"অনভ্যাসের দিনে" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: এই তীব্র তরুণ, অলাত এহসান, যার মুখের ভাষায় এখনাে ঢাকার নবাবগঞ্জী টান অবিকল, বয়স মাত্র বছর তিরিশ, তাঁর গলের ভিতর দিয়ে আমাকে এত বিস্মিত ও বিমূঢ় করে রেখেছেন যে, বাংলা-গল্পে আরেকটি সবল-আগমনধ্বনি টের পাচ্ছিঃ এবং তিনি যেন তাঁর এই সশ্রম-সাধনা অব্যাহত রাখেন সেজন্য অগ্রিম অভিনন্দন জানিয়ে রাখছি। অলাত তাঁর ব্যঙ্গচাবুকে আমাদের তাবৎ কপটতা, কূপমণ্ডুকতা, আত্মরতি ও আত্মপ্রতারণা আর সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ইতরামােকে কষে চাবকেছেন খুঁচিয়ে রক্ত বার করে দিয়েছেন কিন্তু আমাদের আত্মপক্ষ-সমর্থনের কোনাে সহযােগ রাখেননি। কারণ, তিনি যে কেবল এই শ্রেণীর অংশ তা-ই নয়, বরং শ্ৰেণীটির ভিতর-বাহির, তল ও উপর, উঁচুত্ব-নীচুত্ব শেকড়বাকড়সমেত পাঠ করতে চেয়েছেন। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাষ্ট্র-রাজনীতির খেলাধুলা, ক্ষমতার কেন্দ্র-প্রান্ত সম্পর্ক ব্যক্তি ও সমাজের অর্থ-ভােগ-বাজারের দাস হয়ে ওঠা, নরনারী-দাম্পত্য-যৌন- সম্পর্কের জটিল মনােবাস্তব, ব্যক্তিমানুষের স্বপ্নকল্পনা, বাসনা-বিকৃতি, প্রতিরােধস্পৃহা অক্ষমতা আর হাস্যকরুণ যাপিত জীবন তুলে আনার আন্তরিক ও অনুসন্ধানী প্রয়াস। বিষয়ের সঙ্গে ভাষার, ভাষার সঙ্গে দেখা ও অনুভবের নিজস্বতা আর সবকিছুকে আত্মরস ও রসায়নে জারিত করে পরিবেশন করার দক্ষতা দেখে মনে হয় অলাত এহসান সাহিত্যের রান্নাবান্না বেশ প্রস্তুতি নিয়েই শিখছেন। আসুন পাঠক, একটু চেখেই দেখা যাক...