"হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতির অত্মদর্শন" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.) সুফিদের বাদশা ও তরিকত জগতের শিরােমণি। বিশ্বপ্রসিদ্ধ আউলিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের অন্যতম দিশারী। তিনি নবী ও আহলে বাইতের মনােনীত রূহানী জগতের সম্রাট ও প্রেমিককুলের শিরােমণিরূপে হেদায়াতের কাণ্ডারী, মুক্তির দিশারী হিসেবে সমগ্র ভারতবর্ষে আগমন করেন। তাঁর উপাধি গরীরে নওয়াজ ও সুলতানুল হিন্দ তথা হিন্দুস্তানের বাদশা। দুনিয়ার ইতিহাসে জীবন্ত কিংবদন্তি অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন আউলিয়াদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় হলেন হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.)। তাঁর পিতৃ প্রদত্ত নাম মঈনুদ্দীন, খাজা তাঁর লকব এবং চিশতি তাঁর তরিকতের নাম। তিনি ১১৪২ খ্রিস্টাব্দ বা ৫৩৬ হিজরী সনে সান্যার নামক (ইরান) স্থানে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ধনী বনিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সৈয়দ খাজা গিয়াসুদ্দীন (রহ.) একজন মহান বুজুর্গ ও কামিল অলী ছিলেন। তিনি পিতল ও মাতৃকুল উভয় দিক থেকেই আল-হাসানী ওয়াল-হুসাইনী সৈয়দ খান্দানভুক্ত। মুসলিম দুনিয়ার ইতিহাসে খাজা মঈনুদ্দীন চিশূতির ন্যায় প্রভাবশালী ও অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন আউলিয়া কেবল গাউসে পাক হযরত আবদুল কাদের জীলানী (রহ.) ছাড়া আর কাউকে দেখা যায় না। কিন্তু ব্যাপক সংখ্যাধিক্যে ইসলাম প্রচারের ইতিহাসে খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি বিশ্বের অদ্বিতীয় মহান আউলিয়া হিসেবে সুপ্রসিদ্ধ। তিনি প্রথম হজব্রত পালন করতে মদিনায় গেলে রাসুল (সা.)-এর রওজা মােবারকে গিয়ে বললেন, 'আস সালামু আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ’, ‘ওহে আল্লাহর রাসুল, আপনার প্রতি সালাম। অমনি আল্লাহর রাসুল (সা.) রওজা মােবারক থেকে তাঁর হাত বের করে সালামের জবাব দেন, ওয়া আলাইকুমুস সালামু ইয়া সাইয়্যেদিল উম্মাতি ওহে আমার উম্মতের প্রতিনিধি, তােমার প্রতিও আমার সালাম। এই গ্রন্থে খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.)-এর আধ্যাত্মিক সাধনা, রূহানী ও বেলায়েত জ্ঞানের পরিচয়, প্রেমিকসত্তা ও অলৌকিক কর্মধারার ভেতর দিয়েই তাঁর আত্মদর্শনের পরিচয় উপস্থাপিত হয়েছে। তরিকত জগতের সকল আশেক সালেকগণ বইটিতে তাদের আত্মার খােরাকের সন্ধান পাবেন বলে আমার বিশ্বাস।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।