‘চিম্বুক পাহড়ের জাতক-৪’ ফ্ল্যাপে লিখা কথাএই খন্ডে এস চিম্বুক পাহাড়ের আখ্যান শেষ হয়ে গেল। অথচ অসমাপ্ত রয়ে গের পরিণতি । আসলে এর শুরুও নেই শেষও নেই। মানুষের অস্তিত্বের সংগ্রাম , রাষ্ট্রের প্রান্তদেশের আধুনিকতা বর্জিত আদিম বাতাসের ঘ্রাণ ছড়ানো ভূখন্ডে রাষ্রযন্ত্রের নিপীড়নজাত দু:খ যেন চির অমীমাংসিত । রাষ্ট্রের বৃত্ত তৈরি করে রেখেছে রাষ্ট্রেরেই অধীন পাহাড়ি তখাকথিত রাজণ্যবর্গ। পাকিস্তান রাষ্ট্র যে তথাকথিত উচ্চবর্গের দবি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে আাদিবাসী ভূমিতে,তার মুক্তি ঘটে না স্বাধীন বাংলাদেশে পর্বেও। বরং পাকিস্তান যা করেছে আদিবাসীদের উপর, বাংলাদেশ তাই করল। হত্যা, নারীদর্ষণ, আগুনে গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয় আথ্যানিক ক্লিনজিন অর্থ্যাৎ জাতিগত শুদ্ধি করণের নাশে। ধর্মের ্বার গোত্রের নামে নির্যাতন এবং পাহাড় দখলের দ্বারা আদিবাসীদের উদ্বাস্তুতে পরিণত করে বাঙালিরা। এ যেনো একাত্তরেরই পুনরাবৃত্তি। পার্থক্য এই, সেদিন পাহাড়িদের প্রতিপক্ষ ছিল উর্দুভাষী পাঞ্জাবী-আজ বাংলাদেশী বাঙালী। অনিবার্য হয়ে উঠে রাষ্ট্র আর বহিরাগত দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। কেবল ভূমি নয়, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেয় পাহাড়িরা রক্তাপাত। জনবসতি উচ্ছেদ। দাবি ওঠে স্বয়ত্বশাসনের নামে বিচ্ছেন্নতার। অন্যপ্রান্তে উদ্ভব ঘটে মার্ক্সবাদী বিপ্লববাদের । চে গুয়েভারার প্রতি কল্প তৈরি হয়। জাতিবিদ্বেষ নয়, বরং পাহাড়ি বাঙিালির শ্রেণীগত ঐক্য এবং শ্রেণী সংগ্রামের আগুন জ্বলে উঠে। এ যেন লাতিন আমেরিকা। বলিভিয়া। কিউবা। আর্নেস্তু চে গুয়েভারা ,ফিদাল ক্যাস্ট্রো। জ্যোতি চাকমা, মুক্তা চাকমা,পার্বতী চাকমা। প্রেম। ত্রিমাত্রিক দ্বন্দ্ব। চে এর মতোই গভীর অরণ্যে জ্যোতিসহ কমবেড়গণ অবরুদ্ধ ।হত্যা। গণকবর। সাংস্কৃতিক বাড়্রসনের শিকার মুক্তার আত্নোপলব্ধি শূণ্যতার হাহাকার। বিপর্যয় নয়, অসমা্প্ত শ্রেণী সংগ্রাম। ট্রেজেডী দিয়ে সমাপ্ত হলেও উপন্যাসের আক্ষান নতুন সূর্যোদয়ের ইংগিতবাহী।
