"কালপুরুষ" ফ্ল্যাপে লিখা কথা সত্তর দশকের অগ্নিস্রাবী রাজনৈতিক পথ-পরিক্রমার শেষ পর্বে কালবেলার নায়ক অনিমেষ আশা করেছিল তার পুত্র অর্ক তার সমাজতান্ত্রিক আদর্শের নিশানটি শক্ত হাতে ব... See more
"কালপুরুষ" ফ্ল্যাপে লিখা কথা সত্তর দশকের অগ্নিস্রাবী রাজনৈতিক পথ-পরিক্রমার শেষ পর্বে কালবেলার নায়ক অনিমেষ আশা করেছিল তার পুত্র অর্ক তার সমাজতান্ত্রিক আদর্শের নিশানটি শক্ত হাতে বহর করে নিয়ে চলবে।ভ কিন্তু সমকালীন অন্তঃসারহীন কটিল রাজনীতি এবং পঙ্কিল সমাজব্যবস্থার অর্ককে করে তুলেছিল অন্ধকার অসামাজিক রাজত্বের প্রতিনিধি। কিন্তু যেহেতু তার রক্তের মধ্যে ছিল অনিমেষের সুস্থ আদর্শবাদ এবং তার মা মাধবীলতার দৃঢ়তা ও পবিত্রতার সংমিশ্রিত উপাদান, সেই হেতু তার বোধোদয় ঘটতে বিলম্ব হয়নি। এক ভিন্ন মানসিকতায় সে আহ্বান শুনেছিল চিরকালীন মানবতার।ভ একদিকে সুবিধাবাদী সমাজব্যবস্থার যূপকোষ্ঠে নিষ্পেষিত ও নিপীড়িত কিছু মানুষকে একত্র করে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল নতুন ভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। তাদের সামনে তুলে ধরেছিল আগামী পৃথিবীর সুন্দরতম এক মানচিত্র। কিন্তু ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দল ও সমাজ অর্ককে অর্গলবদ্ধ করে সেই পবিত্র পৃথিবীর স্বপ্নটি ভেঙে চুরমার করতে দ্বিধা করেনি। কিন্তু অর্ক- যার অপর নাম সূর্য- তার আবির্ভাবকে কি চিরকালের মতো রুদ্ধ করে রাখা যায়? কালপুরুষ উপন্যাসের সমাপ্তিতে সে মানবতার আহ্বানের প্রতিধ্বনি স্পষ্টতর।
১৯৪২ সালের ১০ই মার্চ পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্ম বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক এবং ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদারের। তাঁর শৈশব কাটে প্রকৃতির কোলে, চা বাগানে ঘুরে, আদিবাসী শিশুদের সাথে খেলে। এ কারণেই সমরেশ মজুমদার এর বই সমগ্রতে বারবার উঠে আসে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি, চা বাগান, বৃষ্টি কিংবা পাহাড়ের কথা। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় জলপাইগুড়ির জেলা স্কুল থেকে। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি কলকাতা স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। গ্রুপ থিয়েটারের প্রতি তাঁর ছিল ভীষণ ঝোঁক। মঞ্চনাটকে চিত্রায়নের উদ্দেশ্যে তিনি সর্বপ্রথম ‘অন্তর আত্মা’ নামের একটি গল্প রচনা করেছিলেন। সেই গল্পে নাটক মঞ্চায়িত না হলেও পশ্চিমবঙ্গের পাক্ষিক সাহিত্য পত্রিকা দেশ-এ প্রকাশিত হয় গল্পটি। সেই থেকেই শুরু তাঁর লেখকজীবন। সমরেশ মজুমদার এর বই বাংলাদেশের প্রচুর মানুষ পড়েন, পড়তে ভালোবাসেন। দুই বাংলাতেই তিনি সমান জনপ্রিয়। তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে বিখ্যাত হলেও, ছোটগল্প, কিশোর উপন্যাস, নাটক, চিত্রনাট্যসহ, গোয়েন্দাকাহিনীও রচনা করেছেন। সমরেশ মজুমদার এর বই সমূহ, যেমন- সাতকাহন, গর্ভধারিণী, মৌষকাল, ট্রিলজি- উত্তরাধিকার-কালবেলা-কালপুরুষ, আট কুঠুরি নয় দরজা ইত্যাদি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র অনিমেষ, মাধবীলতা, দীপাবলী আর জয়িতা পাঠকমনে আজও বিরাজমান। সাহিত্যে তাঁর অনন্য এবং অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে আনন্দ পুরস্কার, সত্য আকাদেমী পুরষ্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইআইএমএস পুরস্কার অর্জন করেছেন।
