ভূমিকা ভারত ইতিহাসে মুঘল যুগের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব অনস্বীকার্য। এই সাম্রাজ্যের বহুমাত্রিকতায় প্রভাবিত পরবর্তী যুগও। ব্রিটিশ শাসনের বিদেশি পরিপ্রেক্ষিতেও জায়মান মুঘল শাসন, বিশেষত ভূমি রাজস্বের ক্ষেত্রে। প্রথম দিককার ইংরেজরা এই সাম্রাজ্যের জাঁকজমক ও অপার গাম্ভীর্যকে নিজেদের জীবনে অনুসরণ করতে চেয়েছিল, তাই white mughols বা সাদা মুঘল নামকরণ । স্বভাবতই এই সাম্রাজ্য তার বিভিন্ন দ্বন্দ্ব, টানাপোড়েন, বিভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রণে যে নূতন যুগের সূচনা করেছিল তার ইতিহাসের বিস্তৃতিও তাই ব্যাপক ও গভীর। আমাদের পাঠ্যসূচি অনুসারে লিখিত হয়েছে বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক, কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অধরা থেকে গিয়েছে বহু মৌলিক গ্রন্থ, যেহেতু সেগুলির অধিকাংশই লিখিত ইংরেজি ভাষায়। সতীশ চন্দ্র মধ্যযুগের ইতিহাস-বিশেষজ্ঞ। তাঁর গবেষণালব্ধ এই সময়কালীন ইতিহাস ব্যতীত তাই এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের জ্ঞান অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই বৃহৎ গ্রন্থটির অনুবাদ তাই এক দুঃসাহসিক এবং একই সঙ্গে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। প্রকাশক বুকপোস্ট পাবলিকেশন এ-বিষয়ে সার্থক। অনুবাদের স্বচ্ছতা এই পুস্তককে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তুলবে বলে আমার বিশ্বাস। অবসান ঘটবে এই সময়কার ঘটনাকে নিয়ে কিছু চলচ্চিত্র যথা ‘মুঘল-ই-আজম' বা ‘যোধা-আকবর’-এর বিষয়বস্তুর ভ্রান্ত ধারণা। শুধু ছাত্র-ছাত্রী বা গবেষকরাই নয়, সাধারণ পাঠকও এই পুস্তকে খুঁজে পাবেন ইতিহাসের এক অনন্য রস। শুধু বাংলায় নয়, সমস্ত আঞ্চলিক ভাষায় এর অনুবাদ হলে আমাদের ভারতীয় ঐক্যবোধ এবং জাতীয়তাবাদের পথে তা হবে অনেকটাই সাহায্যকারী।