সাঁঝ ঘনিয়ে এলে পড়ন্ত বিকেলের উড়ন্ত চিলগুলো নিজ নিজ গন্তব্যের পথে। বিলের সাদা বকগুলো সারি বেঁধে কালো গাঁয়ের চারদিকে ঘুরপাক খায়। আঁধার ঘনিয়ে এলে শালিকের সঙ্গে বকগুলোও জায়গা করে নেয় গাঁয়ের বৃক্ষঘেরা বাড়িগুলোতে। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে উপভোগ করে পাখির কলরব। বক- শালিকের কিচিরমিচির শব্দে নীরব নিঃস্তব্ধ সন্ধ্যা মুখরিত হয়ে ওঠে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে যখন রাত আসে তখন আবার চারদিক নীরব হয়ে যায়। মাঝে মাঝে একদুইটা বক ডেকে ওঠে। বাড়ির বাইরে থেকে ছেলেমেয়েদের পড়ার আওয়াজ আসে। শীতের রাতে শিয়ালগুলো মাঝেমধ্যে ছেলেমেয়েদের পড়ায় ব্যাঘাত ঘটায়। কচি খোকার বুকে কাঁপন তোলে। মায়ের কোলের আরও গভীরে লুকিয়ে থাকে খুকি জোছনার আলো যখন কুয়াশার ওপর পড়ে তখন মনে হয় যেন গাঁয়ের কিষানি খড়কুটো দিয়ে রান্নায় ব্যস্ত। কুয়াশাগুলো এমনভাবে চিকচিক করে যেন পড়ন্ত বিকেলের সাগরের ওপর সূর্যকিরণ পড়ছে। সবকিছু মিলিয়ে এমন এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয় যেন রবীন্দ্রসংগীত সন্ধ্যা চলেছে। এই আনন্দ উপভোগ করার থেকে আনন্দ দুনিয়ার আর কোনও আনন্দে নেই। একেক করে সন্ধ্যা যায় রাত আসে দিনের শেষে আবার আবার সন্ধ্যা আসে। ঠিক যেন একটা স্বপ্নের সমাধির ওপর আরেকটা স্বপ্নের জন্ম।