কালপুরুষ বইটা সমরেশ মজুমদারের ধারাবাহিক বই। ৩ টা বই নিয়ে এই সিরিজ। উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ এই সিরিজের তিনটা বই। কালপুরুষ এই সিরিজের শেষ বই। যদিও পড়া শেষের পর মনে হচ্ছিল আরও কিছু থাকলে ভাল হত। এরপর কি হবে জানার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। ভাল বই এটাই একটা গুণ “শেষ হয়েও মনে হয় না যে শেষ ” । আমি এই সিরিজের তিনটা বই বই পড়ছি। তিনটাই অস্থির লাগছে। সিরিজগুলো লেখক এমনভাবে লিখেছে আগের সিরিজটা না পড়লেও বুঝা যাবে। তবে পড়া থাকলে আরও ভাল।
বই এর শুরু হয়, ঈশ্বরপুকুর লেনের প্রেম কাহিনী দিয়ে। অনুপমা ও তার প্রেমিক দেখা করা নিয়ে শুরু। যদিও আসল নায়ক নায়িকা এরা নয়। গল্পটা মূলত নায়কনির্ভর। অর্ক নায়ক। নায়িকা নাই বললেই চলে। অর্ক আগের সিরিজের নায়ক-নায়িকা অনিমেষ-মাধবীলতার ছেলে।
প্রথমটা শুরু হয়েছে একটা দুঃখজনক কাহিনী দিয়ে। অনুপমার প্রেমিকার সাথে দেখা করার কথা, মোক্ষদা বুড়ি অনুপমা মাকে বলে দেয়। অনুপমার মা এসব শুনে বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। অসুস্থ হয়ে যায়। তারপর হসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়,সেই দিনেই মারা যায়।
অনিমেষ পঙ্গু হয়ে সব সময় ঘরের মধ্যেই থাকে। পুলিশ তাকে পঙ্গু বানিয়েছে নাকশাল করার অপরাধে। মাধবীলতা একটা স্কুলে মাস্টারি করে। তাছাড়া টিউশানি করায়। সেই টাকা দিয়েই তাদের তিন জনের সংসার চলে। তাছাড়া অনিমেষ সুস্থ করতে প্রচুর টাকা খরচ করে। কিন্তু অনিমেষ তেমন সুস্থ হইতে পারে না। অনিমেষের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ঋণ করতে হয়। মাধবীলতা নিজেকে পরিবারের জন্য উজাড় করতে থাকে।
অনুপমার তিনটি ভাই আছে। ২ টা খুব ছোট বাচ্চা। যারা মায়ের মারা যাওয়াও বুঝে না। আর একটা নাম ন্যাড়া। বাবা হরিপদ। হরিপদের মড়া পোড়ানোর মত টাকা নাই। অর্ক ও ঈশ্বরপুকুর লেনের খুরকি, কিলা, বিলু , কোয়া ও ন্যাড়া টাকা তুলতে এলাকার টাকাওলা মানুষের কাছে চাঁদা তুলতে যায়।
কোয়া, খুরকি গাঁজা খাই, সিনেমার টিকেট ব্ল্যাকে বিক্রি করে। অবৈধ ব্যবসা করে, মাস্তানি করে। আর খিস্তি করে বেড়াই। সতীশ সি পি এমের লোকাল সেক্রেটারি। নুকু ঘোষ কংগ্রেস করে। অর্ক চাঁদা তুলার ক্যাশিয়ার। মড়া শ্মশানে পোড়ে ,চাঁদার টাকা দিয়ে খাওয়াদাওয়া করে। তারপরও কিছু টাকা অর্কের কাছে থেকে যায়। সেইদিন বাড়ি ফিরতে দেরি যায়। পথের মধ্যে বিলাস সোম পরিচয় হয়। বিলাস সোম স্ট্রীট গার্ল মিস তৃষ্ণা কাছ থেকে ফিরতেছিল। পথেরমধ্যে বিলাস ভদ্রলোকের গাড়ি নষ্ট হয়। অর্ক সেই গাড়ি ঠেলে দিলে গাড়ি স্টার্ট নেয়। পড়ে বিলাস অর্কে গাড়িতে তুলে নেয়। গাড়িটি দুর্ঘটনা হয়। বিলাস আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অর্কের তেমন কিছু হয় না। অর্ক বিলাসের গাড়ি থেকে সোনার হার পায়।