"চিম্বুক পাহড়ের জাতক-৩" ফ্ল্যাপে লিখা কথা চিম্বুক পাহাড়ের জাতক উপন্যাসটি তৃতীয় খণ্ড ধারণ করে আছে ইতিহাসের অন্ধকারে পড়ে থঅকা দশম-বারো শতকের বাংলার কৃষিভিত্তিক সমাজের ধুসর জীবনের চিত্র। রাজন্যবর্গ নয়,প্রজাবর্গই এর জগৎ বিশ্ব। রাজ-মহিমার মুগ্ধতাও এর বৃত্ত নয়। গণমানুষের অনন্তপ্রসারী দু:খ জাগতিক যন্ত্রণা, যা প্রচলিত ইতিহাস অস্বীকার তরেছে, তা-ই মুখর হয়েছে এখানে। জাগতিক দু:খ মুক্তির পথ হিসেবে মানুষের জীবন বিচ্ছিন্ন হরার আত্ননিগ্রহের গোলক ধাঁধার পথকেই নির্দেশ করেছে এ উপন্যাস। বৌদ্ধ ধর্মের অবক্ষয়ের পথ ধরৈ কায়াসাধন তখা কামরসের পথধরে শূণ্যতার ভেতর নির্বাণেরপরমানন্দের অন্ধকার যে পথ তার ভিতরই চরিত্রগুলোর বিচরণ। চারদিকে সমসুত কিছুর ভাঙনের আওয়াজ । ভয়াবহ সেই ভাঙনের পেষণে হগারিয়ে গেছে গণমানুষ। প্রত্ননিদর্শন ওয়ালী বপেশ্বর আর ময়নামতি শালবন বিহারের অনিবার্য পরিণতির ভিতর উপন্যাসের কল্পিত চরিত্রগুলো প্রবহিত হয়েছে। এখানে প্রাচীন নগর সভ্যতার মুগ্ধতা নেই , আছে এর চরম পরিণতির ইংগিত । প্রাচীন পর্যাপদের পথ ধরে ই এগিয়েছে গীতিকার তার জীবন-দ্বন্দ্ব, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি আর দু:খ মুক্তির আড়ালে ক্রিয়শীল ক্ষুধা-দারিদ্র্য,ইতিহাসেরই প্রতি ইতিহাস হয়ে হাজির হয়েছে। উৎপাদশীল মানুষের উৎপাদন বিচ্ছি হয় মুক্তির নামে সর্বত্যাগি শ্রমণ-জীবন নির্দেশ করে কুয়াশার ভেতর মানুষের পলায়নকে। এ পলায়ন আত্নরক্ষা নয়, বরং স্বেচ্ছা আত্নহনন মাত্র। তাই আলোর বদলে অন্তহীন গভীর অন্ধারেই হাঁটতে হয় তাকে।অভিযাত্রা কি কেবল অজানা দু:খের দিকে না কি পরমানন্দের দিকে, উপন্যাসটির জিজ্ঞাসা সেখানেই।
"চিম্বুক পাহাড়ের জাতক-২ " ফ্ল্যাপে লিখা কথা ইতিহাস নয়, ভূগোল নয়, ধর্ম-দর্শন নয়, পরিভ্রমণ -আলেখ্য নয়, বরং একটি মহাকাব্যিকক উপন্যাস। অঙ্গ,বঙ্গ, হিমালয় উপতক্যা, তিব্বত,চীন, হিন্দুকোশ,গান্ধার,সিন্ধু, ইন্দ্রপ্রন্থ,বিন্ধ্যপর্বত, নর্দমা-তুঙ্গাভদ্রার পর্বত গুহা, প্রয়াগ, কলিঙ্গ,মগধ,নালন্দা। প্রাচীন ভারতবর্ষের ইতিহাসের দীর্ঘ পরিভ্রমণ। বৌদ্ধ সভ্যতা। পুরাতন প্রস্তরযুগ থেকে অধি আধুনিক সভ্যতার বিশ্ব পরিভ্রমণ । প্রস্তুরযুগে ঘোর অন্ধকারের অনিঃশেষ দু:খের অগ্নিস্রোত জন্ম জন্মান্তর রক্তধারায় বহন করে চলে এক আদি মানব আর এক মানবী। কাল থেকে কালান্তর। আলেকজান্ডারের কাল থেকে হর্ষবর্ধন। আরব, তুরস্ক,আফগান, অভিযানের ধূসরকাল । যুগযুগান্তরের শক,হুন, পাঠান,মোঘল, ইংরেজ, পাকিস্তান,বাংলাদেশ। ধর্মহীন থেকে ধর্ম, ধর্ম খেকে ধর্মান্তর,আত্নপরিচয় শূণ্য মানব থেকে আত্নআবিষ্কারক ব্যক্তি -মানব। চিম্বকের পাহাড়ের জাতক। জাতক মহাপুরাণের অভিনতুন রূপান্তর এই