কিশোরসমগ্র -১ম খণ্ড, কিশোরসমগ্র -২য় খণ্ড, কিশোরসমগ্র -৩য় খণ্ড ‘কিশোরসমগ্র -১ম খণ্ড’ বইটিতে লেখা ফ্ল্যাপের কথাঃ অসামান্য কথক আসাদ চৌধুরী। আবহমান বাংলার চিরন্তন হাসিকান্না, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-রোমাঞ্চের সব গল্প তিনি যেমন বলতে পারেন, একই ঢঙে ও ধাচে, লাবণ্য সৌরভ মিশিয়ে লিখতেও পারঙ্গম। বয়স আশি ছুঁইছুই এখনো আশ্চর্য সতেজ, প্রাণময়, তারুণ্যে উদ্দীপিত । চারণ কবির মতো ঘুরে বেড়ান দেশের নানা প্রান্তে। ব্যাপক দেশভ্রমণও তাঁর শিশু-কিশোর রচনাসম্ভারে উচ্চতা ও নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ময়মুরুব্বির মুখেমুখে চলে আসা পরন কথার নকশি জমিন স্বাদু বয়নে তিনি পাঠক সমীপে হাজির করেন। সুললিত ভাষাসম্রাট কাহিনির রহস্যময় নাটকীয়তার আনন্দ বিহ্বলতা পাঠকমন ছুঁয়ে যায়। ছড়ার বুননে, সৃজনে ঐতিহ্যের শৈল্পিক নবায়ন দেখতে পাই। বিদেশি সাহিত্যের রত্নভান্ডার থেকেও কবি আসাদ চৌধুরী আহরণ করেন মূল্যবান, শিল্পোত্তীর্ণ রচনাসমূহ। পরম। যত্নে নদীর স্রোতের মতো স্বতঃস্ফুর্ত, সহজ ভাষায় তিনি বিদেশি রূপকথা, বিজ্ঞান, জীবনী, অভিযানের গল্পগাছার পুনর্কথন উপহার দেন। নিঃসন্দেহে অতি মহার্ঘ ও নান্দনিক এইসব সংযোজন। হাসান হাফিজ প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ
আসাদ চৌধুরী। জন্ম ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩, উলানিয়া, বরিশাল। বাংলাদেশের কবিতায় ‘তবক দেওয়া পান’ নিয়ে আসাদ চৌধুরীর আর্বিভাব। স্বল্পবাক, ঋজু এবং বক্তব্য প্রকাশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিকীর্ণ এই কবি, বাংলাদেশের ষাট দশকের কবিতায় সংযোজন করেছেন নতুন মাত্রা। এ মাত্রা লক্ষণীয় তাঁর ভাষা ও প্রকরণে; যেখানে তিনি ঐতিহ্য, শে¬ষ, প্রেম, সৌন্দর্য ও মরমি চেতনার সংমিশ্রণ ঘটান। আসাদ চৌধুরী, তাঁর কবিতায় মরমি-মানসিকতা নিয়ে বাঙালি জাতির ঐতিহ্যকে অনুসন্ধান করেছেন। আর তাই ছন্দে মেজাজে এবং বক্তব্যে তিনি স্বতন্ত্র হয়ে ওঠেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রায় এক যুগ সময়। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে এবং জয়বাংলা পত্রিকায় কাজ করেন। জার্মানির কোলনের ভয়েস অব জার্মানির বাংলা বিভাগের বিভাগীয় সম্পাদক ছিলেন (১৯৮৫-৮৮)। বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন প্রায় ছাব্বিশ বছর। আসাদ চৌধুরী কবিতা আবৃত্তি করেন। বেতার টিভিতে উপস্থাপনা করেন। প্রচুর নাটক সিনেমা দেখেন। ভ্রমণ তার নেশা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোতেই তার আনন্দ। সব বয়সী পাঠকের জন্য কবিতা, প্রবন্ধ লেখার পাশাপাশি বিশেষভাবে ছোটদের জন্য লিখেছেন ছড়া-কবিতা, রূপকথার গল্প, অনুবাদ এবং জীবনীগ্রন্থও। সাহিত্যকর্মে অবদানের জন্য পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৭), অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২), একুশে পদক (২০১৩) সহ অসংখ্য পুরস্কার। সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণচঞ্চল চির তারুণ্যের প্রতীক আসাদ চৌধুরী ছোট বড় সকলেরই প্রিয় মানুুষ।