অর্কের পড়াশোনা করতে ভাল লাগে না। সারাদিন রকে আড্ডা দায়। খিস্তি করে বেড়াই। বাবার সাথে সরাসরি অনেক কথা বলে। যা ছেলে হিসাবে বাবাকে বলা উচিত না। বিলুর সাথে ব্ল্যাক টিকেট ব্যবসা শুরু করে। অর্ক বিলাস সোমের বাড়ি গিয়ে তার দুর্ঘটনা কথা বলতে যায়। বিলাস সোমের স্ত্রী সুরুচি অর্ক নিয়ে হাসপাতালে যায়। বিলাশ সোম সোনার হারের কথা জিজ্ঞাস করতে অর্ক স্বীকার করে নেয়।
ঈশ্বরপুকর লেন বস্তি এলাকা। টাকার অভাবে মাধবীলতা এইখানে থাকে। এইখানে সি এম ডি পানির একটামাত্র ব্যবস্থা করে। সেইখানে পানির জন্য সিরিয়াল দিয়ে থাকতে হয়। পাড়াই ইচ্ছামত মদ, গাঁজা ,চোরাচালান , খিস্তি চলে। অশ্লীল কথাবার্তা জোরে জোরে সবাই বলে।
অর্ক সোনার হারটি হারিয়ে ফেলে। ঝুমকি সেই হার পায়। হারটি মিস তৃষা কাছে বেচে দেয়। হার খুঁজেতে গিয়ে অর্ক নিষিদ্ধ পিল্লিতে যায়। যেখানে ঝুমকি নিয়িমত দেহ বিক্রি করত। অর্ক এই পল্লি সম্পর্কে জেনে যায়। আর এই বিলাস সোমের মতো ভদ্রলোকেরা নিয়িমিত আসত।
প্রিয়তোষ অনিমেষের চাচা। মস্কোতে থাকে। ইন্ডিয়া এসে অনিমেষকে খুঁজে বের করে। অনিমেষের দুরবস্থা দেখে সাহায্য করতে চায়। কিন্তু অনিমেষ, মাধবীলতা কেউ সেই সাহায্য নেয় না। অনিমেষের আন্দোলনের সাথী সুদীপ মন্ত্রী হয়ে গেছে। সুদীপের কাছ থেকেও একটু সাহায্য নিতে চায় না। পরমহংস অনিমেষ ও মাধবীলতা দুজনের ইউনিভার্সিটির বন্ধু। তার সাথে ভাল সম্পর্ক বজায় থাকে। পরমহংস তাদের ছোটখাটো অনেক সহযোগিতা করে।
বাসের মধ্যে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে। অর্ক একটা ঝামেলায় পড়ে। অর্ক ঊর্মিমালা মেয়েকে উত্ত্যক্তকারীদের হাত থেকে বাঁচায়। সেইজন্যই ঊর্মিমালা ও তার পরিবারের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। ঊর্মিমালাকে অর্কের খুব ভাল লাগে। ঊর্মিমালা ভাল ছবি আঁকতে পারে, বই পড়তে ভালবাসত। অর্ক ভালোবাসার কথা বলার সাহস পায় না। ঊর্মিমালার তুলনাই নিজেকে অযোগ্য মনে করে।
বড়লোক মহিলাদের টাকা থাকলেও শান্তি নাই। সেটা অর্ক সুরুচি বাসায় গিয়ে আরও কিছু মহিলাদের ব্যবহার দেখে বুঝতে পারে। তাদের আচার-আচরণ দেখে ২-১ মধ্যে অর্ক বেশ অসুস্থ হয়ে যায়। মাধবীলতা বুঝতে পারে , অর্ক এই পাড়াই থেকেই দিনদিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। খুরকি ও কিলা পরস্পরকে শেষ করে দেয়।
হঠাৎ জলপাইগুড়ি থেকে টেলিগ্রাম আসে। অ
Read More
Was this review helpful to you?
By Patwary Shazib,
08 Nov 2021
Verified Purchase
কালপুরুষঃ-গল্পের শুরু এক বস্তিতে। যেখানে ঠিক আগের দিনকার মত"দিন যায় রাত আসে"।সকালে উঠলে শোনা যায় পাড়ার বখাটে ছোড়ারা সমানে খিস্তি করে যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যে যার ধান্ধায় বেরিয়ে পড়ছে, ছিনেমার টিকিট ব্লাক করছে,মাস্তানি করে বেড়াচ্ছে মাঝে মধ্যে বড় দাউ পেলে মের দিচ্ছে। এসব তিন নম্বর ইশ্বরপুকুর লেনের বস্তি বাসীর কাছে পরিচিত দৃশ্য। এসব নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
শুধু মাত্র মাধবীলতার পরিবার ছাড়া।এত বছর এখানে থাকার পরেও মাধবীলতা বস্তিবাসীর এসব ব্যাবহার ঠিক সহ্য করতে পারেনি। মাধবীলতা অনিমেষ এবং ছেলে অর্ককে নিয়ে এখানে বাস করে।অনিমেষ মিত্র অর্কের বাবা। যে নকশাল আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের কাছে পা দুটো হারান। গল্পে লেখক মাধবীলতা চরিত্রেটিকে অসীম মমতাময়ী এক চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। সংসারে যার Sacrifice উল্লেখ করা মত। অনিমেষর অক্ষমতার কারনে পুরো সংসারের চাকা যার একাই ঘোরাতে হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই তাদের একমাত্র ছেলে অর্ককে মানুষ করা।
