অষ্টম সংস্করণের ভূমিকা গাদ্দারের অষ্টম সংস্করণ প্রকাশকালে আনন্দের সাথে বলছি। একখানি অনূদিত বইয়ের এ ধরনের জনপ্রিয়তা বিস্ময়কর। বাস্তব ঘনিষ্ট এই উপন্যাস উর্দূ ভাষায় রচিত। রচয়িতা কৃষণচন্দর স্বনামধন্য সাহিত্যিক। সৎ সাহিত্য চিরন্তন সত্যকে প্রকাশ করে।তার মূল্য, অবদান ও আবেদন শ্বাশত। দু’দিন আগে প্রকাশনা সংস্থার অন্যতম পরিচালক শ্রী জহর লাল সাহা জানালেন, ‘গাদ্দার’ এর সপ্তম সংস্করণ নিঃশেষিত। অষ্টম সংস্করণের ভূমিকায় কিছু বলতে চাই কিনা। ১৯৭৫ সালে ‘গাদ্দার ‘ প্রকাশিত হয়েছিল গ্রন্থকারে।মুক্তধারার সত্ত্বাধিকারী শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহার স-হৃদয় আনুকূল্যে। তারপর থেকে এ যাবৎ সাতটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। কিছুদিন যাবৎ শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহা অসুস্থ, কিন্তু মুক্তধারার গতি ধারা অব্যাহত। তাঁর সহধর্মিনী শ্রীমতি বিজলী প্রভা সাহা ও ঘনিষ্ট আত্নীয় শ্যালক জহুর লালা সাহার সযত্ন পরিচর্যায়, ‘মুক্তধারা’ প্রবাহিত। ১৯৭১ সাল থেকে মুক্তধারার যে অব্যাহত যাত্রা, সেটি যেন অক্ষুন্ন থাকে, এ প্রার্থনা শুধু আমার নয়, অনেকের। সৎচিন্তা, সৎকর্ম, সৎ প্রকল্প কখনোই ব্যর্থ হয় না। এই বিশ্বাসে অটল থেকে , এই কালজয়ী গ্রন্থের সাম্প্রতিক প্রকাশনার সঙ্গে জড়িত সকলকে আন্তরিক শ্রদ্ধা, প্রীতি, স্নেহ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। প্রার্থনা করছি, মুক্তধারার গতি অব্যাহত থাকুক, মূল স্থপতি সুস্থ হয়ে উঠুন, এই সৃজনধর্মী প্রকাশনার সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রয়াস সফল হোক। তাঁদের শ্রদ্ধা ও শুভকামনা জানাচ্ছি। পাঠানুরাগী সবার জন্য প্রীতি, স্নেহ ও শুভেচ্ছা রইল।
উর্দু সাহিত্যের অমর কথা শিল্পী কৃষণ চন্দর। উর্দু গল্পকে এক নতুন দিক দেখাতে কৃষণ চন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রগতিশীল লেখক আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অবদান কৃষণ চন্দর। ১৯৩৮ সালে কলকাতায় প্রগতিশীল লেখক সংঘের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, কৃষণ চন্দর তাতে অংশ নেন। তাঁকে সেই সম্মেলনে প্রগতিশীল লেখক সংঘ পাঞ্জাব শাখার সম্পাদক মনােনীত করা হয়। শিক্ষকতা করার সময় তিনি সমাজতন্ত্রের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এ সময় তিনি ভগত সিং এর দলে যােগ দেন। এ জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং দু’মাস জেল খাটেন। কৃষণ চন্দর তার ৬৩ বছরের জীবনের ৪০ বছর উর্দু সাহিত্যের উন্নয়নে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি অবিচ্ছিন্নভাবে লিখেছেন গল্প, উপন্যাস নাটক, চিত্ৰকাহিনী, চিত্রনাট্য ও শিশু সাহিত্য। লিখেছেন পাঁচ হাজারের অধিক উর্দু ছােট গল্প । এ ছাড়া লিখেছেন ৮টি উপন্যাস। বিভিন্ন বিষয়ে ত্রিশটি গ্রন্থ এবং তিনটি রিপাের্টাজ। কৃষণ চন্দর ছিলেন খুবই উদার দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ। তিনি ধর্মীয় রাজনৈতিক বা সামাজিক সমস্ত সংকীর্ণ দৃষ্টি থেকে মুক্ত ছিলেন। সাম্রাজ্যবাদ ও ধর্মীয় গােড়ামীর তিনি সারাজীবন বিরােধিতা করেছেন।