‘প্রান্তিক’ বই এর পিছনের কভারের লেখা ‘প্রান্তিক’প্রান্তীয় মানুষদের উপাখ্যান। নদী-ভাঙনের কবলে পড়ে মুছে যায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বর্ধিষ্ণু অসংখ্য জনপদ। আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন ঘটে যায় বিরাট। বদলে যায় বেঁচে থাকার ধরণ। নিঃস্ব হয়ে যায় মানুষ। শুরু হয় জীবন সংগ্রামের অন্য ইতিহাস। নিঃস্ব, সর্বহারা হয়ে যাওয়া ভাঙনেরা স্থায়ী ঠিকানার খোঁজে এদিক-ওদিক ক'বছর কাটিয়ে নদী পারে চর জাগতেই ফিরতে শুরু করে আবার। নির্মল চর। সেখানে শুরু হয় ভাঙনে নিঃস্ব, হতদরিদ্র মানুষগুলোর কঠোর জীবন সংগ্রাম। বেঁচেবর্তে থাকার লড়াই। কিন্তু তাদের জীবন সংগ্রামে প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং প্রকৃতি । নির্মল চর আসলে সভ্যতা থেকে বিচ্ছিন্ন নদী বেষ্টিত এক দ্বীপ। মানুষের জীবনধারণের কোনো শর্তই পালিত হয় না সেখানে। রাস্তা, যানবাহন, বিদ্যুৎ পানীয় জল, চিকিৎসা কোনো কিছুরই অস্তিত্ব নেই সেখানে। যেন প্রাগৈতিহাসিক কোনো জনপদ। সেখানে গ্রীষ্মে চরের গরম বালির তাপে ভাজাপোড়া হয় মানুষ। আবার বর্ষায় মাস তিনেক জলের নিচে তলিয়ে যায় নির্মল চর। মানুষগুলো তখন আশ্রয় নেয় ঘরের চালায়। তবু অতিদরিদ্র, অসহায় মানুষগুলো পড়ে থাকে নির্মল চরেই। কলাই আর চোরাকারবারের ভরসায়। চরের একমাত্র ফসল কলাই। চর থেকে জল সরতেই বিঘার পর বিঘা কাশ জঙ্গল পরিষ্কার করে কলাই চাষ করে ওরা। এছাড়া জীবনধারণে বিকল্প পথও নেই যে ।