কিন্তু পাঠক এখানে বুঝতে পারবেন একটা কিশোরের উপর পরিবেশের প্রভাব কতটা প্রকট।"কয়লার খনিতে কাজ করলে কালি লাগবে আর আতর ফ্যাকটরিতে কাজ করলে শরীর থেকে সুবাস ছাড়বে "এটা যেন লেখক চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। মাধবীলতার ইচ্ছে ছিলো তাদের ছেলে পড়ালেখা করবে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরন করবে।কিন্তু একটা সময় পর তার বুঝতে বাকি রইলো না!এখানে থেকে তা সম্ভব না।তাদের ছেলে অর্ক, বস্তির অন্য দশটা ছেলের মতোই বেড়ে উঠছে খিস্তিখেউড় করে যাচ্ছে, বাবা-মায়ের মুখে মুখে তর্ক করছে। যেটা অনিমেষ এবং মাধবীলতা তাদের কেউ, শৈশবে কল্পনাই করতে পারত না।তারা এই পরিবেশ থেকে বাইরে ভালো পরিবেশে যেতে চাইলেও নিয়তি তাতে সায় দিচ্ছিলো না।এভাবেই চলতে থাকলো অর্ক এবং ইশ্বরপুকর লেনের বস্তি বাসীর জীবন। হঠাৎ একদিন অনিমেষদের জলপাইগুড়ির বাড়ি থেকে ডাক আসলো। তাদের সেখানে যেতে বলা হল।অনিমেষের অমত থাকা সত্ত্বেও মাধবীলতা এবং অর্কের আগ্রহের কারনে তারা এক রাতের ট্রেনে জলপাইগুড়ি উপস্থিত। এখানে আসার পর শুধু যে মাধবীলতা এবং অনিমেষ বুঝলো তাই না।অর্ক নিজেও তার ভিতরে পরিবর্তন লক্ষ করলো। সে বুঝতে পারছে তার বন্ধুদের ওসব গালিগালাজ মাস্তানী আসলে ভালো কিছু নয়।একটা সুস্থ পরিবেশ পেয়ে তার চিন্তা ভাবনা গুলোও সুস্থ হতে শুরু করলো।
ঠিক সময় এক রাতে এই জলপাইগুড়ির বাড়িতেই লেখক গল্পের ট্রাজেডি ডেকে আনলেন। গভীর রাতে অর্কের ঘুম ভাংলে সে শোনে তার বাবা -মায়ের ঘরে কথা শোনা যাচ্ছে। দরজার কাছে দাড়াতেই সে কথা গুলো আরো স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিল। এই কথা গুলোর ভেতরে একটা শব্দ শুনে সে স্তব্ধ হয়ে গেল এবং সে বুঝতে পারছে মুহূর্তেই তার শরীরে জ্বলুনি শুরু হয়ে গেছে। "বাস্টার্ড " বাস্টার্ড মানে কী?
তার মানে তার বাবা-মার কখনো বিয়েই হয়নি?এই পৃথিবীতে তার কোনো মূল্যবোধ নেই! সে শুধুমাত্র দুটো মানুষের চরম উন্মাদনার ফসল।এই চিন্তা অর্কের চিন্তা জগৎ কে কিছুক্ষণের মধ্যে এলোমেলো করে ফেললো। এবং এক রাতেই অর্ক বুঝলো সে এখন আর সেই আগের অর্ক নেই।হঠাৎ করেই সে যেন অনেক বড় হয়ে গেছে। সে যেন এখন অনেক দায়িত্ব জানে।
এবং অনিমেষ মাধবীলতার বিচ্ছেদ ঘটে গেল।
এর পরে যে গল্পটুকু আছে সেটা শুনে মনে হবে গল্পকথক বুঝি টলি-পাড়ার কোনো ছিনেমার গল্প বলে যাচ্ছেন। তবে এখানে একটা কথা বলে রাখি।যারা লেখক হতে চাচ্ছেন বা গল্প বানাতে চাচ্ছেন তারা একটু লক্ষ্য করলেই এখান থেকে গল্প তৈরির কিছু ক্রিয়াকৌশল ধরতে পারবেন। বুঝতে পারবেন কেন পাঠক বিনা ক্লান্তিতে একটার পর একটা পাতা ওল্টায়।
আর হ্যা,অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে অর্কের জীবনে কি কখনো প্রেম এসেছিলো,, উত্তর হ্যা না দুটোই।
আর মাধবীলতা এবং অনিমেষ কী কখনো এক হতে পেরেছে? এর উত্তর বইটা পড়লে জানতে পারবেন।
Read More
Was this review helpful to you?
