজ্ঞানী, প্রােগ্রামার এবং প্রকৌশলীকেই জানতে হবে এমন কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। এ ভাষা জানার অধিকার সবারই। সে জন্য এ পুস্তকটি রচনা করে সর্বস্তরে যাতে ভাষাটি সহজে প্রচার ও প্রসার পায় তার চেষ্ঠা করা হয়েছে। যদিও বিভিন্ন প্রোগ্রামিং সাধারণতঃ ইংরেজী ভাষার বর্ণ ও শব্দ দ্বারা রচনা করা হয় সে কারণে আমরা সাধারণ বাংলা ভাষাভাষীগণ যেন সহজে ঐ প্রােগ্রামিংয়ের ইংরেজী শব্দগুলােকে অনুধাবনের জন্য ব্যবস্থাস্বরূপ বাংলা ভাষায় কিছু পরিভাষা এ পুস্তকে আনা হয়েছে। আমাদের সীমাবদ্ধ জ্ঞানের আলােকে রচিত পুস্তকটি যদি কোন পাঠকের সি-প্রােগ্রামিং শেখার জন্য সহায়ক হয়, তবে সেটা হবে আমাদের এ ক্ষুদে প্রয়াসের চরম স্বার্থকতা।