“ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বাংলাদেশের সংস্কৃতির বাগানে বিষবৃক্ষ রােপন ও পরিচর্যার মালি জেনারেল জিয়াউর রহমান সংবিধানে পঞ্চম সংশােধনী আরােপনের মাধ্যমে যে অন্ধকার যুগের সূচনা করেছিলেন, তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নব্বইয়ের দশকে সামরিক স্বৈরাচার বিরােধী আন্দোলনের সময় জাতীয় পর্যায়ে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক সাময়িকীগুলাে কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম-এর জীবন ও কাজ নিয়ে প্রায়শঃ প্রতিবেদন ও বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতাে, বিশেষত জুলাই ও নভেম্বর মাসে । তবে সেগুলােতে প্রায়শঃ তথ্যগত অসঙ্গতি থাকতাে। সে সময় ১৯৯৬ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কর্নেল তাহের রচনা সমগ্র । বাইশ বছর পর তা আবার প্রকাশিত হলাে। শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমকে নিয়ে বাংলাদেশে প্রকাশনা বেড়েছে। তাকে নিয়ে তরুণদের মধ্যেও আগ্রহ বেড়েছে ব্যাপকভাবে। কিন্তু সে আগ্রহ রােমান্টিকতার সীমা পেরােয়নি- যেমনটি ঘটেছে চে গুয়েভারার ক্ষেত্রে। কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম কেন বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের বিশিষ্টতমদের একজন। তা না জেনে ও না মেনে তাকে নিছক একজন মহানায়ক হিসেবে বিবেচনা করলে তাকে যথাযথ সম্মান জানানাে হয় না। রচনা সমগ্রে তাহেরের বিশিষ্টতা তাহের নিজেই বলবেন। তারপরও সাংবাদিক লরেন্স লিফসুলৎসের ভাষায় বলা যায়, “নিকারাগুয়ায় যারা জেনারেল অগাস্টো সানডিনাের আদর্শে উদ্দীপ্ত হয়েছিলেন, তারাই উনিশ শ’ চৌত্রিশে তাঁর মৃত্যুর অর্ধশতাব্দী পর আবারাে ওঠে দাঁড়ান । তাহেরের মতাে সানডিনােও বিশ্বাসভঙ্গের শিকার হয়েছিলেন, তাঁকেও হত্যা করা হয়েছিল। হয়তাে আবু তাহেরের দৃষ্টান্ত এমনি বুদ্ধিদীপ্ত অনুপ্রেরণার জোয়ার আনবে । চারপাশে নির্যাতিত মানুষের ভীড় দেখে যারা আত্মজিজ্ঞাসায় ব্রতী হবেন, জানতে চাইবেন তাদের মধ্যে কেউ কোনােদিন পৃথিবী বদলে দিতে ওঠে দাঁড়িয়েছিলেন কিনা, তাদের জন্য নতুন অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করবে হয়তােবা ।”