By aurora tahsin tondra,
01 Oct 2023
Verified Purchase
বইয়ের নামঃ কালপুরুষ লেখকের নামঃ সমরেশ মজুমদার রিভিউ দাতাঃ অরোরা তাহসিন তন্দ্রা ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৯.৫/১০ অর্ক, ১৫-১৬ বছর বয়সী এক কিশোর। ইশ্বরপুকুর ৩ নম্বর লেনের বস্তিতে থাকে সে। কিন্তু, বস্তির ছেলে বলতে আমরা ঠিক যা বুঝাই তা কি তার বেলায় খাটে? বাবা মা উচ্চশিক্ষিত, এমএ পাস। বাবা অনিমেষ ছিলেন বিখ্যাত নকশাল। পুলিশের আঘাতে পা হারান তিনি। উপার্জন করতে তাই স্বাভাবিকভাবেই অক্ষম তিনি। মা একটি স্কুলের শিক্ষিকা হলেও স্বামীর চিকিৎসার জন্য যে পরিমাণ ধার দেনা হয়েছে তা শোধ করে কোন ভাল জায়গায় বাসা নিয়ে থাকা তার পক্ষে বেশ কস্টসাধ্য। তবুও বেশ কয়েকবার বাসা বদলানোর চেষ্টা করলেও নিয়তি তাতে সায় দেয়নি। বস্তির পরিবেশে একটা বাচ্চা মানুষ করা যে কতটা কস্টকর, তা তো সবাই জানে। এখানে প্রকাশ্যে মদ বেচাকেনা করা হয়, সিনেমার টিকিট ব্ল্যাকে বিক্রি করা হয়, বস্তিবাসী উচ্চস্বরে গালি-গালাজ করে সারাক্ষণ। এমন জঘন্য পরিবেশে থেকে অর্কও এসব শিখতে লাগলো। খুরকি, কিলা, বিলু এদের মতো বখাটে ছেলেরা হয়ে উঠলো তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। সমাজের উঁচুতলার মানুষের চরিত্রের কদর্য দিকের সাথেও তার পরিচয় হতে লাগলো নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে। সব মিলিয়ে তাকে বস্তির ছেলেই মনে হতো সবার কাছে। পড়াশুনা করতেও তার ছিল রাজ্যের অনিহা। বাবা মা হতাশ হয়ে পরছিলেন তাকে নিয়ে। কিন্তু অনিমেষ আর মাধবীলতার পবিত্র ভালবাসার ফুল যে সে। সেই অনিমেষ, যে সারাজীবন লড়াই করেছে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। আর মাধবীলতা, তিনি তো সাক্ষাত দেবী। স্বামীর প্রতি ভালবাসা, তার জন্য নিজেকে নিংড়ে দেয়ার এমন আদর্শ এ জগতে বড়ই দুর্লভ। তাদের রক্ত বইছে যার গায়ে, সে কি করে বখে যেতে পারে? না, বখে যায়নি সে, তার মধ্যে ভাবোদয় ঘটে। হঠাৎ তাদের কোন এক কারণে জলপাইগুড়ি যেতে হয়, সেখানের সুস্থ পরিবেশে থেকে তার মধ্যে সুস্থ চিন্তা জাগ্রত হয়, সে সাধারণ মানুষের কথা ভাবতে শুরু করে। আবার বস্তিতে ফিরে এসে সে বস্তিবাসীর অভাব দূর করতে, তাদের একজোট করে তাদের উদ্বুদ্ধ করে নিজের পায়ে দাড়াতে। সকলের সাথে মিলে এক অভাবনীয় বুদ্ধি বের করে সকলকে তিন বেলা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে। কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাহায্য ছাড়া একাই লেগে যায় মানুষের কল্যাণে। এসব দেখে তার বাবা মাও এগিয়ে আসেন তার সাহায্যে। কিন্তু কিছু সুবিধাবাদী মানুষের তা সহ্য হবে কেন? মিথ্যে অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু যার নাম অর্ক বা সূর্য, তাকে কি বন্দি করে রাখা সম্ভব কখনো? যতই মেঘ এসে ঢেকে দিক না কেন, সে যে আবার আলো ছড়াবেই। মোটা দাগে এটাই মূলত কালপুরুষের কাহিনি, আমার লেখনীতে যা হয়ত খুব সাধারণ কাহিনি মনে হচ্ছে। কিন্তু এই বইয়ের লেখক হলেন সমরেশ মজুমদার, সাধারণ কাহিনিকেই অসাধারণ করে তোলার জাদুকর যিনি। তাইতো বইটি শুরু করার পর এক ধাক্কায় পুরো বই শেষ না করে উঠা অসম্ভব হয়ে পরেছিল, মন্ত্রমুগ্ধের মতো একের পর এক পাতা উলটে গিয়েছি, দেখেছি আমারই বয়সী একটি ছেলে কিন্তু কতটা দৃঢ় মানসিকতা, কত তুখোড় চিন্তাশক্তি। এই বয়সের একজন কিশোরের যখন নিজেকে নিয়েই মশগুল থাকার কথা সারাক্ষণ সেখানে সে তার আশেপাশের সকলের জন্য কাজ করে গেছে এবং শতভাগ সফল হয়েছে। নয়ত তার গ্রেফতারের খবরে কি এভাবে পুরো বস্তিবাসী ছুটে আসে? সকলের মুখে একটাই দাবি- অর্কের মুক্তি চাই। এই বয়সে এরচেয়ে বড় অর্জন কি আর কিছু হতে পারে? এই বইটির আরও দুটি খন্ড আছে- কালবেলা ও উত্তরাধিকার। এটি সর্বশেষ খণ্ড, আমার সবচেয়ে পছন্দের খণ্ডও বটে। আশা করি আপনারা বইটি পরবেন এবং আপনাদেরও এটি ভালো লাগবে। কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী। ধন্যবাদ।
Read More
Was this review helpful to you?
