"স্বাধীনতার প্রথম দশকে বাংলাদেশ" বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ দৈনিক বাংলার সহযােগী প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও অর্থনৈতিক কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে। সাপ্তাহিক বিচিত্রাকে তীব্র প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। এ অবস্থা বিচিত্রার কর্মীদের মনােবলকে দুর্বল করতে পারেনি, কারণ তারা ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তরাধিকারী এবং সাংবাদিকতার প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই বিশ্বাস ও সাহসে ভর করেই বিচিত্রায় কর্মরত সাংবাদিকদের কেউ বাকশাল-এ যােগদান করেননি। সম্পাদক হিসেবে শামসুর রাহমানও এই দলে ছিলেন। আজকের প্রজন্ম, বিশেষ করে বর্তমানের তরুণ সাংবাদিকরা উপলব্ধি করতে পারবেন না বাকশাল সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের কর্মের অবস্থানকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল। বাকশাল ব্যবস্থার কারণেই সাংবাদিকদের অনেকেই কাস্টমস কর্মকর্তা ও একজন ফল বিক্রেতাও হয়েছিলেন। বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য, সাহসী লেখা, তরুণ প্রজন্মের চিন্তার প্রতিফলন বিচিত্রাকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। তকালীন সময়ে সমাজের অনিয়ম, অসঙ্গতি সবই প্রকাশিত হতে থাকে বিচিত্রার পাতায়। ৫০ পয়সার বিনিময়ে প্রতি সপ্তাহে অন্যত্র প্রকাশ অযােগ্য বিষয়বস্তুকে প্রচ্ছদকাহিনীতে তুলে নিয়ে আসে বিচিত্রা। বিচিত্রার পাতায়ই প্রথম প্রকাশিত হয় সেগুনবাগিচায় পিটিয়ে মেরে ফেলা যুবক গােলাম ফারুক পিনুর ছবি।
বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পদার্থবিদ্যা ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী মাহফুজ উল্লাহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃস্থানীয় কর্মী হিসেবে ঊনসত্তরের ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এই আন্দোলনের বিভিন্ন রাজনৈতিক আলোচনা পরিচালনায় এবং প্রচারপত্র রচনায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে বাংলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্ররাজনীতির কারণে আইয়ুবী সামরিক শাসনামলে তাকে ঢাকা কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ছাত্রাবস্থায়ই মাহফুজ উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রার ১৯৭২ সালে জন্মলগ্ন থেকেই এ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মাঝে চীন গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপদূতাবাসে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন, রেডিও ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। মাহফুজ উল্লাহ আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একজন সক্রিয় পরিবেশবিদ। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম পরিবেশ সাংবাদিকতা শুরু করেন। বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা তার বইয়ের সংখ্যা ৫০-এর অধিক। এবং এসবের অধিকাংশই পৃথিবীর বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে সংরক্ষিত আছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরলোকগত কমরেড মুজাফফর আহমদের দৌহিত্র। তাঁর অগ্রজ অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন গ্র“প) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর পিতা মরহুম শিক্ষাবিদ হাবীব উল্লাহ এবং মাতা মরহুমা ফয়জুননিসা বেগম। তিনি বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক। Mahfuz Ullah was active in the left student movement of the sixties and took part in Bangladesh’s War of Independence. With university degrees in Physics and Journalism & Mass Communication, he took up journalism and worked for country’s major newspapers for more than three decades. He has pioneered environmental journalism in Bangladesh. He has written about 35 books that include: Press Under Mujib Regime, Mass Upsurge of 69, Purba Pakistan Chhatra Union: Gouraber Dinlipi (a 1450-page history of the country’s left student movement), ULFA and the Insurgency in Assam, Environmental Politics in Bangladesh, Intellectual Property Rights and Bangladesh. His work on education, Our School, was published and globally distributed by UNICEF. He has also edited several internationally important publications. He regularly appears on TV as a commentator on socio-political and environmental issues. As an adjunct faculty, he teaches at Daffodil International University (DIU), Dhaka. Mahfuz Ullah founded and heads the Centre for Sustainable Development (CFSD) and was the first Bangladeshi to be elected, in 2008 for four years, a Member of the Governing Council of the International Union for Conservation of Nature (IUCN).