এই দুর্গম অঞ্চলটি বর্তমানে সমতলবাসী অভিযাত্রীদের কাছে আর অপরিচিত নেই। তথাপি সংক্ষেপে বর্ণনা করছি, তাতে আমার বোঝাতে সুবিধা হবে। যে ত্রিশূল শৃঙ্গ নন্দাদেবীর পশ্চিমদিকের বহিঃ প্রাচীর আগলে রেখেছে তার আরও দুটি শিখর আছে। বলাইবাহুল্য লঙস্টাফ জয় করেছিলেন ত্রিশূল-১ শিখরটি। এখান থেকে একটি গিরিশিরা দক্ষিণদিকে চলে গেছে। তারই ওপরে রয়েছে ত্রিশূল-২ (২১,৯৫০ ফিট/৬,৬৯০ মি.) ও ত্রিশূল-৩ (১৯,৭১২ ফিট/৬,০০৮ মি.) শিখর দুটি। আগেই উল্লেখ করছি পাঁওয়ালীদোয়ার শিখর থেকে পশ্চিমাভিমুখী একটি গিরিশিরা সুন্দরডুঙ্গা খাল, মাইকতোলী ও মৃগথুনি শিখর পেরিয়ে এসে ত্রিশূল-২ শিখরের সঙ্গে মিলেছে। যে জলবিভাজিকার ওপরে পাওয়ালীদোয়ারের অবস্থান তার পূর্বে পিণ্ডারী উপত্যকা আর পশ্চিমে সুন্দরডুঙ্গা উপত্যকা। সুন্দরডুঙ্গা গাড দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়ে খাতি গ্রামের নিচে পিণ্ডারি নদীর সঙ্গে মিলেছে। আবার মৃগথুনি এবং ত্রিশূল-২ ও ত্রিশূল-৩ শৃঙ্গদ্বয়ের মাঝে রয়েছে বিদলগোয়ার হিমবাহ। সেখান থেকে বেরিয়ে কোয়েল গঙ্গা গোয়ালদামের নিচে দেবল গ্রামে পিণ্ডারি নদীর সঙ্গে মিলেছে। এরপর পিণ্ডারি নদী কর্ণপ্রয়াগের কাছে অলকানন্দায় এসে মিশেছে—এ কথা আগেই বলে গেছি। আবার ত্রিশূল-১ ও ২ শৃঙ্গের পূর্বে বহিঃপ্রাচীরের অভ্যন্তরে রয়েছে ত্রিশূল হিমবাহ, যেদিক থেকে লঙস্টাফ অগ্রসর হয়েছিলেন। অপরদিকে বহিঃপ্রাচীরের বহির্ভাগে রয়েছে শিলি সমুদ্র (শৈল সমুদ্র) হিমবাহ। আমাদের আলোচ্য নন্দাকিনীর উৎস এখানেই। ত্রিশূল-১ শৃঙ্গ থেকে ইংরেজি উল্টো এস (2) অক্ষরের মত দেখতে একটি গিরিশিরা উত্তর-পশ্চিমে গিয়ে পৌঁছেছে নন্দাঘুণ্টি শৃঙ্গে (২০,৭০০ ফিট/৬,৩০৯ মি.)। সেখান থেকে ঈষৎ উত্তরে রোন্টি শিখরের (১৯,৮৯৩ ফিট/৬,০৬৩ মি.) অবস্থান। আবার ত্রিশূল-১ থেকে উত্তরে ঋষিগঙ্গার দিকে যে গিরিশিরা চলে গেছে সেখানেই রয়েছে বেথারতোলী শৃঙ্গ (২০,৮৪০ ফিট/৬,৩৫২ মি.)। এই বেথারতোলী ও নন্দাঘুন্টি শৃঙ্গের মধ্যবর্তী অঞ্চলে রয়েছে একটি অনামা হিমবাহ । তারই ইষৎ পশ্চিমে রোন্টি হিমবাহ থেকে রোন্টি নালা উত্তরদিকে প্রবাহিত হয়ে মিশেছে ঋষিগঙ্গার পশ্চিম প্রান্তে ৷