“ব্রিটিশ আমলের ইতিহাস (১৭৫৭-১৯৪৬)" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ব্রিটিশ শাসনামলে যে আধুনিক যুগের সূচনা হয়েছে কাব্য-কলায় এবং মানুষের প্রাত্যহিক জীবনচর্চায় সে আধুনিকতাকে ম্লান করে দিয়েছে হিন্দু-মুসলমান বিরােধ। সংস্কৃতিকে ঐক্যকে নষ্ট করে ধর্মীয় বিভেদকে সক্রিয় করেছে। এ হীন কাজটি করেছে ইংরেজরা। তাদের বিভেদের শাসননীতি অক্ষুন্ন রাখার জন্য ধর্মে-বর্ণেগােত্রে-জাতিতে তারা নিত্য বিরােধ বাধিয়ে রেখেছিল। ব্রিটিশদের রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম প্রধান কৌশল ছিল বিরােধ ও বিভক্তি। সে বিবেচনায় বাংলা ভূখন্ডের। জন্য অনিবার্য ছিল হিন্দু-মুসলমান বিরােধ। তারা সাফল্যের সঙ্গে বাধিয়েছিলও তাই। ব্রিটিশদের বিভেদনীতি বাংলাসহ ভারতের। সর্বত্র সক্রিয় থেকেছে। এই বিভেদের পথ ধরে বাংলায় বিভাগপূর্ব সময়ে সংঘটিত হয়েছে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা। সে দাঙ্গায় রক্তাক্ত হয়েছে বাঙালি হিন্দু-মুসলমান এবং ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। তাদের চিত্ত। সেই সংক্ষুব্ধ আহত চিত্তকে আশ্রয় করে বিকশিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতা, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও । মুসলিম লীগ। তাদের রাজনৈতিক অভিলাষে বিভক্ত হয়েছে ভারতবর্ষ। বিভক্ত। হয় বাংলা। অনিবার্য হয়ে ওঠে পাকিস্তানের। জন্ম। নব্য পাকিস্তানের পূর্বাংশ ছিল। হিন্দু-মুসলমানের আবাসভূমি পাকিস্তানের চব্বিশ বছর হয়ে উঠলাে এরপর নয় মাসের যুদ্ধ। বাঙালির রক্তদান। স্বাধীনতা অর্জন। বাঙালির রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম। হিন্দু-মুসলমানের ধর্মীয় বিভেদের ঊর্ধ্বে বাঙালির স্বদেশ। সঙ্গত কারনে প্রত্যাশা বাংলাদেশ হবে সম্প্রীতির লীলাভূমি।
মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম-এর জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি (২০০৯)। কর্মজীবনের শুরুতে কিছুকাল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের গ্রন্থাগারিকের দায়িত্বে। নিয়ােজিত ছিলেন। পরে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সােসাইটি কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত জাতীয় কোষগ্রন্থ বাংলাপিডিয়ার সহকারী সম্পাদক। বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন পাঁচ বছর। বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ও সম্পাদিত বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধান-এর অন্যতম সংকলক এবং সমন্বয়কারী। বর্তমানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলাের বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা দশ । সমাজ, সংস্কৃতি, শিক্ষা, সাহিত্য ও দর্শনমূলক ভাবনা গ্রন্থগুলাের বিষয়। তার এক উল্লেখযােগ্য মৌলিক কাজ—অক্ষয়কুমার দত্ত ও উনিশ শতকের বাঙলা (২০০৯)।