"ইসলামে গর্ভপাতের বিধান" বইয়ের প্রকাশকের কথা: বর্তমান সময়ে এ বিষয়টিতে আমাদের সমাজের সব শ্রেণির মানুষই কম-বেশি সম্পৃক্ত। নানাবিধ অজুহাত ও সংকীর্ণ চিন্তা-চেতনায় আচ্ছন্ন হয়ে মুসলিম উম্মাহর সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যাপারে মুসলিম দম্পতিরাই উদাসীন হয়ে পড়েছে। নিজেদের স্বাচ্ছন্দপূর্ণ লাইফস্টাইল ও সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যৎ(?) নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কম সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। অথচ, এসব বিষয়ের ফায়সালা সৃষ্টিজগতের রব মহান আল্লাহর হাতে। সমাজে এমন উদাহরণও কম নয় যে, কারাে একমাত্র সন্তানই বিপথে চলে গেছে, আবার অনেক ছেলে-মেয়ে নিয়েও বাবা-মা সুখ-শান্তিতে জীবন যাপন করছেন। বিশেষ অসুবিধা বা অক্ষমতার কারণে সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে ইসলাম অবকাশ দিয়েছে। তবে তারও শরঈ সীমা নির্দিষ্ট রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অসাবধানতা, হেয়ালীপনা বা না জানার কারণে ‘হত্যা’র মতাে জঘন্য কাজও সংঘঠিত হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সােচ্চার থাকতে হবে। অত্র গ্রন্থটি গর্ভপাত বিষয়ের উপর একটি গবেষণা কর্ম। সুক্ষ্মবিশ্লেষণধর্মী আলােচনাগুলাে আবর্তিত হয়েছে, মহান আল্লাহ প্রদত্ত ও মহানবী (স) প্রদর্শিত শরঈ মূলনীতিকে কেন্দ্র করে মুসলিম দম্পতি, চিকিৎসক, আলেমসমাজ-সহ সাধারণ পাঠকগণও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরিস্কার ধারণা লাভ করার জন্য এর দ্বারা উপকৃত হবেন বলে আমরা আশা করছি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল কল্যাণ-প্রচেষ্টা কবুল করুন।
কুমিলা জেলার লাঙ্গলকোট থানার মন্তলী গ্রামে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। দাদা বাড়ি একই জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতীয়ানী গ্রামের পণ্ডিত বাড়ি। বাবা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বেসামরীক পদে কর্মরত। মায়ের নাম অনাইজা বেগম। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০০০ সালে চন্দ্রগঞ্জ আলিয়া মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে দাখিল পাস করেন। ধারাবাহিক পড়াশুনায় ২০০৪ সালে ঢাকার তা’মিরুল মিলাত কামিল মাদরাসা থেকে ফাজিলে সম্মিলিত মেধাতালিকায় ষষ্ঠস্থান-সহ ২০০৬ সালে কামিল পাস করেন। ২০০৬ সালে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে মিসর গমন করেন এবং বিশ্ববিখ্যাত আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে শরী‘আ আইনে অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। কায়রোস্থ ল্যাটিন আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া স্টাডিজের উপর বিশেষ ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৩ সালে মিসর থেকে মালয়েশিয়াতে আসেন এবং কায়ালালামপুরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে এমএ-এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। এমফিলে তার গবেষণার বিষয় ছিলো, “ঐরৎব চঁৎপযধংব টহফবৎ ঝযরৎশধয ধষ-গরষশ রহ ওংষধসর ইধহশ ইধহমষধফবংয খরসরঃবফ : ধহ অহধষুংরং ভৎড়স ঝযধৎর’ধ ঢ়বৎংঢ়বপঃরাব” বর্তমানে মালয়েশিয়া’র সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ‘মালায়া বিশ্ববিদ্যালয়’-এ তিনি পিএইচডি গবেষণারত। তুলনামূলক শরী‘আ আইন এবং ইসলামী অর্থনীতি মূলতঃ তার গবেষণা ক্ষেত্র। একাডেমিক কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি মিসর সরকারের উচ্চশিক্ষা-বৃত্তি, ল্যাটিন আমেরিকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবৃত্তি, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বৃত্তিসহ আরো বেশ কিছু বৃত্তি লাভ করেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে তার কয়েকটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত ও গৃহীত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কনফারেন্সে অংশগ্রহণ ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে তিনি ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, ব্র“নাই, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপ ভ্রমণ করেছেন। গবেষণার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক-সংগঠনের সাথেও সম্পৃক্ত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সহধর্মীনী মুনিরাতুল ফেরদৌসী ও একমাত্র কন্যা ইবতিদা ইলাফ জিনানকে নিয়ে কুয়ালালামপুরে বসবাস করছেন।