"নিজস্বী” বইয়ের লেখকের কথা: আধুনিককালের কম্পিউটার জগতে যে বিপ্লব ঘটে গেছে, তা ত্রিশ চল্লিশ বছর আগেও কল্পনা করা যেত না। মােবাইল বা চলভাষ যন্ত্রটি কত অসাধ্যসাধন করেছে ভাবলে বিস্মিত হই। আমি আমার নিজের আলােকচিত্র, বিভিন্ন পরিবেশে কেমনভাবে আছি, আমার প্রিয় সঙ্গীদের মধ্যে সব আলােকচিত্র এই আধুনিক যন্ত্রটিতে ধরে রাখতে পারি। ইংরেজিতে একেই সেলফি বলে, বাংলায় নিজস্বী। আমার এই গ্রন্থটি একটু বিচিত্র। এতে আমার প্রিয়জন শ্রদ্ধেয় মানুষদের কথা আছে। তাদের অধিকাংশই আমাদের ছেড়ে গেছেন। কেউ কেউ আছেন আজও আমার চারপাশে। তাদের সকলের কথা নিয়ে এই গ্রন্থ। এতে মােটামুটি একটা জীবনী আছে, কোথাও শুধুমাত্র স্মৃতিপ্রসঙ্গ আছে, আছে স্মৃতিতর্পণও। সেইসঙ্গে আছে আনন্দময় ভ্রমণের স্মৃতি প্রিয়জনদের সঙ্গে। কিছু ব্যক্তিগত প্রবন্ধ আছে। সেখানেও আছে আমার জানা চেনা প্রিয় মানুষদের আনাগােনা। গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত নিবন্ধগুলির বেশির ভাগ কথাসাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত। কেবল বাদল বসু ও শ্রীসমরেশ মজুমদার সম্পর্কিত নিবন্ধ দুটি যথাক্রমে দেশ ও ‘তথ্যকেন্দ্র’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। সেলফি শব্দকে অনুসরণ করে এই গ্রন্থের নাম রাখা হল নিজস্বী। এতে আমার ব্যক্তিগত লাভ হয়েছে কিছু। গ্রন্থে উল্লিখিত ব্যক্তিদের তুলনায় নিজে কত ক্ষুদ্র বােঝা যায়। একটা আত্মােপলব্ধি ঘটে। আর ভ্রমণের স্মৃতি যৌবনের অনায়াসগম্যতার তুলনায় আজকের শারীরিক অক্ষমতা মনে পড়াচ্ছে যৌবনশক্তি কত ক্ষণস্থায়ী। এখন পাঠকদের ভালাে লাগলেই সকল শ্রম সার্থক হবে।
লেখক Sobitendronath Ray-এর জন্ম ১৯৩৪ সালে। ১৯৪৯ সালে তিনি মিত্রও ঘোষ পাবলিশার্সে যোগ দেন। গজেন্দ্রকুমার মিত্র, তদীয় পত্নী প্রতিমা মিত্র এবং সুমথনাথ ঘোষের স্নেহচ্ছায়ায় তিনি ক্রমশ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক গোষ্ঠীর অন্যতম হয়ে ওঠেন। তদবধি এখনও তিনি প্রকাশন পরিচালনায় কর্মরত। এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থাতেই তিনি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করেছেন। সরকারী কাজের সুযোগ পেয়েও সম্ভবত সাহিত্যিক আড্ডার টানেই এই প্রকাশন প্রতিষ্ঠানে থেকে গেছেন। বহু সাহিত্যিকের সঙ্গলাভে তিনি সমৃদ্ধ হয়েছেন।