By Tanjila Worthy,
14 Aug 2024
Verified Purchase
তিন নম্বর ঈশ্বরপুকুর লেন এর বস্তি এলাকার একটি ছোট্ট ঘরে থাকে অনিমেষ, মাধবীলতা আর তাদের ১৫/১৬ বছর বয়সী ছেলে অর্ক। নকশাল আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় সদস্য অনিমেষ পরবর্তীতে পুলিশের নির্মম অত্যাচারে পঙ্গু হয়ে চলনশক্তি হারিয়েছে। সারাদিন রাত ঘরে একটি ক্লীবের মতো বসে থাকা ছাড়া তার আর কিছুই করার নেই। সেখানকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করে মাধবীলতা সংসারের সকল দায়িত্ব আর ঋণের বোঝা নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছে। পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও অর্ক বস্তির রংবাজ ছেলেগুলোর সাথে মিশে নিজেও সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলো। ঘটনাচক্রে একসময় অর্ক পরিচিত হলো সমাজের উঁচু তলার কিছু মানুষের জীবনধারার সাথে। তাদের নোংরা চিন্তা ভাবনা আর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি অর্কর মনে এমন গভীর দাগ কাটে যে ঘটনার তীক্ষ্ণতায় এত বড় ছেলেটির জ্বর চলে আসে। সে সংকল্প করে নিজে কখনোই এমন অসভ্য হবে না। হঠাৎ তাদের জীবনে গতানুগতিকতার বাইরে একটু ভিন্ন ধারার জল ছিটকে এলো। অনিমেষের ছোট চাচা প্রিয়তোষ মিত্র রাশিয়া থেকে দেশে এসে তাদের খোঁজ করে ঈশ্বরপুকুরের বস্তিতে এসে হাজির হলো। এর মাধ্যমে বহু বছর সকল আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখা অনিমেষ তর বাবার অসুস্থতার খবর কিন্তু তাদের নিদারুণ জীবন ধারণের কথা জানতে পারলেও তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব ছিলো না। কিছুদিন পর বাবার অসুস্থতার টেলিগ্রাম পেয়ে অনিমেষকে পরিবারসহ যেতে হলো কৈশোরের স্মৃতি জরানো জলপাইগুড়ির বাড়িতে। সেখানকার পরিবেশ আর বিভিন্ন ঘটনাগুলো অর্ককে মানসিকভাবে অনেক দায়িত্বশীল আর দৃঢ় করে তুললো। জলপাইগুড়ি থেকে ফিরে এসে ছোট ছোট কিছু ঘটনার ধারাবাহিকতায় ঈশ্বরপুকুর লেনের আমূল পরিবর্তন সাধিত হচ্ছিল অর্কর হাত ধরে। এ যেন অনিমেষদের স্বপ্নে দেখা সেই সমঅধিকারের এক টুকরো ভারতবর্ষ এই ঈশ্বরপুকুর লেন। অর্ক যেন নিজের নামকে সার্থক করে এখানে এক নতুন সূর্যোদয় ঘটিয়ে চলেছে। কিন্তু এতসব দূর্নীতি আর স্বার্থপরতায় গিজগিজে দেশে কমিউনিজমের থিওরি মতে সমমর্যাদার ভারতবর্ষ লাভ কি সম্ভব হবে? এতো পরিশ্রমের পরও কি পরিনতি এর পরিনতি অনুকূল হবে?