উপন্যাস। গৌতম বুদ্ধের জাতকের উপাখ্যানে জন্ম আর পুনর্জন্মের যে জটি খেলা চলে তারই আবর্তে ঘূর্ণায়মান চিম্বুকের জাতক। অন্ত থেকে অরনন্তকালের প্রসারণ। মানব জীবনের জরা,মৃত্যু-দু:খের এক কুহক জগৎ! অতলান্তিক অনন্তপ্রসারী দু:খ ভোদের জন্ম-মৃত্যু চক্রে মুক্তি থাকে অদৃশ্যমান। হাজার-লক্ষ বৎসর কেবলই চরে এই খেলা। বারংবার নারীপ্রেম ছিন্ন হয় যেমনি তার তেমনি হারায় জীবনের স্বাধীনতা । বুঝি দু:খিই নিয়তি। বঞ্চনা -অপ্রাপ্তিই অন্ধবিধান। ভাষা বঞ্চিত যে আদি মানব পাথরের হাতিয়ার হাতে তুলে বিচূর্ণ হয় রাজ-শক্তির হাতে, তার পরা জয় তো নির্ধারণ হয় এই সভ্যতার কাছেই। ভাষা,ধর্ম,গোত্র আর রক্ত ধারার চক্র, রাজশক্তি, ঔপনিবেশিক শক্তি, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি, স্বৈরাচারী রাষ্ট্র, তার প্রবল প্রতিপক্ষ। রাষ্ট্র হারা, নারীর প্রেম হারা,অস্তিত্ব হারা আদি মানব রক্তাক্ত হয় চিম্বুক উপতক্যায়। পুনর্বার রক্তাক্ত হতে পুনর্জন্ম ঘটে তার চিম্বুক পাহাড়ে। অথচ সে জাতিস্মর। সবেই দেখে অনাদ অতীত স্বপ্নের মায়াবী জগৎ থেকে। সেই মায়াবী জগৎ, সেই পুনর্জন্ম উপন্যাসটি ধারণ করেছে মানব জীবনের অনি:শেষ দু:খভোগ আর সভ্যতার অসম ক্রমবিকাশকে প্রতীকীকরণেল সূত্র ধরে । কেননা এ উপন্যাস রাজন্যবর্গ আর অবতারদের ইতিহাস নয়। এ হচ্ছে নদী আর পর্বতের সন্তানদের মহাকলের আলেখ্য। কালের এই মহাযুদ্ধ দু:খের বিরুদ্ধে ,যে দু:খ পার্বত্য গুহাবাসী জাতক বহন করছে হাজার-লক্ষ বছর পূর্বে শিরায় শিরায়। হাতে যার পাথরের হাতিয়ার ,স্বপ্নে বহন করছে যে গৌতম বুদ্ধের দু:খ বিজয়ী নির্বাণ, তার জন্ম পুনর্জন্মের মহাকাব্য চিম্বুক পাহাড়ের জাতক।
"চিম্বুক পাহড়ের জাতক-১" ফ্ল্যাপে লিখা কথা চিম্বুক পাহাড়ের জাতক। ইতিহাস নয়, ভূগোল নয়, ধর্ম-দর্শন নয়, পরিভ্রমণ-আলেখ্য নয়, বরং একটি মহাকাব্যিক উপন্যাস। অঙ্গ, বঙ্গ, হিমালয় উপত্যকা, তিব্বত, চীন, হিন্দুকোশ পর্বত, গান্ধার, সিন্ধু, ইন্দ্রপ্রস্থ, বিন্ধ্যপর্বত, নর্মদা-তুঙ্গাভদ্রার পর্বত গুহা, প্রয়াগ, কলিঙ্গ, মগধ, নালন্দা। প্রাচীন ভারতবর্ষের ইতিহাসের দীর্ঘ পরিভ্রমণ। প্রস্তরযুগের ঘোর অন্ধকারের অর্নিশেষ দুঃখের অগ্নিস্রোত জন্ম জন্মান্তর রক্তধারায় বহন করে চলে এক আদি মানব আর এক মানবী। কাল থেকে কালান্তর। আলেকজান্ডারের কাল থেকে হর্ষবর্ধন। আরব, তুরস্ক, আফগান অভিযানের ধূসরকাল। যুগযুগান্তরের