ফ্ল্যাপে লিখা কথা বরেন্দির ভূমিপুত্রনেতা ভীম ও তার সহযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করতে রামপালের সাথে যোগ দিয়েছে আঠারো রাজা-সামন্ত-মহাসামন্ত। অঙ্গদেশাধিপতি মথন দেব, মহাপ্রতিহার শিবরাজদেব, রাজা কাহ্নুর দেব, রাজা সূবণ্যদেব, পীটীর রাজা দেবরক্ষিত মগধের অধিপতি ভীমযশাঃ, কোটাটবীর রাজা বীরগুণ, উৎকলরাজ জয়সিংহ, দেবগ্রামের রাজা বিক্রমরাজ, অপরমন্দারের মহারাজা লক্ষীপূর, তৈলকম্পের কল্পতর রুদ্রশিখর, কুজবটীর শূরপাল, উচ্ছালের রাজা ময়গলসীহ, ঢেক্করীর রাজা প্রতাপসীহ, কজঙ্গলের নরসিংহার্জুন, সঙ্কটগ্রামের চণ্ডার্জুন, নিদ্রাবলীর বিজয়রাজ আর কোশাম্বীপতি দ্বোরবর্ধন রথী পদাতিক অশ্বারোহী হস্তিযুথ নিয়ে ভীমের বিপক্ষে।
তাদের হয়ে বীরগাথা রচনা করে ‘বরেন্দ্রী কাল্মিকী, সন্ধ্যাকর নন্দী। তার কাব্য ঘোষণা করে রামপালই সঠিক, আর ভূমিপুত্র কৈবর্তরা ধিকৃত। রামপালের সভাকবির কাছে কি অন্য কিছু আশা করা যায়? এইভাবে বিকৃত হয়ে যায় ইতিহাস। কেউ জানবে না, ভূমিপুত্ররা যে যুদ্ধ লড়ছে সেটাই ন্যায়যুদ্ধ। কারণ সেটাই স্বাধীনতার যুদ্ধ। তাহলে আমরা , তাদের হাজার পরের প্রজন্ম, কোনোদিন কি জানতে পারব না পিতৃগণের গৌরবের সমাচার? জানব!
সেই জন্যই তো দাসজন্মের শৃঙ্খল দুমড়ে-মুচড়ে ছুঁড়ে ফেলে মাতৃভূমিতে ফিরে আসছে কৈবর্ত -কবি পপীপ। সেই জন্যই তো পুঁথি, ভূর্জপত্র, খাগের লেখনি আর ভূষামাটি লাক্ষার কালির পাশাপাশি কবি পপীপ অস্ত্রহাতে চলে যুদ্ধযাত্রায়। জানব বলেই সেই পোড়ামাটি নিচে চাপাপড়া ইতিহাসে শিল্পের আলো প্রক্ষেপিত হয়ে রচিত হয় উপন্যাস ‘পিতৃগণ’
Zaker Talukdar - জন্ম ২০ জানয়িারি ১৯৬৫ নাটোরে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক। স্নাতকোত্তর ডিগ্রী স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে। সমকালীন মুলধারার বাংলা কথাসাহিত্যে তাঁর অপরিহার্যতা ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত। অনবরত বাঁকবদল তাঁর সাহিত্যিকতার প্রধান বৈশিষ্ট। বিষয় ও আঙ্গিকে, মাধ্যম ও প্রকরণে তাঁর স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত অবস্থান সকল মহলেই স্বীকৃত। কথাসাহিত্য এবং চিন্তামূলক কর্মকাণ্ডের সকল ক্ষেত্রে বিচরণকারী জাকির তালুকদার ২৫ গ্রন্থের জনক। বাংলাসাহিত্যের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন তাঁর দ্বিতীয় প্রবন্ধগ্রন্থ।