সমরেশ মজুমদারের অনিমেষ সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ বই "কালপুরুষ"। প্রথমে " উত্তরাধিকার" এবং "কালবেলা" বই দুটি পড়া থাকলে "কালপুরুষ" বইটি পড়ে যেকোনো পাঠক যথেষ্ট তৃপ্ত হবেন। সক্রিয় নকশাল সদস্য অনিমেষের ছেলে অর্ক, যার নামের অর্থ সূর্য, সে বেলগাছিয়ার এই বস্তি এলাকায় নিজ আদর্শ আর নীতিবোধে পরিচালিত হয়ে সমমর্যাদার এক টুকরো ভারত রচনায় উদ্যোগী হয়। বয়স সবে ১৫/১৬ হলেও অর্কর অভিজ্ঞতার খাতাটা এখনি যথেষ্ট ভারী। সমাজের সকল স্তরের মানুষের জীবনযাত্রা দেখেছে খুব কাছ থেকে। বাবা মায়ের সুস্থ মানসিকতা আর চারিত্রিক দৃঢ়তার শিক্ষায় অর্ক ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য করতে শিখেছে। কোনো নির্দিষ্ট নীতি বা অদর্শে তাড়িত হয়ে নয় বরং নিজে বিবেচনায় সার্বজনীন আদর্শ পত্তন করেছে অর্ক, যেখানে সমাজের সকলে একটি পরিবার, এক হাড়িতে খাবার খাচ্ছে সবাই। যেকোনো সমাজব্যবস্থায় একটি আমূল পরিবর্তন সাধনের জন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে অবলম্বন করে কাজ করা আবশ্যক নয়, বরং প্রয়োজন হলো একটি বলিষ্ঠ নেতৃত্বের, যে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করবে আর তাদের সুবিধা - অসুবিধা বিবেচনায় কাজ করবে। উপন্যাসে অর্কের চরিত্রে সে বৈশিষ্ট্য স্পষ্টত ফুটে উঠেছে। কিন্তু নোংরা রাজনীতি আর দুর্নীতির বেড়াজালে ক্লিষ্ট দেশে অর্কর এই আদর্শ কার্যকরভাবে চালিয়ে যাওয়া আদৌও কি সম্ভব?
Read More
Was this review helpful to you?
By Hosneara Yeasmin Ami,
08 Jun 2017
Verified Purchase
তিন নম্বর ঈশ্বরপুকুর লেনে দিন আসে দিন যায়। এরমাঝেই একটু একটু করে বেড়ে ওঠছে অর্ক। অর্ক মানে সূর্য। অনিমেষ আর মাধবীলতার ভালোবাসার ফুল অর্ক। নামটা মাধবীলতার দেয়া। তাদের নিস্তব্ধ জীবনের সূর্য যেন অর্ক। যদিও পরিবেশ পরিস্থিতির কারনে সব সময় কি একটা ভয়ে থাকে মাধবীলতা। ঈশ্বরপুকুর লেনের এই ঘুপচি ঘরে আশেপাশের শত কদর্যতার মাঝে বেড়ে ওঠা অর্ককে নিয়ে তাই সবসময়ই ভয় করে মাধবীলতা।
বস্তিতে থাকার মাশুল অবশ্য দিতেই হয় অনিমেষ আর মাধবীলতার। স্কুল আর ঋণের চাপে জর্জরিত মাধবীলতা আর পুলিশের অত্যাচারে পঙ্গু অসহায় অনিমেষের শত সতর্কতার পরও অর্ক আস্তে আস্তে বস্তির পরিবেশে আসক্ত হতে থাকে। মুখের ভাষা হয়ে যায় খিস্তি মেশানো আর বন্ধু-বান্ধবদের প্ররোচনায় ভুল পথে পা বাড়ায় অর্ক। অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি আর খিস্তি খেউড় যাদের নিত্য নৈমিত্তিক কাজ তাদের থেকে ভাল কিছু আর কিভাবে আশা করা যায়। কিলা, খুরকি, বিলা এরাই হয়ে ওঠে অর্কর নিত্যদিনের সঙ্গী।
অন্য একটা ঘটনায় সমাজের উচু তলার কিছু মানুষগুলোর আসল চেহারাটা সামনে আসে অর্কর। ঘটনার তীব্রতায় জ্বর চলে আসে তার। এতবড় ছেলে মায়ের আচলে মুখ গুজে খালি বলে চলে বমি পাচ্ছে মা। কতটা নোংরা কদর্যতা দেখলে একটা ছেলে এমন কথা বলতে পারে একটু ভাবুন তো। এইসব দেখেশুনে তীব্র প্রতিবাদে মুখরিত হয়ে ওঠে অর্ক। নিজের সাথে নিজেই প্রতিজ্ঞা করে সমাজের এসব অসঙ্গতির সাথে কখনোই তাল মেলাবে না। সত্যকে সত্য, অন্যায়কে অন্যায়ই বলবে।
বস্তির লোকজনকে সাথে নিয়ে নতুন এক আন্দোলনে সামিল হয় সে। এক পরিবার এক হাড়ি হিসেব করে পুরো বস্তিকে সাথে নিয়ে শুরু করে এক বিরল ধরনের কাজ। নির্দিষ্ট একটা অর্থের বিনিময়ে সারা মাস তিনবেলা সবাইকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নেয় সে। এসব দেখেশুনে আশার সঞ্চার হয় অনিমেষ মাধবীলতার মনে। অর্কর এই প্রচেষ্টা কি সফল হবে? নাকি ঘুণে ধরা সমাজের ততোধিক নষ্ট মানুষগুলোর আতে ঘা লাগবে এভাবে?
