“এই সংগ্রামে আমিও আদিবাসী বীরাঙ্গনা” বইয়ের প্রতম ফ্ল্যাপ এর লেখা: ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল প্রকৃতই একটি জনযুদ্ধ। কারণ এতে এ দেশের নারী-পুরুষ সমানভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দেশ মাতৃকার সম্মান রক্ষার্থে, দেশের মান রাখতে গিয়ে পাকিস্তানি হানাদার, রাজকার, আল-বদর, আল-শামসের হাতে বাঙালি নারীদের এক উল্লেখযােগ্য অংশ নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছিল, হারিয়েছিল তাঁদের মূল্যবান সম্রম। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই চরম জনম দুঃখী নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ আখ্যা দিয়ে সমাজে যথাযথ পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সমাজ কি তাদের গ্রহণ করেছিল? ধারাবাহিক কয়েকটি খণ্ডের পর এবার আদিবাসী বীরাঙ্গনাদের জীবন-যাপন ও তাদের করুণ ইতিহাস। আলােচিত হয়েছে এই সংগ্রামে আমিও আদিবাসী বীরাঙ্গনা’ নামক-এ গ্রন্থে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে জানতে হলে জানতে হবে বীরাঙ্গনাদের ইতিহাসও। তাদেরকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পূর্ণ হবে না। এ গ্রন্থ পাঠে বীরাঙ্গনাদের দুঃসহ পাশবিক নির্যাতন জানার পাশাপাশি তাঁদের অবস্থানকে নতুন আলােয় উদ্ভাসিত করতে প্রয়ােজনীয় কার্যকর উদ্যোগ নিতে সহায়ক হবে।
সুরমা জাহিদ ছােটবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। শুরু হয় কবিতা দিয়ে। সাহিত্যের প্রায় সকল আঙ্গিনায় বিচরণ করছেন যা প্রকাশ পায় তাঁর কবিতায়, গল্পে, উপন্যাসে। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অন্যরকম চাওয়া’, অপর সৃষ্টি পাঠকপ্রেমীর নিকট সমাদৃত উপন্যাস ‘খণ্ডক’ । পরবর্তী প্রকাশ সহজ-সরল, প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত উপন্যাস আজ বসন্তের দিন। আরাে প্রকাশিত হয় ছােটগল্প ‘না আর যাবাে না', গল্প ‘সােনার। পালঙ্কে আমি একা, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। নির্যাতিত নারীদের নিয়ে গবেষণাধর্মী আলােড়িত প্রকাশনা 'বীরাঙ্গনাদের কথা। স্কুল জীবন থেকেই বাংলাদেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে জড়িত থেকে সক্রিয় ভূমিকা রেখে। চলেছেন। বাংলাদেশের নারীদের বিভিন্ন সংকট, সংখ্যাতিময় অবস্থার প্রেক্ষাপটে লেখনীর দ্বারা হয়েছেন তিনি সােচ্চার। ইতােমধ্যে তিনি কুমারখালী সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, দক্ষিণ বাংলা সাহিত্য সাংস্কৃতিক পদক এবং কবি সুফিয়া কামাল সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছেন। সুরমা জাহিদের জন্ম ১৯৭০ সাল। জন্মস্থান : রাজাবাড়ি, রায়পুরা, নরসিংদী। বাবা : মরহুম আলফাজ উদ্দিন আহমেদ, মাতা : আম্বিয়া আক্তার। স্বামী : মােঃ জাহিদ হােসেন। ছেলে : মােঃ নাদির হােসেন লুই ও মেয়ে : নুর-এ-জান্নাত জুই। শিক্ষাজীবন শুরু করেন রায়পুরা উপজেলার জিরাহী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। তারপর মরজাল কাজী মােঃ বশির উচ্চ বিদ্যালয়, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গডিডমারী উচ্চ বিদ্যালয় শেষ করেন কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে।