"সিরাতে আয়েশা রাযি." বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: মুসলমানদের বৈশ্বিক পতনের অন্যতম কারণ নারীদের প্রতি মােহ। ঘরে ঘরে প্রবৃত্তি পূজা, জড়পূজা, জাহেলি যুগের শােক, বিনােদন, অপচয় এ সিরালে আয়েশা সমস্ত বর্বরযুগের সিংহভাগ কর্মকাণ্ডের সরব উপস্থিতিমুসলিম মা-বােনদের মন ও মনন থেকে ইসলামি শিক্ষা-দীক্ষা ও মূল্যবােধকে বিতাড়িত করেছে। তাদের সামনে নেই কোনাে মুসলিম মহীয়সীর পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ। নেই তাদের জীবন চলার পাথেয়। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পূত-পবিত্রময় জীবনের আদর্শ সঙ্গীনী হযরত আয়েশা রাযি.। তাঁর একান্ত সংস্পর্শে ধন্য হয়েছেন নয় বছর। তারই পথ নির্দেশে সােনালি যুগের নারীরা পেয়েছে আলাের দিশা। একজন মুসলিম নারীর জন্য সিরাতে আয়েশা' গ্রন্থটিতে রয়েছে জীবনের সার্বিক দিক-নির্দেশনা। জীবনের সূচনা, পরিবর্তন-পরিবর্ধন, উত্থান-পতন, উন্নতি-অবনতি, শােক-দুঃখ, বিয়ে-বাসর, স্বামী ও বাবার ঘর, সতিন-সৎসন্তান, অকাল-বিধবাকাল, রান্না-সেবা সন্তানসহ আরাে কত কী? এক কথা-এক বাক্যে পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি মেরুতে হজরত আয়েশাকে আদর্শ মানার কোনাে বিকল্প নেই। তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে নারীদের জন্য রয়েছে এক অমীয় পাঠশালা। হজরত আয়েশা রাযি.-এর চরিত্র-মাধুরী অনুসরণ করলে একজন নারী হতে পারেন যুগের আয়েশা খাদিজা ও ফাতেমা। প্রিয় পাঠক! বইটি খুলে দেখুন! সময় নিয়ে পড়ুন। পাবেন আলাের সন্ধান। পাবেন জীবনের অনন্ত আয়ােজন! পৃথিবীটা অল্প সময়ের। এখানেই আপনাকে আমাকে অর্জন করে নিতে হবে অনন্ত সুখের জান্নাতের পুঁজি । জীবনকে ফুলে-ফলে সাজাতে সিরাতে আয়েশার মুক্তদরিয়ায় আপনাকে সুস্বাগতম!
ভারত-উপমহাদেশে সিরাতচর্চা, ইতিহাস ও আরবিভাষার সাহিত্য নিয়ে যারা গবেষণামূলক কাজ করেছেন, কর্মগুণে হয়েছেন বিশ্ববরেণ্য—সাইয়েদ সুলাইমান নদবি রহ. তাদের সবচেয়ে অগ্রসারির। ১৮৮৪ সালে ব্রিটিশ-ভারতের বিহারের দিসনাতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিশ্ববিখ্যাত নদওয়াতে পড়াশোনা করে সেখানেই দীর্ঘ দিন আরবিভাষার পাঠদান করেন এই প্রাজ্ঞ প্রতিভাধর; পাশাপাশি ছিলেন আন-নদওয়া আরবি পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক। কর্মজীবনে শিক্ষকতা ও সম্পাদনার পাশাপাশি লিখেছেন অসংখ্য কালজয়ী গ্রন্থ, প্রদান করেছেন পৃথিবীখ্যাত সিরাত-বিষয়ক ভাষণ—খুতুবাতে মাদরাজ নামে যা বিশ্ববিখ্যাত। সিরাতুন নবি (যুগ্ম), সিরাতে আয়েশা, আরদুল কুরআন, খৈয়ামসহ যা-ই তিনি লিখেছেন, সেটিকেই করে তুলেছেন পাঠ-অনিবার্য। এসব আকরগ্রন্থ তাকে এনে দিয়েছে অমরত্বের মর্যাদা। তার লেখা ইতিহাসের পাণ্ডুলিপিগুলো শাস্ত্রীয় সংজ্ঞা পার হয়ে হৃদয়কেও স্পর্শ করে প্রবলভাবে।