"রিথিংকিং ইসলাম ইন পোস্টমডার্ন টাইমস" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: আমরা যারা জেনারেল শিক্ষার অঙ্গনে বড় হই তাদের একটা বড় অংশ ধীরে ধীরে ইসলামবিমুখ হয়ে পড়ি। পাশ্চাত্যের মােহনীয় ঐশ্বর্য, চাকচিক্য ও ইহজাগতিক সাফল্য আমাদের অনেককেই করে তােলে পাশ্চাত্যবিমুগ্ধ। অথচ জ্ঞান-বিজ্ঞানে পাশ্চাত্যের অর্জন যত ঈর্ষণীয়-ই হােক না কেন, পাশ্চাত্য যে এক গভীর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংকটে নিপতিত হয়েছে তাতে কোনাে সন্দেহ নেই। আধুনিক পাশ্চাত্যের পণ্যসম্ভোগবাদী ও বস্তুবাদী একমুখী জীবনাচারকে তাই অনেক সমকালীন মুসলিম মনীষী আধুনিক জাহেলিয়াত বলে আখ্যায়িত করেছেন। রিথিংকিং ইসলাম ইন পােস্টমডার্ন টাইমস পাশ্চাত্যের এই উত্তরাধুনিক সংকট ও বিকারকে প্রত্যাখ্যান করে ইসলামের সুষমাময় দিব্য ও বাস্তব ভারসাম্যপূর্ণ জীবনাদর্শকে পুনর্বিবেচনা করার এক ব্যক্তিক পথন; উত্তরাধুনিক কালের তরুণ-তরুণীদের প্রতি একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাসঞ্জাত আহ্বান ও আবাহন। প্রথমত এই বই শুরু হয়েছে একটি আত্মজৈবনিক স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে-ই; অতঃপর ক্রমাগত একটি নৈর্ব্যক্তিক মানচিত্র হয়ে উঠেছে বইটি; কারণ, এতে বিধৃত ব্যক্তিগত পথনির্বাচন ক্রমশ হয়ে ওঠে সমকালীন বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্টদের জন্য আলােকবর্তিকা হয়ে ওঠে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনচর্যাকে দিব্য আলাে দিয়ে লৌকিক বাস্তবতায় পুনর্গঠিত করার এক ইঙ্গিতময় সামষ্টিক দিকনির্দেশনা ও বাতিঘর। এছাড়া এই বইয়ে উপস্থাপিত হয়েছে শাশ্বত ও চিরন্তন ইসলামের এক সমকালীন ভাষা ও ভাষ্য। ইসলামের এমন একটি রূপ-যা একাধারে ধারণ করে দিব্যজ্ঞান ও বিজ্ঞান; ঐশী অনুপ্রেরণা ও সুযুক্তির সুষমা; আধ্যাত্মিক আবেগ, বাস্তব চিন্তা ও কর্মের সুস্মিত মেলবন্ধন। তাওহিদের মৌলিক ভিত্তিকাঠামাের ওপরে তাই গড়ে ওঠে এক অপূর্ব ভারসাম্যময় ব্যক্তিক, পারিবারিক, লৈঙ্গিক, সামাজিক ও খেলাফতি উপরিকাঠামাে। এই ইসলাম আল্লাহর একত্ববাদে নিঃসংশয় ও নিশ্চিত; কিন্তু মানবের অনিবার্য বহুমাত্রিক, বহুবাচনিক ও বহুমানিক বৈচিত্র্যকে পর্যাপ্ত পরিসর দিয়ে এই ইসলাম বহুত্ববাদী ও প্রশান্তিময় ঐক্য প্রতিষ্ঠাকেই এর সার্বক্ষণিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।