শক, হুন, পাঠান, মুঘল, ইংরেজ, পাকিস্তান, বাংলাদেশ। ধর্মহীন থেকে ধর্ম, ধর্ম থেকে ধর্মান্তর, আত্মপরিচয় শূণ্য মানব থেকে আত্মআবিষ্কারক ব্যক্তি-মানব। চিম্বুকের পাড়াড়ের জাতক। জাতক মহাপুরাণের অভিনতুন রূপান্তর ৈএই উপন্যাস। গৌতম বুদ্ধের জাতকের উপাখ্যানে জন্ম আর পুনর্জন্মের যে জটিল খেলা চলে তারই আরর্তে ঘূর্ণায়মান চিম্বুকের জাতক। অস্ত থেকে অনন্তকালের প্রসারণ। মানব জীবনের জরা, মৃত্যু-দুঃখের এক কূহক জগৎ। অতলান্তিক অনন্তপ্রসারী দুঃখ ভোগের জন্ম-মৃত্যু চক্রে মুক্তি থাকে অদৃশ্যমান। হাজার-লক্ষ বৎসর কেবলই চলে এই খেলা। বারংবার নারীপ্রেম ছিন্ন হয় যেমনি তার তেমনি হারায় জীবনের স্বাধীনতা। বুঝি দুঃখই নিয়তি। বঞ্চনা-অপ্রাপ্তিই অন্ধবিধান। ভাষা বঞ্চিত যে আদি মানব পাথরের হাতিয়ার হাতে তুলে বিচূর্ণ হয় রাজ শক্তির হাতে, তার পরাজয় তো নির্ধারণ ঞয় এই সভ্যতার কাছেই। ভাষা, ধর্ম, গোত্র আর রক্ত ধারার চক্র, রাজশক্তি, ঔপনিবেশিক শক্তি, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি, স্বৈরাচারী রাষ্ট্র তার প্রবল প্রতিপক্ষ। রাষ্ট্রহারা, নারীর প্রেমহারা, অস্তিত্ব হারা আদি মানব রক্তাক্ত হয় চিম্বুক উপত্যকায়। পুনর্বার রক্তাক্ত হতে পুনর্জন্ম ঘটে তার চিম্বুক পাহাড়ে। অথচ সে জাতিস্মর। সবই দেখে অনাদি অতীত স্বপ্নের মায়াবী জগৎ থেকে। সেই মায়াবী জগৎ সেই পুনর্জন্ম উপন্যাসটি ধারণ করেছে মানব জীবনের অর্নিশেষ দুঃখভোগ আর সভ্যতার অসম ক্রমবিকাশকে প্রতীকীকরণের সূত্র ধরে। কেননা এ উপন্যাস রাজন্যবর্গ আর অবতারদের ইতিহাস নয়। এ হচ্ছে নদী আর পর্বতের সন্তানদের মহাকালের আলেখ্য। কালের এই মহাযুদ্ধ দুঃখের বিরুদ্ধে যে দুঃখ পার্বত্যগুহাবাসী জাতক বহন করছে হাজার-লক্ষ বৎসর পূর্বে শিরায় শিরায়। হাতে যার পাথরের হাতিয়ার, স্বপ্নে বহন করছে যে গৌতম বুদ্ধের দুঃখ বিজয়ী নির্বাণ, তার জন্ম-পুনর্জন্মেরই মহাকাব্য চিম্বুক পাহাড়ের জাতক।
হরিপদ দত্ত। জন্ম : ২ জানুয়ারি ১৯৪৭ খ্রি. গ্রাম : খানেপুর, উপজেলা : পলাশ, জেলা : নরসিংদী। উল্লেখযোগ্য উপন্যাস: অজগর, জন্মজন্মান্তর, দ্রাবিড় গ্রাম, মোহাজের, চিম্বুক পাহাড়ের জাতক (৪ খণ্ড) প্রভৃতি। গল্প সমগ্র, প্রবন্ধ সমগ্র ও শিশু-কিশোর সমগ্র প্রকাশিত হয়েছে। পুরস্কার : বাংলা একাডেমি পরিচালিত সাদ’ত আলী আকন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০০১ এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬ (উপন্যাস)।