আপনার চিন্তাকে বদলে ফেলুন, দেখবেন সাথে সাথে আপনার আশেপাশের দুনিয়াও বদলে গিয়েছে। প্রতি সপ্তাহে একবার পড়ার জন্যে এই বইটি। বইটি পড়ার সময় আপনি নিজেকে একজন ছাত্রের জায়গায় কল্পনা করুন। যখন আপনি এই বই থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা আপনার জীবনে প্রয়ােগ করবেন, দেখবেন আস্তে আস্তে প্রতি সপ্তাহে আপনি আপনার জীবনে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এখনি কী সময় নয়, আপনার সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানাের? যেমনটা নেপােলিয়ন হিল আমাদেরকে বলেছেন আপনি আগে ঠিক করুন, আপনি জীবনে কী চান? নিজেকে বলুনঃ আমি তা করতে পারব। এখনি আমি তা করতে পারবাে। একটি তালিকা তৈরি করুন, যা আপনাকে আপনার সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে। সব কাজ একসাথে করতে যাবেন না; একবারে একটি কাজ করুন, সেই কাজের সাফল্য আপনাকে সামনের দিকে যাওয়ার পথ আরাে সহজ করে দিবে, যতই সামনে এগুতে থাকবেন, দেখবেন, আপনার আশেপাশের মানুষজন আপনার লক্ষ্য অর্জনে ততােই সাহায্য করছে। আপনার বাকি জীবনের আজ হলাে প্রথম দিন। আপনি কী আপনার জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট? আপনি যে পথে হাঁটছেন সে পথেই কী যেতে চান? যদি তা না হয়, তবে জীবনের হাল টেনে ধরুন, এবং জীবনে পরিবর্তন আনতে যা কিছুতে পরিবর্তন আনা দরকার, তা-ই করুন। আপনি এবং শুধুমাত্র আপনি-ই পারেন এই কাজটি করতে, আপনি পারেন আপনার দুনিয়াটাকে পরিবর্তন করতে।
আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা অলিভার নেপোলিয়ন হিল আত্মোন্নয়নধর্মী রচনা লেখকদের মাঝে প্রথমদিককার একজন। ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সফলতা লাভের বিভিন্ন দিক লেখনীতে তুলে এনে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল আত্মোন্নয়নমূলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হিলের। নেপোলিয়ন হিলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট ভার্জিনিয়ায় ২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ সালে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ল'স্কুলের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। এর আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে, সেই ১৩ বছর বয়স থেকে। ১৯০৮ সালে এন্ড্রু কার্নেগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হিলের জীবনে আসে বিশাল পালাবদল। তখনকার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি কার্নেগী তাকে পরামর্শ দেন ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে ও তাদের সাফল্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে। এরপর তিনি বিশ্ববিখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এই তালিকায় আছেন হেনরি ফোর্ড, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলসহ আরো অনেকে। এমন ৪৫টি সাক্ষাৎকারের লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম রচনা 'দ্য ল অব সাকসেস'। এই বইয়ে তিনি সাফল্যের সূত্রকে ব্যখ্যা করেছেন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, পুঁজিবাদের সমন্বয়ে মূর্ত দর্শন দিয়ে। নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ সাফল্যগাঁথার চেয়ে সাফল্যের পেছনের সূত্র সহজীকরণের পাথেয় হিসেবে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিখ্যাত এই লেখকের চরিত্রের কিছু রহস্যময় বৈশিষ্ট্য মানুষকে ভাবিয়েছেও বটে। তিনি দাবি করতেন, আত্মাদের সাথে তাঁর যোগাযোগ আছে, তাঁকে দেয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাফল্যের মন্ত্র। হিল এই বিষয়টি তাঁর ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বই 'গ্রো রিচ(!) উইথ পিস অব মাইন্ড' এ খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর জীবনের অজানা কিছু অধ্যায় উঠে এসেছে গবেষকদের চোখে। তবে নেপোলিয়ন হিল এর বই সমগ্র বিতর্কিত ব্যক্তিজীবনের প্রভাবেও জনপ্রিয়তা হারায়নি। তাঁর রচিত 'থিংক এন্ড গ্রো রিচ' সর্বকালের সেরা আত্মোন্নয়নমূলক দশটি বই এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ হলো 'অ্যাটিটিউড মেন্টাল পজিটিভা', 'দ্য মাস্টার কি টু রিচেস', 'সাকসেস হ্যাবিটস' ইত্যাদি। বিতর্কিত চরিত্রের এই লেখক ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর বেশ রহস্যজনকভাবে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি পারকিনসন্স সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন।