এক রাশ নিবিড় আনন্দের মধ্যে হঠাৎ চিৎকার, চেঁচামেচি। কোলাহলমুখর জীবন। নিষীম্মিতায় পরিপূর্ণ রাত। গভীর নিস্তব্ধতা। নিসর্গ বেলাভূমি। ঘন কালো গাঢ় অন্ধকার। দু'হাতে কালো অন্ধকার সরিয়ে পথ চলতে হয়। কল্পপুরীর তেপান্তরের মতো মোহনীয় অবস্থা। কোথাও কোনো শব্দ নেই। দূর বহুদূর অন্তর্লীন সমুদ্র। তার উপকূলে সবুজ জলপাই রঙের বনভূমি।
শাল, তমাল, হেতাল, সুন্দরী, গেওয়া নানারকম বনফুলের সম্মিলন। ঘন অরণ্যানী। হিংস্র পশু আর শান্ত সুস্নিগ্ধ পাখ-পাখালির বসবাস। মেঘলা আকাশ। ঘন কালো অন্ধকারে ঢাকা। কোনো মানুষের পদচিহ্ন নেই। বিজন মরুভুমির মতো। মাঝে মাঝে ঝিঁঝিঁ পোকার কান-জ্বালানো অদ্ভুত প্রকৃতির শব্দ। গা ছম ছম করে। সমতল দিয়ে ঝন ঝন করে কী যেন হেঁটে যায়। সুন্দর বনবীথি বুড়ি গোয়ালিনীর বুক চিরে বেরিয়ে গেছে দু'-ধারে।
কী অপূর্ব মনোরম মনোলোভা সৌন্দর্য; যা স্বপ্নের রাজপুরীর মতো! সামনে মেলে ধরে নতুন জীবন-আলেখ্য। নিজের অবচেতনে চলে যায় অতীতের অজানা রাহানামায়। এক সময় নীল সাগর; নীল পাহাড় উঁকি দেয় মনের গহীনে। বিভ্রান্ত হয় শৌণক। জীবনের রঙিন আঙিনায় সুখ-স্বপ্নে ডুব দিতে চেয়েছিলো সে। বিশ্বাসের জগৎ ঘিরে ছিলো জ্ঞানলুব্ধ অনেকেই। আজ তারই কপালে এমন অবর্ণীল রঙচটা সোনালি। গহীন নদীর গহীনে সে নিজেকে ডুবিয়ে দেয়।