আমার কথা :
অর্ককে অনিমেষের তুলনায় আমার তেমন একটা পছন্দ হয়নি। অনিমেষ ছিল শান্ত, সুন্দর আর স্থির। সেখানে অর্ক একটু কেমন যেন। অনিমেষ আর মাধবীলতার ভালোবাসার ফুল মনে হয় একটু অন্যরকম হওয়ার কথা ছিল।
ছোটমা আর পিসামার অসহায়ত্ব খুব কস্ট দিয়েছে । আমাদের দেশের একসময় মেয়েদের অবলম্বন বলে তেমন কিছু ছিলনা। কতটা অসহায় ছিলেন তারা। ভাগ্য ভাল আমাদের যে দিন পাল্টেছে। মাধবীলতার কথাই বলি। স্বামী সন্তানকে নিয়ে কখনো অন্যের মুখাপেক্ষী হতে হয়নি তাকে। আশা করি মেয়েরা আরো স্বনির্ভর হবে। তবে স্বনির্ভরতার হাত ধরে সমাজের যেই কদর্য দিকটা মেয়েদের দেখতে হয়, তা বন্ধে সবাই সচেষ্ট হবে এই কামনাই করি।।।
হ্যাপি রিডিং । । ।
Read More
Was this review helpful to you?
By Maisha Samiha,
28 Dec 2020
Verified Purchase
নীলক্ষেতে পুরনো বইয়ের লট থেকে কম দামে ছেড়ে দিচ্ছিল। ৬০ টাকায় কিনেছিলাম বইটা বছর দেড়েক আগে। অবশেষে পড়তে শুরু করলাম। অর্ধেক এগিয়েই জানলাম এটা সমরেশ মজুমদারের অনিমেষ সিরিজের বই। তাও আবার একলাফে তিন নম্বরটা! ভাবলাম কি আর করা, পড়েই ফেলি। এটা তো জীবন নয়, যে শেষটা আগে জেনে ফেললে বাঁচার আনন্দ হারিয়ে যাবে। অবশেষে শেষ করলাম। লেখকের সাতকাহন ও গর্ভধারিণী পড়েছি আগে। তাঁর লেখা বোধ হয় এমনই। বয়স কম ছিল বলে কি আগে এতোটা বুঝতে পারিনি? অথচ এই বইটা পড়ে তাঁর লেখনীর ধাঁচে মুগ্ধ হয়ে গেছি। মনে হচ্ছিলো, ঠিক এমনটাই হয় জীবনে। চরিত্রগুলো আফসোস করে, রেগে ওঠে, মনে মনে ভাবে, জেদ করে। কিছু কথা বলে ফেলে ভুলে, তারপরে অনুতাপে মরে যায়। মানুষের চিন্তাগুলোকে এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা যায়? পনেরো বছরের একটা ছেলে কত কিছু নতুন করে শিখছে, জীবনের দর্শনগুলো আবিষ্কার করে আস্তে আস্তে বড়দের মত চিন্তা করতে শুরু করেছে। এতো সুন্দর করে কিভাবে লেখা যায় এসব? ইশ! কাহিনী অনেক বিশদ। খুব পরিপাটি করে সাজানো। নকশাল আন্দোলন নিয়ে কিছুটা ধারণা হল। সোজা কোথায়, ভালো লেগেছে খুউব :)
Read More
Was this review helpful to you?
By Md. Abdul Munayem ,
27 Oct 2019
Verified Purchase
কালপুরুষ এই বইটি পড়ার সময় এমন একটা স্পীড তৈরি হয় যেন নিজেই কাহিনীর সাথে মিশে গেছি, মনে হয় আমিই এই উপন্যাসের একটি অংশ। একবার বইটি পড়া শুরু করলে শেষ না করে উঠতে মন চায় না...... তবে বইটি বড় তাই একটু সময় নিয়ে শেষ করতে হবে । সমরেশ মজুমদার এর কালবেলা, কালপুরুষ এই বইগুলি একেকটি একটা ইতিহাস । পড়ে খুব ভাল লেগেছে ।।
Read More
Was this review helpful to you?
By Rakibul Hasan Sanjer,
30 Sep 2022
Verified Purchase
" কালপুরুষ || সমরেশ মজুমদার "
সমরেশ মজুমদারের অনন্য সৃষ্টি ‘কালপুরুষ’ উপন্যাস। ‘উত্তরাধিকার’ ও ‘কালবেলা’ উপন্যাসের ধারাবাহিকতায় লেখা হলেও এর প্রেক্ষাপট একদম ভিন্ন। অনিমেষ ও মাধবীলতার ছেলে অর্কের জীবনবোধের কাহিনী ও স্বতন্ত্র আদর্শ বহন করে কালপুরুষ।