ভূমিকা এই ধরনের বইয়ের ভূমিকা লিখবার কোনোও দরকারই হয়তো নেই, কেননা বইটা যখন লেখা শেষ করব, পড়ে দেখলে নিজেরই মনে হবে, যা’ আমি পাতার পর পাতা লিখে বলতে বা বোঝাতে চেষ্টা করেছি, তা' বোঝাতে পারিনি ; কি বোঝাব, তারই ভূমিকা করেছি, সারা বইটাতে। গান বাজনা খুবই ভাল জিনিষ, গুরুজনদের থেকে সুরু করে যাদের গুরুজন হয়েছি, তারাও বলে। সাধনা আর আত্মসংযমের কঠিন বেড়াজালের মধ্যে সংগীতকে আবদ্ধ রেখে আমরা তার মূল্য নিরূপণের চেষ্টা করেছি বার বার। খেয়ালি শিল্পীর নিছক খেয়াল চরিতার্থ করবার একটা মাধ্যম রূপেও আমরা গানকে দেখেছি। কিম্বা ব্যবসায়ীর লক্ষ্মীলাভের এক প্রধান অবলম্বন হিসেবে আমরা যে গানকে দেখিনি, তা' নয়। এই নানা সভায় নানা ভাবে গানকে দেখবার সুযোগ লাভ করেছি আমরা। ভালো বা মন্দ সমালোচনা করতে আজ বসিনি। কি উচিৎ ছিল, আর কি উচিৎ নয়, তার পথও দেখিয়ে দেবার স্পর্দ্ধা আমার নেই। আমি শুধু বলবার চেষ্টা করব এই দীর্ঘ পথ চলতে গিয়ে গানকে আমরা কি কি রূপে পেয়েছি। সেই রূপ দর্শনই আজকে আমার উদ্দেশ্য। রূপ বিচার নয় । সহজ জিনিসকে কঠিন এবং কঠিনতর করার মধ্যে একটা আনন্দ আছে মানি। আজকের শিক্ষা ক্ষেত্রে সেই আনন্দেরই মরসুম। গানকেও আজকে শিক্ষা ক্ষেত্রে সাদর নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেই হিসেবে বলতে গেলে বইটিকে কঠিন করাই হয়তো আমরা উচিৎ। দুরূহ কথা, অন্তঃসার শূন্য বিষয়ের জাল বুনে পাঠক, শিক্ষক, এমনকি প্রুফ রিডারদের শুদ্ধ ব্যতিব্যস্ত যদি না করতে পারলাম, তবে আর বই লিখলাম কি? যাই হোক নিজের অক্ষমতা সম্বন্ধে সচেতন হয়েই এ'কথা বললাম। বিচারের ভার পাঠকের।