বাঙালির সামরিক ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। ১৯১৫ সালে ‘দি বেঙ্গল অ্যাম্বুলেন্স কোর’ এবং পরে একটি ব্যাটালিয়ন বা বাঙালি পল্টন গঠনের মধ্য দিয়ে সে ঐতিহ্যের সূচনা হয়। সময়টা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাঙালি মুসলমানদের পাইওনিয়ার রেজিমেন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে বাঙালি সামরিক জাতি হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়। যে দু’টি পাইওনিয়ার রেজিমেন্ট সে সময় গঠন করা হয়, তার একটি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করেন কুমিল্লার মেজর এম এ গণি। তিনি ইন্ডিয়ান পাইওনিয়ার কোর সেন্টারে ১৪০৭ পাইওনিয়ার কোম্পানী গঠনের সময় সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মেজর এম এ গণি পদাতিক বাহিনীর যােগ্য বাঙালি সৈনিকদের তাঁর কোম্পানীতে নির্বাচন করেন। বার্মা ফ্রন্টে যুদ্ধে অংশ নেয়া মেজর গণির দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ বিভাগের পর পাইওনিয়ার কোম্পানী থেকে বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়। সারাদেশ ঘুরে তিনি সৈন্য বিভাগের যােগ্য যুবকদের সংগ্রহ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়নের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮এ। মুক্তিযুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মহান আত্মত্যাগ ও অসাধারণ অবদানের উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠে বাংলাদেশের গৌরব- বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী।