নিবেদন, ক্ষমাপ্রার্থী সকল জ্ঞানতাপসদের নিকট। যাঁরা জ্ঞানগরিমায় মধ্য গগনে তাঁদের কাছ থেকেই শিখে পরের প্রজন্ম, আমি নতুন প্রজন্মের একজন । নিজে জ্ঞান অর্জনে এখনো যেতে পারিনি বেশি দূর। বলা চলে অক্ষরজ্ঞান নিচ্ছি এরই মধ্যে হিন্দুর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদ্ভগবদগীতা সম্পর্কে লিখে সাধারণের মধ্যে প্রচার করা ধৃষ্টতা হতে পারে জেনেও নিজের মধ্যকার তাগিদ, তোমার সমাজ সংসারের অবহেলিত লোকদের প্রতি একটু নজর দাও; ওদেরকেও করে তোল তোমার সমকক্ষ। ফেলে এগিয়ে যাওয়ার নয় বরং সঙ্গী করে সমবেত যাত্রায় শক্তি সঞ্চারে হও আগুয়ান, তাতেই আমার এ প্রচেষ্টা। গীতা কি কেন এবং জগৎ সংসারে এর প্রয়োজন আছে কি নেই। কিংবা এটা পড়লে বা জানলে কি হবে তা আমার বক্তব্য নয়। আমি শুধু এটাই চেষ্টা করেছি কঠিনতার বেড়াজালে আবদ্ধ মনে হয়েছে যাঁদের কাছে ঐ যুক্তাক্ষর যুক্ত শব্দমালার গ্রন্থখানি তাকে প্রশ্নোত্তর মালায় সাজিয়ে একবারে চিরচেনা ভাষায় তুলে ধরে অতি সাধারণেও যাতে বুঝতে পারে জানতে পারে কি বলা আছে বা বলতে চাওয়া হচ্ছে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার মাধ্যমে, তারই একটু প্রয়াস। জানি না সে প্রয়াসে আমি কতটুকু সার্থক। তবে চেষ্টা করেছি। নিজের স্বল্প জ্ঞানের কারণেই হয়ত রয়ে গেল অনেক ভুল-ত্রুটি। নিজের জ্ঞান-বৃদ্ধির সাথে সাথে শুধরে নিতে সক্ষম হব ভুলগুলো তেমনটি প্রত্যাশা আমার সার্বক্ষণিক। বইটিতে গীতার অধ্যায়ভিত্তিক শ্লোকসমূহের মাঝ থেকে প্রশ্ন ও উত্তর তৈরি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নিজের কোন মত প্রতিফলন করা হয়নি অর্থাৎ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার ভেতর থেকেই তাকে সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র। অনেক ক্ষেত্রেই প্রশ্নের উত্তর সংক্ষিপ্ত হয়েছে কেননা এখানে নিজস্ব বা অন্য কারো মতের সংযোগ ঘটানো হয়নি। প্রত্যেক অধ্যায়ের নাম উল্লেখপূর্বক অধ্যায় ভিত্তিক প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে বইটিকে সাজানো হয়েছে। ফলে একই প্রশ্ন হয়তোদ্বৈতভাবে এসেছে বলে মনে হতে পারে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ে উক্ত বিষয়ে আলোচিত হবার কারণেই এমনটি হয়েছে। বইটি লিখতে গিয়ে আমি যেসকল জ্ঞানী-গুণীর বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি তন্মধ্যে শ্রীজগদীশ চন্দ্র ঘোষ, শ্রীশিবশংকর, চক্রবর্তী, ড. শ্ৰীমহানামব্রত ব্রহ্মচারী, শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। ও শ্রীনৃপেন্দ্রলাল দাশ মহাশয়ের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁদের সকলের কাছে রইলো আমার বিনম্র কৃতজ্ঞতা। বইটি লেখার পেছনে একটা ঘটনা, হঠাৎ আহত হয়ে বাসায় শুয়ে বসে। সময় কাটাতে গিয়ে গীতা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে প্রশ্ন আকারে দু'এক কথা আমার ছোট্ট ছেলে শ্রীমান ঐশিক বিশ্বাসের সাথে আলোচনায় তুষ্ট হলে ও-ই আমাকে প্রথম উৎসাহ দিল। বাবা, তুমি লিখে ফেল একটা বই, চলবে এটি। তার সে উৎসাহই আজকের এ গ্রন্থনা। স্নেহময় এ সন্তানকে আমার সাধুবাদ জানাতেই হয়। ঈশ্বরের অলৌকিক লীলায় বলা তো যায় না কখন তিনি কোথায়? বইটির প্রচার ও প্রকাশে আমাকে অনেকেই করেছেন উদ্বুদ্ধ। সেই মহানুভব ব্যক্তিবর্গ যেমন আমার কর্মস্থলের বর্তমান সচিব শ্রী গৌতম আইচ সরকার, পিতৃব্য শ্রী কান্তিভূষণ বিশ্বাস, শ্রী জিতেন্দ্রলাল ভৌমিক। এছাড়া শ্রী নকুলচন্দ্র সাহা, শ্রী পরেশচন্দ্র পাল, শ্রী নরেশ হালদার, এড. রাজীব চক্রবর্তী আর সর্বোপরি পরিবহন জগতের অনন্য পরিবহন শ্যামলী পরিবহনের স্বত্বাধিকারী আমার গণেশদা, সকলের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশে এ জ্ঞানের আলো পৌঁছে যাক আমার প্রতিটি স্বজনের কাছে। পরম করুণাময়ীর অপার কৃপায় সিক্ত হই আমরা সকলে এক সঙ্গে সে প্রত্যাশায় বইটি প্রকাশে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সকল দায়ভার মাথায় নিয়ে আশা করছি পাঠক মহলে ছড়িয়ে পড়ুক অমৃতময় শ্রীমদ্ভগবদগীতার আদর্শ বাণীগুলো। জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত, আমরা একদিন হবই।