"বিনিন্দ্র রজনীর সাধক যারা" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: মুসলিম উম্মাহ যতদিন রাতের নির্জনতায় মহান প্রভুর সম্মুখে ইবাদত ও রোনাজারিতে অভ্যস্ত ছিল এবং উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার গুণে ভূষিত ছিল, ততদিন পৃথিবীর বুকে তাদের অপ্রতিহত প্রভাব বিরাজমান ছিল। হাদিসের ভাষ্যমতে তারা ছিলেন ‘রাতে তাহাজ্জুদগোজার ও দিনে ঘোরসওয়ার’। গাফেল লোকেরা যখন ঘুমের ঘোরে অচেতন পড়ে থাকে, তারা তখন আল্লাহর সামনে রোনাজারি ও কান্নাকাটি করে। এই আল্লাহওয়ালাদের উদ্দেশ্য ছিল, পৃথিবীতে যখন আল্লাহর রহমত নেমে আসে, দোয়া কবুল হয়, গভীর রাতের সেই মূল্যবান সময় কাজে লাগিয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা। কিন্তু আজ মুসলিম উম্মাহ আপন প্রভুর ইবাদত না করে শত্রুদের কাছে কাকুতি-মিনতি করে, প্রবৃত্তির উদ্দাম স্রোতে ভেসে চলে। অধিকাংশের অবস্থা তো হলো, দুনিয়ার ব্যাপারে খুব ভালো জানাশোনা; কিন্তু আখেরাতের ব্যাপারে একেবারেই জাহেল। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত এমন প্রত্যেক অসৎ চরিত্রের অধিকারী, বদমেজাজি এবং অহংকারীকে অপছন্দ করেন, যে দিনের বেলায় বাজারে হৈ-হুল্লোড় করে ঘোরাফেরা করে আর রাতে নিষ্প্রাণ লাশের মতো ঘুমিয়ে থাকে। এরপর দিনে আবার গাধার মতো ঘুরে বেড়ায়। দুনিয়াবি বিষয়ে খুব পটু, তবে আখেরাতের ব্যাপারে নাদান-মূর্খ।’ [ইবনে হিব্বান, ১৯৭৫] এই গ্রন্থে এমন মহা মনীষীদের জীবনচরিত উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যাদের নিজ মহব্বত ও মারেফাতের দৌলতে সম্মানিত করেছেন। রাতের নিভৃত আঁধারে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ইবাদতে কাটিয়ে দিতেন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে হেদায়াতের মশাল বানিয়েছেন এবং ইবাদত ও রিয়াজতের প্রতি তাদের আগ্রহী করেছেন, আপন ভালোবাসার চাদর তাদের পরিয়ে দিয়েছেন এবং দুনিয়ার জীবনেই তাদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞ লেখক শায়খ আহমাদ মুস্তফা কাসেম তাহতাবী হাফিযাহুল্লাহ চমৎকার বিন্যাসকাঠামোর সাথে তুলে ধরেছেন ‘বিনিদ্র সাধনা’র গুরুত্ব ও ফযিলত এবং ফুটিয়ে তুলেছেন সাহাবা, তাবেয়িন, তাবে-তাবেয়িন, আইম্মায়ে মুজতাহিদিন এবং অন্যান্য ‘বিনিদ্র রজনীর সাধকদে’র ইবাদতের প্রোজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি।